নওগাঁর মান্দায় অগ্রণী ব্যাংক লিঃ মৈনম শাখা স্থানান্তর চক্রান্তের অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার বেলা ১০টার দিকে ব্যাংকটির শাখা কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। এদিন দুপুর পর্যন্ত বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে মৈনম সচেতন নাগরিক সমাজ, বণিক সমিতি ও স্থানীয়রা এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হঠাৎ করে বুধবার সন্ধ্যায় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক আবদুল মতিন মন্ডলসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিরা ব্যাংকের কম্পিউটার ও কাগজপত্র বস্তায় ভরে নিচে নামিয়ে নিচ্ছিলেন। এ সময় বাজারের ব্যবসায়িরা জানতে পেরে সেগুলো আটকিয়ে এর প্রতিবাদ জানান। অবশেষে স্থানীয়দের চাপের মুখে বস্তাগুলো আবারো ব্যাংকের ভেতরে ফিরিয়ে নেন সংশ্লিস্টরা। বিষয়টি জানাজানি হলে মৈনম বাজারের ব্যবসায়ি মহলসহ স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ব্যাংকের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্রহানী সুলতান গামা, মৈনম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াছিন আলী রাজা, মৈনম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইদুর রহমান, বাজার বণিক সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সচেতন নাগরিক সমাজের সভাপতি মনজের রহমান, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবিএম হাসান রিপু, শিক্ষক মাও. আমিনুল ইসলাম, ব্যবসায়ি হাসেম আলী মীর, সাহার আলী, মৈনম ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আল আমিন রানা প্রমুখ।
ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াছিন আলী রাজা জানান, মৈনম বাজারে স্থাপিত অগ্রণী ব্যাংকের এ শাখায় স্থানীয় ব্যবসায়ি, কয়েকটি এনজিওসহ সুধীজন লোনদেন করে থাকেন। এ ছাড়া আশপাশের কয়েক হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উপবৃত্তি প্রদান করা হয় এ শাখা থেকে।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের এ শাখাটি বর্তমানে লাভজনক অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই ব্যাংক শাখার দ্বিতীয় কর্মকর্তা কাজি শফিকুল ইসলামের সতীহাট বাজারে তৈরি ভবনে শাখাটি স্থানান্তরের পাঁয়তারা শুরু করেন। ব্যাংকের শাখাটি মৈনম বাজারেই বহাল রাখতে সংশ্লিস্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান তিনি।
ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক আবদুল মতিন মন্ডল শাখাটি স্থানান্তরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, স্থানীয় গ্রাহকদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে অনাকাঙ্খিত ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংকের শাখা অন্যত্র স্থানান্তরের প্রয়োজন হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন। আমি ইচ্ছে করলেই সেটি অন্যত্র স্থানান্তর করতে পারি না।
অগ্রণী ব্যাংক লিঃ এর জেনারেল ম্যানেজার মো. ওয়ালিউল্লাহ জানান, ব্যাংক শাখাটি চলতি বছরের ৫ মাসে ৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা মুনাফা অর্জন করেছে। বর্তমানে এটি লাভজনক অবস্থায় রয়েছে। এক্ষেত্রে শাখাটি অন্যত্র স্থানান্তরের কোনো প্রশ্নই আসে না। যদি কখনও শাখাটি স্থানান্তরের প্রয়োজন হয় তাহলে স্থানীয় গ্রাহকদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করে সেটি স্থানান্তর করা হবে।