দশ টাকার রেভিনিউ স্ট্যাম্প কেনার নামে অধীনস্থ আনসার কোম্পানি কমান্ডার, আনসার প্লাটুন কমান্ডার, ইউনিয়ন আনসার প্লাটুন কমান্ডার, ইউনিয়ন সহকারি আনসার প্লাটুন কমান্ডারদের মাসিক সম্মানী ভাতা থেকে মাথা পিছু ২হাজার ২শ’ টাকা করে উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে, উপজেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা ইসমেত আরার বিরুদ্ধে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আনসার সদস্যদের মাসিক সম্মানী ভাতা, পূজা ও নির্বাচনী ডিউটির টাকা থেকে উৎকোচ নিলেও ভয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি কেউ।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন কয়েকজন সাংবাদিক ছদ্মবেশে উপজেলা পরিষদ এলাকায় আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা ইসমেত আরার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে অপেক্ষা করে দেখতে পান, ইসমেত আরা একের পর এক ইউনিয়ন আনসার প্লাটুন কমান্ডারকে ডেকে মাস্টার রোলে স্বাক্ষর নিয়ে তাদের প্রাপ্ত মাসিক সম্মানি ভাতা থেকে উৎকোচ রেখে দিচ্ছেন। এ সময়ে ছদ্মবেশী সাংবাদিকরা তার কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে পরিচয় দিয়ে উপস্থিত ইউনিয়ন আনসার প্লাটুন কমান্ডার ও ইউনিয়ন সহকারি আনসার প্লাটুন কমান্ডারদের কাছে তাদের প্যাপ্য সম্মানি ভাতার পরিমান জানতে চান।
নাজিরপুর ইউনিয়ন আনসার প্লাটুন কমান্ডার মোঃ ওবায়দুল ইসালাম জানান,তাঁর প্রাপ্য সম্মানীর টাকা হচ্ছে ৭হাজার ২শ’ টাকা। কিন্তু তাঁকে দেয়া হয়েছে ৫হাজার টাকা। একই কথা জানান, দাশপাড়া ইউনিয়ন আনসার প্লাটুন কমান্ডার গোপাল কৃষ্ণ সাহা এবং বগা ইউনিয়ন আনসার প্লাটুন কমান্ডার আমিনুল ইসলাম।
তখন আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা ইসমেত আরাকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন,“অফিসিয়াল কিছু খরচপাতি আছে এজন্য ওই টাকা রাখা হয়েছে”। কিসের খরচ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “রেভিনিউ স্ট্যাম্পের খরচ এরপর কল্যাণ তহবিল”। রেভ্যনু স্টাম্পের দাম কত জানতে চাইলে তিনি বলেন,“১০টাকা”। কল্যাণ তহবিলে কত জমা হয় জানতে চাইলে বলেন, “কল্যান তহবিলে ৫টাকা জমা হয়”। তাহলে বাকি ২হাজার ১শ ৮৫টাকা কোথায় যায়? এই প্রশ্নের কোনো সদোত্তর দেননি তিনি।
অক্টোবর ২০১৮থেকে মার্চ ২০১৯ পর্যন্ত মোট ৬মাসের সম্মানী ভাতা প্রদানের মাস্টার রোলে দেখা গেছে, প্রত্যেক উপজেলা আনসার কোম্পানি কমান্ডারে জন্য বরাদ্ধকৃত সম্মানী ভাতার পরিমান লেখা রয়েছে ৯হাজার টাকা, উপজেলা আনসার সহকারি কোম্পানি কমান্ডারের ৭হাজার ৮শ টাকা, ইউনিয়ন আনসার প্লাটুন কমান্ডারের ৭হাজার ২শটাকা, ও ইউনিয়ন সহকারি আনসার প্লাটুন কমান্ডারের ৬হাজার টাকা। ওই মাস্টার রোলে বিভিন্ন পদমর্যাদার মোট ৩৩জন আনসার কমান্ডারের নাম এবং বরাদ্ধকৃত টাকার পরিমান উল্লেখ করা রয়েছে।
এ ব্যাপারে বাউফল উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা পিজুস চন্দ্র দে বলেন, “আপনার মাধ্যমে ঘটনাটি জানলাম। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে”।
পটুয়াখালী জেলার আনসার ভিডিপি কমান্ডেন্ট আবু সাইদ বলেন, “ এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে”।