আগামীকাল সোমবার (২৪ জুন ) বগুড়া-০৬ (সদর) আসনের শুন্য ঘোষিত আসনের নির্বাচন। বিধি অনুযায়ী নির্বাচনের ৪৮ ঘন্টা আগে শনিবার সকাল ৯টায় শেষ হয়েছে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যেই প্রধান নির্বাচন কশিনার, নির্বাচন কমিশন সচিব ,দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কেন্দ্রের সিনিয়র নেতারা এসে ঘুরে গেছেন। বগুড়ার এই নির্বাচনের পরিবেশে সবাই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
বগুড়ার এই নির্বাচন হবে নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে। এজন্য প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন। ইভিএমে ভোট প্রদান সম্পর্কে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার এক মতবিনিময় সভাও শেষ হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, ২৪ জুন ভোট কেন্দ্রগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোট গ্রহন করা হবে। বগুড়া সদর আসনে ১শ৪১টি কেন্দ্রে ৯৬৫টি কক্ষে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪শ৫৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার ইভিএম এর মাধ্যমে প্রদান করবেন।
ইতোমধ্যে ভোট গ্রহন কর্মকর্তাদের ’দুইদিন ব্যাপী হাতে কলমে ইভিএম এ ভোট গ্রহন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ভোটারদেরকে ইভিএম এ ভোট প্রদান সম্পর্কে সম্যক ধারনা দেয়ার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে ডেমোনেস্টেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শনিবার প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সকাল ১০টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একযোগে মক ( মহড়া ) ভোটিং কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বগুড়ায় এবার মহাজোটের একক প্রার্থী হিসেবে কেউ ভোট করছেননা। বগুড়ার তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা ও বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক টি জামান নিকেতা হয়েছেন দলীয় প্রার্থী। তিনি ও তার সমর্থকরা আশা করছেন, যেহেতু এই আসনে ভোটে জিতেও বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল সংসদে যাননি, শপথ নেননি। এটা বগুড়াবাসীর সাথে বিশ^াস ঘাতকতার শামিল বলেই বগুড়াবাসির কাছে প্রতিভাত হচ্ছে। সেহেতু উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থেই বগুড়া সদরের ভোটাররা এবার নৌকাতেই তাদের সমর্থন ব্যক্ত করবেন।
তারা প্রশ্ন রেখে বলেন, ব্যারিষ্টার জমির উদ্দিন ও মীর্জা ফখরুলের মতোই বর্তমান প্রার্থী জিএম সিরাজও বগুড়া ৫ আসনের সাবেক এমপি, কাজেই তিনিও সে অর্থে বহিরাগত প্রার্থী। তাই বগুড়া সদরে তার ভোট পাওয়ার কথা নয়।
বগুড়া বিএনপির জেলা আহ্বায়ক সদর আসনের প্রার্থী জি এম সিরাজ ও বগুড়া জেলা বিএনপির নেতা কর্মিরা বলেছেন, কোন প্রেক্ষাপটে বিএনপির নির্বাচিত সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। আবার মীর্জা ফখরুল শপথ নেননি সেটা বুঝতে কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয় ্ বগুড়ার ভোটাররা সরকারি দলের সব কুট চাল ও কু তর্ক উপেক্ষা করেই কারাবন্দী দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বাধ্য হয়ে লন্ডণে বসবাসরত তারেক রহমানের প্রতি নিঃশর্ত ভালবাসা এবং শহীদ জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই আবার ভোট দেবে ধানের শীষেই।
তারা মনে করেন, বগুড়ায় এবার রেকর্ড পরিমাণে ভোট পড়বে ধানের শীষে।
জাতীয় পার্টির জেলা সেক্রেটারি ও সংসদ সদস্য পদ প্রার্থী এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম ওমর নিজে ও তার দলের নেতা কর্মিরা আশায় ছিলেন যে গতবারের মতো এবারও মহাজোটের একক প্রার্থী থাকবেন। তবে শেষ পর্যন্ত তা’ হয়নি। এতে তারা মনঃক্ষুন্ন হলেও হতাশ হননি তারা। যেহেতু বগুড়া সদরে ৫ বছর সংসদ সদস্য ছিলেন নুরুল ইসলাম ওমর, যেহেতু সংসদ সদস্য হিসেবে অনেক উন্নয়ন মুলক কাজ করেছেন তিনি সেহেতু তাদের আশা, ভোটাররা এবার তাদের বিমুখ করবেননা। বগুড়াবাসির ভোট এবার লাঙ্গল মার্কাতেই যাবে, অন্য কোথাও নয়।
বগুড়ার শুন্য ঘোষিত আসনের নির্বাচনে এবার বাংলাদেশ মুসলিম লীগ থেকে রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ কংগ্রেস থেকে ডঃ মনসুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন সৈয়দ কবীর আহম্মেদ মিঠু ও মিনহাজ¦ মন্ডল। ২ জনের মধ্যে সৈয়দ কবীর আহম্মেদ মিঠু সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সব মিলিযে এখন মোট ৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নির্বাচনে।
তবে মুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা।