ঝালকাঠির রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আবুল খায়ের রাসেলের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় জেসমিন বেগম নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার দুপুরে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জেসমিন বেগম উপজেলার পশ্চিম ফুলুহার গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী আবদুল আলিম হাওলাদারের স্ত্রী ও ৫ সন্তানের জননীর। এদিকে ইনজেকশন দেয়ার পর রোগীর অস্থিরতা ও উত্তেজনা দেখা দিলে ডাক্তারের কাছে গেলে রোগীর স্বামীকে গাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হয় এবং নার্সরাও কেহ রোগীর চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেননি। এ ঘটনায় ওই রোগীর স্বজনদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং অভিযুক্ত রাজাপুর কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আবুল খায়ের রাসেলকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাওয়া যায়নি। এদিকে এ ঘটনায় জেলা সিভিল সার্জন ঘটনা তদন্তের জন্য এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে জানতে চাইলে ফোনে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নিহতের স্বামী আবদুল আলিম হাওলাদারের অভিযোগ করে জানান, মঙ্গলবার রাতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে বুধবার সকালে জেসমিনকে রাজাপুর কমপ্লেক্সে তাকে ভর্তি করানো হয়। এরপর সকাল ১০টার দিকে কমপ্লেক্স্রের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আবুল খায়ের রাসেল স্যালাইন ও একটি ইনজেকশন পুস করার পর জেসমিন অস্থির আচরণ করে। তখন তিনি ডাক্তার ও নার্সদের কাছে একাধিক বার গেলেও তারা কেহই আর রোগীর কাছে আসেননি, উল্টো তাকে গাড় ধাক্কা দিয়ে সড়িয়ে দেয় এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর রোগী মারা যান। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় জেসমিন বেগমের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের। এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা আবুল খায়ের রাসেল সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী জেসমিন বেগমের কিডনি বিকল, এ কারণে মারা গেছে। ইনজেকশন পুশ করায় মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়ে বলেন, অসুস্থ রোগীকে ইনজেকশন তো দেয়াই ডাক্তারের দায়িত্ব। কিডনীতে সমস্যা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা যেত কিনা এবং ভুল চিকিৎসার প্রশ্নে জবাবে তিনি কোর্টে স্বাক্ষী দিতে গেছিলেন, হাসপাতালে চিলেন না বলে জানান। তবে ভুল চিকিৎসা ও কর্তব্যে অবহেলায় অভিযোগ অস্বীকার টিএইচও ডা. মাহাবুবুর রহমান জানান, তাকে এন্টিবায়টিক ইনজেকশন দেয়া হয়েছে, তাতে সমস্যা হলে সাথে সাথেই রোগীর মৃত্যু হতো। তার প্রসাব বন্ধ ছিল। হয়তো কিডনীতে সমস্যা ছিল বা হার্টেও সমস্যা থাকতে পারে। হয়তো এসব সমস্যার কারণে তার মৃত্যু হতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। জানতে চাইলে ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হাওলাদার জানান, এ ঘটনাটি তদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আরএমও গোলাম সরোয়ারকে দিয়ে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি করে ইতোমধ্যে তদন্তে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তদন্তকারী কর্মকর্তা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আরএমও গোলাম সরোয়ার জানান, ঘটনাস্থল রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে তদন্ত কাজ শুরু করা হয়েছে, তথ্য নেয়া হচ্ছে। তদন্ত শেষে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।