প্রবল বর্ষণ ও সীমান্তের ওপার থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতীর নিম্নাঞ্চলের প্রায় ২০টি গ্রামের ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। প্লাবিত গ্রামগুলোর কাঁচা ঘর-বাড়ি,
রাস্তাঘাট, রোপা আমন ধানের বীজতলা, সবজি, পুকুরের মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। ঝিনাইগাতী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন চাঁন বলেন, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতী সদর, ধানশাইল, মালিঝিকান্দা, হাতিবান্দা, গৌরিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। তবে তার ইউনিয়নের আটটি গ্রামের সিংহভাগ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। এসব গ্রামের রোপা আমন বীজতলা, সবজি, পুকুরের মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। ধানশাইল ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, গৌরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মন্টু, মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম তোতা জানান, তাদের ইউনিয়নের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়ে আমন ধানের বীজতলা, পুকুরের মাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দিও রয়েছে কয়েক হাজার পরিবার।
ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামের গৃহবধূ রওশন আরা বেগম বলেন, দুই দিন ধরে ঘরের মেঝে ও চুলায় পানি উঠেছে। তাই রান্নাও করতে পারিনি। ছেলে মেয়ে নিয়ে শুকনো খাবার খেয়ে আছি। গৃহপালিত পশুগুলো শুকনো খড় ছাড়া অন্য কোন খাদ্য খেতে পায়নি। এখন পর্যন্ত প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির পক্ষ থেকে তাদের কোন খোঁজ-খবর নেয়নি । সারিকালিনগর সরকারি প্রাথমিক দ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোমাইয়া, ফয়সাল জানান, বৃষ্টি ও ঢলের পানির জন্য গত তিনদিন ধরে বিদ্যালয়ে যেতে পারেনি তারা। সুরিহারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বপ্না দত্ত বলেন, তার বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় বিদ্যালয়ের
কার্যক্রম বন্ধ ছিল বৃহস্পতিবার ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, ঢলের পানিতে ১৫ হেক্টর জমির সবজি ও ২৫ হেক্টর রোপা আমন ধানের বীজ তলা নিমজ্জিত রয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু সিরাজুস সালেহীন বলেন, ১০ থেকে ১৫ হেক্টর জমির ৫০ থেকে ৬০টি পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা চেয়ারম্যান এসএমএ আব্দুল্লাহেল ওয়ারেজ নাইম বলেন, আমি বেশ কিছু এলাকা পরিদর্শন করেছি। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে । অবস্থার উন্নতি না হলে খুব শ্রীঘ্রই বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবারসহ তাদের জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।