ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সৈয়দ নজরুল ইসলামের বিতর্কিত মেয়ে পারভিন বেগমের বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে বাণিজ্যেসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভয়ঙ্করপ্রতরণা করেকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চারমাস পার পর স্বামী পরিবর্তন, বিদেশে লোক পাঠানোর নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া, স্বামী থাকা সত্বেও মৃত: দেখিয়ে বিধবা ভাতা উত্তোলনসহ নানান ভাবে প্রতরণা করা তার নেশা হয়ে দাড়িয়েছে। বীরদর্পে অপকর্ম করে আসলেও তার বিরুদ্ধে স্থানীয় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না।
একাধিক স্বামীর সাথে সংসার গড়ন এবং তাদেরকে প্রতারণার ফাদে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও সামাজিক মান-সম্মান ও মামলার ভয়ে অনেকেই এসব বিষয়ে মুখ খুলছেনা।
তবে অন্যানন্য স্বামীরা এড়িয়ে গেলেও বর্তমানের আবদুল হক নামের এক ভুক্তভুগি স্বামী পারভিন বেগমের প্রতরণার বিচার দাবি করে গণমাধ্যমসহ সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারেঘুরছে।
পারভিনের ফাদে পা রেখে সর্বস্ব হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পথে পথে ঘুরেবেড়াচ্ছে ভোলা সদরউপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের মৃত কাশেম আলীর ছেলে আবদুল হক।
আব্দুল হক সাংবাদিকদের জানান, গত ২০১৭ সালের জানুয়ারী মাসে ঢাকার সদর ঘাটে পরিচয় হয় পারভিন বেগমের নামের জনৈক নারীর সাথে। পরিচয় থেকে তাদের সস্পর্ক রুপ নেয় গভীব ভাবে। এরপর থেকে বিভিন্ন সুখ দুখের অজুহাতে পারভিন বেগম সহযোগিতা নেয় আবদুল হকের কাছ থেকে।
সু-চতুর পারভীন বেগম (২১-০৯-২০১৮ইং) তারিখে আবদুল হককে সু কৌশলে ২৭/৮-এ, তোফখানা রোডের বিজয় নগন কাজী অফিসে মাওলানা আবদুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী মাধ্যামে বিয়ে করতে বাধ্য করান। বিয়ের কাবিননামায় পারভীন বেগমের জম্ম তারিখ:-১-১-১৯৯৩ইং দেখানো হলেও (০৯১২১১৬১১৯৫২৩) তার জাতীয় পরিচয় পএে ১-২-১৯৮৫ইং তারিখ এবং স্বামীর নাম মহিউদ্দিন হাং উল্লেখ রয়েছে। তবে কাজী মাওলানা আবদুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী পারভিন বেগমের যোগসাজসে তার বয়স কমিয়ে কাবিন নামায় লিপিবদ্ধ করেন। অপরদিকে কাজী আবুল হাসান ০৯-০৭-২০১৯ইং তারিখে আবদুল হককে পারভিন বেগমের কাছ থেকে সড়ে যেতে প্রস্তাব করেন না হলে তালাক নুটিশ পাঠানোর হুমকি প্রদান করেন বলে জানান আবদুল হক।
এদিকে পারভিন বেগমের ইতঃপূর্বে ৪-৫টি বিয়ে বিচ্ছেদ হলেও তা গোপন রেখে আবদুল হককে পুরোপুরি কবজায় নিয়ে শুরু করে অর্থ বাণিজ্যের খেলা। বড়মানিকা মৌজার এস এ ৯৫৭, এসএ ৯৫৯, এসএ ৫৪৯, এসএ ৯৫৮, এসএ ২৪২, এস এ ৮৩৪ খতিয়ানের ৮৮৯ দাগের ৩২ শতাংশ জমি আবদুল হকের কাছে বিক্রি করার মর্মে চুক্তিপএ করেই ওই জমির উপর ভবন নির্মাণ করে বসবাস করার কথা হয় পারভিনের সাথে। সে অনুযায়ী আবদুল হক তার বড় স্ত্রীর নামের বাপ্তা মৌজা ২০২৯ নং এস এ ৪৩০৩ নং দাগের জমি হইতে ৩০ শতাংশ জমি বিক্রি করে পারভীন বেগম কে ৩২ লাখ টাকা দেয়।
