সিনেমা হলকে বলা হয় ছবির প্রাণ। আর এই সিনেমা হলই দিন দিন কমে যাচ্ছে আমাদের। একটা সময় দেশজুড়ে ১২০০ সিনেমা হল ছিল। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, এখন সারা দেশে ১৭৪টি সিনেমা হল চালু আছে। বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, পঞ্চগড়, রাজশাহী, কক্সবাজার, পিরোজপুর, ঝালকাঠিসহ বেশ কয়েকটি জেলাশহরে কোনো সিনেমা হল নেই। চাঁপাই নবাবগঞ্জের ‘রাজমহল’, বগুড়ার ধুনটের ‘ক্লিওপেট্রা’, নাটোরের ‘ছায়াবাণী’, বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের পাতার হাটের ‘রাজলক্ষ্মী’, ফুলবাড়ি ‘উর্বশী’, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ‘আলীম’, ঠাকুরগাঁওয়ের ‘বলাকা’, লালমনিরহাটের ‘লালমনি’, লক্ষ্মীপুরে ‘হ্যাপী’সহ অনেক সিনেমা হলে বছরজুড়ে অনিয়মিত প্রদর্শনী লক্ষ্য করা যায়। এসব সিনেমা হল বছরের বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। তবে গত বছরের মতো এবার ঈদেও বন্ধ হওয়া ৫০টি সিনেমা হল খুলেছে।
চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিন গতকাল মানবজমিনকে বলেন, ঈদে ভালো ব্যবসা হবে এই আশাতে পরীক্ষামূলকভাবে ৫০টির মতো বন্ধ সিনেমা হল এবার খুলেছে এবং বেশকিছু সিনেমা হল ঈদের ছবি চালিয়ে লাভের মুখও দেখছে। বিশেষ করে শাকিব খান অভিনীত ও প্রযোজিত ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিটি চালিয়ে সিনেমা হল মালিকরা বেশ আনন্দিত। এ ছবিটি ভালো দর্শক টানছে। অন্যদিকে শাকিব খান ও ববি অভিনীত ‘নোলক’ ছবিটিও ঈদের পর বেশ কিছু জায়গায় সেল বেড়েছে। বন্ধ হওয়া সিনেমা হলগুলোর মধ্যে এবারের ঈদে পাবনার ভাঙ্গুরার ‘মৌচাক’, বগুড়া মোকামতলার ‘অনুপম’, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর ‘জিতু’, সিরাজগঞ্জ চান্দাইকোনোর ‘চাঁদনি’, নারায়ণগঞ্জের নয়াপুরের ‘রিয়ামহল’, রংপুর শহরের বাইরের একটি সিনেমা হলসহ ৫০টি সিনেমা হলে দর্শকরা ঈদের ছবি উপভোগ করছে। এই সিনেমা হলগুলো সারা বছরই বন্ধ ছিল। যদি এ ঈদে ভালো ব্যবসা করে কুরবানি ঈদের পরও এই সিনেমা হলগুলো চালু থাকবে। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলচ্চিত্র ব্যবসায় গত কয়েক বছর নিয়মিত লোকসান গুনেছেন সিনেমা হল মালিক ও প্রযোজকরা। তাই সিনেমা হলগুলো বন্ধ ছিল। এবার ঈদে ভালো মানের ছবি পেয়ে এগুলো আবার খুলেছে। এখান থেকে ভালো ব্যবসা করলে এই সিনেমা হলগুলো হয়তো আর বন্ধ হবে না। সবই নির্ভর করছে ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলোর ব্যবসায়িক সাফলতার ওপর। তবে অনেকের মতে, সিনেমা হলের দর্শকরা শেষ হয়ে যায়নি। বড় বাজেট, ভালো গল্প আর সুনির্মিত ছবির দর্শকরা এখনো আছে।