শেরপুরের নকলায় গাছে বেঁধে ডলি খানম (২২) নামে এক অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধূকে বর্বরোচিত নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর মামলায় গ্রেফতারকৃত অন্যতম আসামি নাসিমা আক্তার (৩৯) কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রবিবার (১৬ জুন) দুপুরে আসামি নাসিমা আক্তারের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের দীর্ঘ শুনানী শেষে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুল ইসলাম খান ওই রিমা- মঞ্জুর করেন। নাসিমা আক্তার গৃহবধূ ডলি খানমের জা অন্যতম আসামি লাখী আক্তারের বড়বোন।
রিমান্ড মঞ্জুরের তথ্য নিশ্চিত করে কোর্ট ইন্সপেক্টর খন্দকার শহীদুল হক জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তার ৫ দিনের পুলিশ রিমা-ের আবেদনের বিষয়ে উভয় পক্ষের শুনানী শেষে আদালত গ্রেফতারকৃত আসামি নাসিমা আক্তারকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ দিনের রিমা- মঞ্জুর করেছেন। আগামি ১৮ জুন নকলায় অনুষ্ঠেয় উপজেলা নির্বাচনের পরপরই তাকে রিমা-ে নেওয়া হবে। আদালতে ওই রিমা- শুনানীকালে রাষ্ট্রপক্ষে কোর্ট ইন্সপেক্টর ও কোর্ট সাব-ইন্সপেক্টর আনিসুর রহমানকে সহায়তা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আঁধার ও জেলা মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার দে কৃষ্ণসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সজীব রহমান জানান, গৃহবধূ ডলি খানমকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের বিষয়ে ভাইরাল হওয়া ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, আসামি নাসিমা আক্তার বোরকা পরিহিত অবস্থায় ডলিকে গাছে বাঁধছে ও নির্যাতনে অংশ নিচ্ছে। কাজেই তাকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ঘটনার প্রকৃত রহস্যসহ এজাহারনামীয় আসামিদের বাইরে অন্য কে বা কারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদ দিয়েছে তা উদঘাটনের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আসামিদের শনাক্ত, পলাতক আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত ও তাদের গ্রেফতার করা সহজ হবে।
উল্লেখ্য, গত ১০ মে নকলা উপজেলার কায়দা গ্রামে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ডলি খানম নামে এক অন্ত:স্বত্ত্বা গৃহবধূকে গাছে বেঁধে বর্বরোচিত নির্যাতন এবং ওই নির্যাতনে গৃহবধূর গর্ভের সন্তান নষ্টের ঘটনা ঘটে। ঘটনার এক মাস পর নির্যাতনের একটি ভিডিও ভাইরাল হলে তোলপাড় শুরু হয়। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীমের দ্রুত পদক্ষেপে গত ১১ জুন এক সেনা সদস্যসহ ওই গৃহবধূর ৩ ভাসুর ও জাসহ ৯ জনকে স্ব-নামে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা গ্রহণ করা হয়। ওই মামলার পরদিন গ্রেফতার হয় এজাহারনামীয় আসামি নাসিমা আক্তার। অন্য আসামিরা এখনও পলাতক রয়েছে।