রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় জিএমের দপ্তরের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মচারীর বাসা মেরামতের জন্য ২৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে প্রধান প্রকৌশলী।
বিপুল অঙ্কের এ অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার মধ্যে অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম রেল ভবনের সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা। এসব অনিয়ম- দুর্নীতি বিরুদ্ধে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর অপরাধ প্রমানিত হলে তিনি কঠোর হুশিয়ারী সংকেত দিয়ে বলেন, তাদের কাউকে ছাঁড় দেয়া হবে না।
মন্ত্রী জানান, আগে পরে যা হওয়ার তা হয়েছে। আমার দায়িত্ব পালনকালে কোন দুর্নীতিকে বরদাস্ত করা হবে না।
প্রসঙ্গত, ২৮ লাখ টাকা বরাদ্দের জেরে রেল অঙ্গনে শুরু হয়েছে তোলপাড়। শেষ পর্যন্ত অভিযোগ যায় মন্ত্রণালয় ও রেল ভবনে। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল জলিল ফেঁসে যেতে পারেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত ২৬ মে গঠিত দুই সদস্যের কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ শেখ নাইমুল হককে। কমিটির অপর সদস্য বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা কিসিঞ্জার চাকমা।
কমিটি গঠনের সাত কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হলেও গতকাল সপ্তাহের মঙ্গলবার কমিটির আহ্বায়ক তদন্তের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে বাসা, বাংলো, সড়ক, অফিস ভবন মেরামতের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট হয়।
প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাদের যে ঠিকাদার যত বেশি ঘুষ দিতে পারেন, সেই ঠিকাদার তত বেশি কাজ পান। এরপর কাজে নয়-ছয় করে টাকা হাতিয়ে নেন ঠিকাদাররা। মেরামত কাজে বরাদ্দের এক তৃতীয়াংশের চেয়েও কম অর্থ ব্যয় করে বিল নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এ ছাড়া নজির রয়েছে কাজ না করেও বিল তুলে নেওয়ার।
জানা গেছে, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর বাসা মেরামতে ২৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়ার পর গত ১৩ মার্চ আলমগীর, মনির হোসেন, শাহাদাত হোসেন, মোহাম্মদ জুয়েল ও মো. জসিম নামে কতিপয় ঠিকাদার রেলমন্ত্রী বরাবর একটি অভিযোগ দেন। অবশ্য ততদিনে মেরামত কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়। অভিযোগকারীরা তাদের দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএমের পরিচয় ব্যবহার করে সাইফুল নামে এক ঠিকাদার কাজটি করেছেন। অধিকাংশ মেরামত কাজে দুর্নীতি হয় বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম সৈয়দ মো. ফারুক আহমেদ মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তাঁকে এঘটনার বিষয়ে তথ্য চেয়ে এসএমএস করা হয়। তারও কোন জবাব দেয়নি পূর্বাঞ্চলের জিএম।
বিস্তারিত জানতে প্রধান প্রকৌশলী আবদুল জলিলের সঙ্গেও কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগ রয়েছে, সিআরবি এলাকায় রেলের ভিআইপি রেস্ট হাউস মেরামতের জন্য কয়েকটি ধাপে টেন্ডার ছাড়াই প্রায় ৮০ লাখ টাকার কাজ বরাদ্দ দেন প্রধান প্রকৌশলী আবদুল জলিল। এরইমধ্যে বেশ কিছু কাজ করিয়ে নিয়েছেন মৌখিক নির্দেশে। একই ঠিকাদারকে সব কাজ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২০ শতাংশ হারে অগ্রিম ঘুষও নিয়েছেন তিনি।