পরবর্তীতে পরভীনের ভাই মামুন কাতারের ভিসা দেয়ার নাম করে ইলিশা ইউনিয়নের জাফর, বাপ্তা ইউনিয়নের হারুন, নাজিমুদ্দিন ও সোহেল এর কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা করে ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। মামুনের পিতা হাফেজ ফরাজীর উপস্থিতিতে টাকার লেনদেন হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভিসা দেই দিচ্ছি বলে তালবাহানা করছে পারভিন। তবে মামুনকে পারভিন বেগমের ভাই পরিচয় দিয়ে আসলেও গত ৩০ জুন পারভীন বেগম মামুন তার স্বামী বলে জানায় আবদুল হককে।
অথচ গত ৬মাস পূর্ব থেকে ৫তলা ফাউন্ডেশন নিয়ে ১৬শ স্কয়ার ফুটের ভবন নির্মাণের কাছ চলমান রয়েছে বর্তমান স্বামী আবদুল হকের অর্থ দিয়েই। ভবন নির্মাণের নামে আবদুল হকের মাধ্যমে ৩৩ টন রড, ৮৯০ বস্তা সিমেন্ট, ৩২ হাজার ইট, ৫ হাজার ফুট টোকের বালীসহ যাবতীয় সামগ্রী নেয় পারভিন বেগম। মালামাল ও ভবন নির্মাণ বাবদ এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ টাকা ব্যায় করেছেন আবদুল হক।
এত কিছু নেয়ার পরও থেমে থাকেনি পারভিনের প্রতারণা। গুরুতর অসুস্থতা র কথা বলে ৫ জুন ৫ হাজার টাকা, ৬ জুন ৫ হাজার টাকা এবং ৭ জুন ১০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যেমে হাতিয়ে নেয় পারভিন বেগম। বহুরুপি স্ত্রীর প্রেমে মগ্ন হয়ে লাখ লাখ টাকা ধারদেনা করতেও পিচ পা হয়নি আবদুল হক। অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন রিপনের কাছ থেকেও চেক জিম্মায় পাচ লাখ টাকা, নিহার কান্তি মজুমদারে কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকাসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ধার দেনা করে দিয়েছে আবদুল হক।
পাটোয়ারী হাট বাজারের শাহিন মাতাব্বরও সেলিমসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানায়, পারভিনের এ পর্যন্ত ৬ থেকে ৭টি বিয়ে হয়েছে। তার বোন ঝুমুর মিলে শত শত পরিবাবের জীবন ধংস করেছে। পারভিনের বিধবা ভাতার বই নং ৩১৬ ব্যাংক হিসাব নং ২৭৮৯ এবং তার মা রোকসনা রেনুর বৃদ্ধ ভাতার বই নং ২৬৫ ব্যাংক হিসাব নং ২৬৭২। তাদের অপকর্মের বিচার দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
এব্যাপারে বড় মানিকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিস্তারিত কিছুই জানিনা, পারভিনের বিয়ে হয়েছে মাহতাব উদ্দিন হাওলাদার বাড়ীর মহিউদ্দিন আহসানের সাথে। সে ঢাকায় থাকে জানি, এর পরের কোনো ঘটনা আমার জানা নাই। তবে পারভিনের পিতা সৈয়দ নজরুল মাল একাধিক বিবাহ করেছেন বলে আমি জানি।
এব্যাপারে পারভিন বেগমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সে জানায় আমি মোবাইল ফোনে আপনার সাথে কথা বলবো না সরাসরি কাল এসে কথা বলবো।