লালমনিরহাটের হাতীবান্ধাহাট থেকে বড়খাতা বিডিআর গেট বাইপাস সড়ক ভেঙ্গে তিস্তা নদীর পানি হাতীবান্ধা শহরসহ লোকালয়ে প্রবেশ করছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ওই উপজেলার গড্ডিমারী মেডিকেল মোড়ের উওর পাশে এ সড়ক ভেঙ্গে যায়। ফলে তিস্তা নদীর পানি সতি নদী হয়ে হাতীবান্ধা শহরসহ লোকালয়ে প্রবেশ করায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। শুক্রবার রাতে ও শনিবার ভোরে স্থানীয় লোকজন বালুর বস্তা ফেলে হাতীবান্ধাহাট থেকে বড়খাতা বিডিআর গেট বাইপাস সড়কটি রক্ষার চেষ্টা করলেও খালি বস্তা সংকটের কারণে তা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি। বন্যার পানি হাতীবান্ধা শহরসহ লোকলয়ে প্রবেশ করায় বর্তমানে জেলার লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ছে। অসংখ্যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারী, বে-সরকারী প্রতিষ্ঠান গুলো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পানি বন্দি লোকজনের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। এ দিকে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৪১ সেঃমিঃ ও তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৮ সেঃমিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলায় তিস্তা ও ধরলা নদী এক সাথে ভয়ংকর রুপ ধারণ করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার রাতে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর পানি আটকাতে সড়কে বালুর বস্তা ফেলার জন্য ৫ হাজার খালি বস্তা বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু পানিবন্দি লোকজন গত দুই দিন ধরে খালি বস্তার জন্য জন প্রতিনিধি ও সরকারী কর্মকর্তাদের কাছে অনেক ছুটাছুটি করলেও তাদের ভাগ্যে বালুৃর ফেলার জন্য খালি বস্তা জোটেনি। এ নিয়ে ওই এলাকার লোকজনের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া জেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকা গুলোর রাস্তা ও বাঁধ ভেঙ্গে পানি হু হু করে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে বন্যা পরিস্থিতি আরো চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে।
জানা গেছে, লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি শনিবার সকালে বিপদ সীমার ৪৮ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে তিস্তা নদীর পাড়ের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে উঠছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তিস্তার চরের লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। একই সাথে তিস্তা ব্যারাজ ও চর এলাকায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিস্তা নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেলে তিস্তা ব্যারাজ রক্ষার্থে পাউবো ‘ফ্লাড বাইপাস’ কেটে দিয়ে রেড এলার্ট জারি করা হবে। এ বাঁধ কেটে দিলে গোটা লালমনিরহাট জেলার কয়েক লক্ষাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়বে। এতে শত শত কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতি হবে। ভারত গজল ডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আরও কি পরিমাণ পানি আসবে তা ধারনা যাচ্ছে না। পানির শো শো শব্দে তিস্তা পাড়ে লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তিস্তা নদীর ভয়ঙ্কর রুপ আর গর্জনে পানি বন্দি লোকজনের চোখে ঘুম নেই।
পানি বন্দি লোকজন জানান, তারা ৪/৫ দিন ধরে পানি বন্দি অবস্থায় পড়ে আছি। কেউ তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছে না। তাদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া খালি বস্তার অভাবে হাতীবান্ধাহাট থেকে বড়খাতা বিডিআর গেট বাইপাস সড়কটিতে বালু ফেলা সম্ভব হয়নি।
একই সঙ্গে তিস্তা ব্যারাজ ও চর এলাকায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিস্তা নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেলে তিস্তা ব্যারাজ রক্ষার্থে পাউবো ‘ফ্লাড বাইপাস’ কেটে দিয়ে রেড এলার্ট জারি করা হতে পারে। এ বাঁধ কেটে দিলে গোটা লালমনিরহাট জেলার লক্ষাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়বে। এতে শত শত কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতি হবে। ভারত গজল ডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আরো কি পরিমাণ পানি আসবে তা ধারণা যাচ্ছে না। পানির শো শো শব্দে তিস্তা পাড়ে লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তিস্তা নদীর ভয়ঙ্কর রূপ আর গর্জনে পানি বন্দি লোকজনের চোখে ঘুম নেই।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে আজ সকাল ১১ টায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার লালমনিরহাটে আসবে বলে হাতীবান্ধা উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন জানিয়েছেন।
তিস্তা ব্যরাজ দোয়ানী পানি উন্নয়ন বোর্ড’র নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, ভারত গজল ডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আরও কি পরিমাণ পানি আসবে তা ধারনা যাচ্ছে না। পানির গতি নিয়ন্ত্রন করতে তিস্তা ব্যারেজের অধিকাংশ গেটই খুলে দেয়া হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, আমি বন্যা এলাকা সড়েজমিন ঘুরে দেখছি। যেখানে যেভাবে প্রয়োজন সেই ভাবেই সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।