ভ্রমণ পিপাসু মানুষের আনন্দ ভ্রমণের এক অন্যন্য নাম সুজানগরের সাতবাড়ীয়া সংলগ্ন পদ্মা নদীর পাড়। সারা বছর এলাকার ভ্রমণ পিপাসু মানুষ পদ্মার নদীর ওই স্থানকে ঘিরে বনভোজন এবং নৌ-ভ্রমণসহ নানা ধরনের আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেন। তবে বছরের দু’টি ঈদে এই আনন্দে নতুনমাত্রা যোগ হয়। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসা উপজেলার হাজার হাজার নারী-পুরুষ পদ্মা নদীর ওই পাড়ে গিয়ে ঈদ আনন্দে মেতে উঠেন। বিশেষ করে ঈদের পরের দিন নদীর সাতবাড়ীয়া খেয়াঘাট পয়েন্টে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে নানা বয়সী মানুষের ঢল নামে।
গত ৭/৮বছর আগে প্রমত্ত পদ্মার ভাঙ্গনরোধে সাতবাড়ীয়া খেয়াঘাট এলাকায় নির্মাণ করা হয় সিসি ব্লকের বাঁধ। আর ওই বাঁধের মাঝে মাঝে নির্মাণ করা হয় গোসল করার ঘাট। সে সময় পদ্মার ভাঙ্গনরোধ রোধ এবং পদ্মাপাড়ের মানুষের গোসল করার সুবিধার্থে ওই সিসি ব্লকের বাঁধ ও ঘাট নির্মাণ করা হলেও সময়ের পরিক্রমায় স্থানটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় পর্যটকরা সারা বছর ওই স্থানে আনন্দ ভ্রমণ করে থাকেন। তবে ঈদের পরের দিন সেখানে পর্যটকদের ঢল নামে। এদিন যেন ওই স্থান কক্সবাজার এবং রাঙ্গামাটির নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগের আনন্দকে ম্লান করে দেয়। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে এই আনন্দ। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মানুষ ছাড়াও আশপাশের উপজেলার হাজার হাজার মানুষ এই আনন্দ উপভোগ করতে মাইক্রোবাস, সিএনজি এবং মটর সাইকেলসহ নানা ধরনের যানবাহনযোগে পদ্মাপাড়ের প্রায় ২কিঃমিঃ এলাকা জুরে ভিড় জমায়। তারা এখানে এসে মাইক, সাউন্ডবক্স এবং বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে ঈদ আনন্দ করার পাশাপাশি ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও ডিঙি নৌকা ভাড়া নিয়ে পদ্মার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করেন। এদের মধ্যে অনেকে আবার নৌকা নিয়ে পদ্মার বুকে জেগে উঠা কাশবনের সৌন্দর্য উপভোগ করে থাকেন। ঈদ আনন্দ নিরাপদ এবং নির্বিঘœ করতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ওই পয়েন্টে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ঈদ আনন্দে আসা পর্যটকরা জানান, সাতবাড়ীয়া পদ্মাপাড়কে ঘিরে দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। তবে এজন্য প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ওই স্থানে পরিকল্পিত পিকনিক স্পট এবং আবাসন সুবিধা গড়ে তোলা। সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিৎ দেবনাথ বলেন পর্যটকদের সুবিধার্থে ইতোমধ্যে ওই স্থানে বেশ কিছু স্থায়ী বেঞ্চ এবং সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ভবিষ্যতে স্থানটি যাতে প্রকৃত পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয় সেই উদ্যোগে নেওয়া হবে।