সান্টু হঠাৎই আচমকা ঘুম থেকে উঠে মনে মনে ঠিক করে নিল শীতের সকালটা হেটে আসলে কেমন হয়। যেই ভাবনা সেই কাজ, হাটতে বেরুলো, যথারীতি সংগে লালু ও পুষি। স্বভাবসিদ্ধ গোচের সান্টু, লালু ও পুষিকে নিয়ে লেকের ধারে লোকের ভীর দেখে মনে কৌতুহল এর উদ্রেক। যা হোক সামনে এগুতেই কানে ভেসে আসলো কারা যেনো কতগুলি পাখীর বাচ্চা মেরে ফেলে রেখেছে।
সান্টুর স্বাভাব বশ:তই উচ্চারণ এগিয়ে দেখা যাক। ভীর ঠেলে ঠুলে দেখে সত্যিই কতকগুলি পাখী মরে পরে আছে। দু:খ হল সান্টুর। জিজ্ঞেস করলো কিভাবে এটা ঘটলো। একজন বয়স্ক পাশের এক ছোকড়াকে জিজ্ঞেস করায়, ছোকড়ার উত্তর আমি স্যার দেখেছি, কি দেখেছিস। জি¦ স্যার ঐ পাখী গুলানরে কারা মারছে। আজ সকালে কতকগুলি পাখী হাতে এক শক্তিশালী উচা লম্বা মোচ আছে স্যার, পড়নে চকরা বকরা কাপড়। দেখী পাখী কাচা ছিলাইয়া খাইতাছে স্যার। বেশ কয়টা খাওয়ার পর আর না খাইতে পাইরা ঐ গুলি মাইরা ফালাইয়া থুইয়া গেছে স্যার। আমি তহন রাস্তার এই পাশ থেইক্কা আড়াল কইড়া দেখছি। একবার আমারে দেইখা ফালাইছিল। সান্টুর কৌতুহল কন্ঠে জিজ্ঞাসা লোকটা তারপর গেল কোন পথে। স্যার ঐ ডান পাশের রাস্তায় কিছুক্ষন হাঠতে দেখলাম তারপর নাই স্যার।
সান্টু আবার ভীর ঠেলে ঠুলে একাকী হাটতে হাটতে কিছুটা ভেবে নিল এর কারনটা কি ? যা হোক কিছুদুর হেটে আবার ঐ স্থানে এসে ঐ ছোকড়াকে ডেকে বললো, তুই আমার বাসাটা চিনিস এখান থেকে অল্প কিছুদুর বাসা-২৯, ব্লক-বি, রোড-৪। তুই কাল সকালে এখানে নিয়ে আসবি আমাকে কেমন। সান্টু বাসায় ফিরে যায় সংগে লালু ও পুষি। লালু সান্টুর সেই প্রীয় পোষা কুকুরটি আর পুষি হলো পোষা বেড়ালটি।
পরদিন সকালের কথা ভেবে সে বেশ পুলকিত বোধ করে। এবার একটা মজার ঘটনা পাওয়া গেল। উদ্ধার পাওয়া যাবে ঘটনাটির। পরদিন সকাল আর হয়নি। ঐ দিন রাত্রেই হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়। প্রচন্ড বাতাসে জানালাগুলি কাপছে এবং পাল্লাগুলি জোরে এসে কপাটের সাথে ধাক্কা খেয়ে প্রচন্ড জোড়ে শব্দ হচ্ছে।
সকালে উঠে স্লিপীং ড্রেস ছেড়ে পেন্ট শার্ট পড়ে নেয়। জুতার ফিতা বাধতে বাধতে হঠাৎই দেখতে পায় কে যেন ছায়ার মত জানালার ও পাশ দিয়ে হেটে যায়। সে দৌড়িয়ে জানালার পাশে যাওয়া মাত্রই চিৎকার শুনতে পায় Help me. আর লালু ও পুষির চিৎকার তো ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। দরজা খুলে দৌড়াতেই বাইরে এসে আর চিৎকার শুনতে পায় না। তবে একটা আলো দেখতে পায় সান্টু। আলোর পিছু নেয়। রাস্তার এ গোলি ও গোলি এ রকম করে প্রায় হাফ কিলো গিয়ে থেমে যায় আলো। পাশেই কিছু বৃক্ষ পরিবেষ্টিত বনের পরিবেশ। সেখানেই আলো ঢুকে যায়।
সান্টু তবুও পিছু হটেনি, পিছনে লেগেই রয়েছে, চিরাচিরায়ত নিয়মের মতোই যা ওর স্বভাব এ একদম গেঁথে গেছে। কোন কিছুর চূড়ান্ত ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত থামা নেই। ঢূকে পড়ে বনের মধ্যে, আলো কিছুদুর গিয়ে থেমে যায়। আৎকে উঠে সান্টু, নাছোড়বান্দা সান্টু, কিছুদুর সামনে গিয়ে আলোর সন্ধান করে। কিন্তু আর পাওয়া যায়নি। যা হোক হঠাৎই আবার চিৎকার Help me. চিৎকার শুনে সান্টু, দৌড়ে এগিয়ে আসে, বিরাটকায় গর্ত তার ভিতর থেকে চিৎকার ভেসে আসছে। অন্ধকার আলোতে দেখা গিয়েছিল, কিন্তু এখন আর দেখা যায় না। পকেটে হাত রাখতেই ছোট লাইট পেয়ে গেল, যা ওর সব সময়ই পকেটেই থাকতো। লাইট জ¦ালিয়ে গর্তে ঢুকে পড়লো সান্টু।
সান্টুর আর বনের গর্তের ভিতর যাওয়া হয়নি সেদিন। ফিরে যায় সে, ঘরে ফিরে লালু ও পুষিকে পহাড়ায় রেখে আবার ঘুমে চলে যায় সে। কিন্তু ঘুম যে চোখে আসেনা। কি ঘটলো সেটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে যায় সে।
সান্টু সকালে উঠে দেখে যে সে উল্টো অবস্থায় শুয়ে। সকালে আর সেদিনকার মতো না খেয়ে বেড়িয়ে পরলো বন্ধু পিন্টুদের ওখানে। পিন্টুর সাথে পরামর্শ করতে হবে। সকালে হেটে হেটে রওনা হয়ে যায় সে। পিন্টুকে যথারীতি না পেয়ে ফিরতে সময় রাস্তায় দেখা হয়ে যায় তার সাথে। কি ব্যাপার তুই বাসায় আসবি তো একবার ফোন করলেই পারতি। গত রাতে কি আজব সব ঘটনা ঘটলো তোকে তো বলাই হয়নি। তো ভাবলাম সকালের হাটাটাও হয়ে যাবে আর তোর সাথে পরামর্শটাও হয়ে যাবে। পিন্টুকে উদ্দেশ্য করে বাসায় চলে যায় তারা। ইতিমধ্যে লালু ও পুষি কখন বাইরে চলে গেছে কেইবা জানে।