বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় স্বামীর দেয়া আগুনে গুরুত্বর আহত শাজেনুর বেগমকে (৩০) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল থেকে তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে সড়কপথে স্বজনরা রওয়ানা দিয়েছেন।
শেবাচিম হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটের দায়িত্বরত ব্রাদার লিংকন দত্ত জানান, আগুনে শাজেনুর বেগমের শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। যারমধ্যে ৪৫ শতাংশ গভীর পোড়া রয়েছে। শেবাচিমের চিকিৎসকরা রোগীর সর্বোচ্চ সেবা দিয়েছেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য শাজেনুরকে নিয়ে স্বজনরা ঢাকা মেডিক্যালের বার্ণ ইউনিটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন। হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকির হোসেন জানান, শাজেনুরের অবস্থা আশংকাজনক ছিলো। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে চিকিৎসকদের পরামর্শে রোগীকে ঢাকায় নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রোগীর সাথে থাকা স্বজনরা। অপরদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল থেকে ঢাকায় প্রেরনে শাজেনুরের পরিবারেকে নগদ ১২হাজার টাকার সহায়তা প্রদান করেছেন বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস। দগ্ধ শাজেনুরের চাচাতো ভাই মোঃ ইব্রাহিম জানান, বেল্লাল হোসেনের সাথে প্রায় দেড় বছর আগে শাজেনুরের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিলো। এনিয়ে স্থানীয় পর্যায় একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে। সালিশে বেল্লাল হোসেন মা ও মেয়েকে আগুনে পুড়ে মারার হুমকিও দিয়েছিলো। সর্বশেষ বুধবার গভীর রাতে বেল্লাল হোসেন শাজেনুরকে তালাক দেওয়ার কথা বলে। ওইদিন গভীর রাতে ঘুমের ঘোরে বেল্লাল হোসেন বসত ঘরে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মেয়ে সখিনা আক্তার (১০) মারা যায় এবং শাজেনুর অগ্নিদ্বগ্ধ হয়।
উল্লেখ্য, বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার রুহিতা গ্রামে সৎ মেয়ে ও স্ত্রীকে ঘুমন্ত অবস্থায় পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পোড়ানোর কয়েকঘণ্টা পরেই অভিযুক্ত বেল্লাল হোসেন (৩৫) গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। দগ্ধ হওয়া শাজেনুর বেগমকে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।