ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানির বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহের কারণে গাইবান্ধা-সাঘাটা সড়কের প্রায় শতাধিক স্থানে পানি উন্নয়নের বোর্ডের বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে বন্যার পানি প্রবল বেগে গোবিন্দগঞ্জের উত্তর-পূর্বে কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে হু হু করে বন্যার পানি করতোয়া নদীতে প্রবেশ করায় গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ড সহ নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে । পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী ২৪ ঘন্টায় গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের কাইয়াগঞ্জ নামক স্থানে সড়ক ডুবে গিয়ে যান চলাচল বন্ধ হওয়ার আশংকা রয়েছে।
গাইবান্ধার যমুনা,ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদের পানি অতিতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে। পাউবো সূত্রে জানা যায়, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি শুক্রবার কিছু টা কমেছে কিন্তু ব্রহ্মপুত্রের ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪৪ সে.মি.ঘাঘট নদের ব্রীজ পয়েন্টে ৯২ সে.মি.উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ প্রায় শতাধিক স্থানে ভেঙ্গে গিয়ে বাধেঁর পশ্চিম পার্শ্বে ঢাকা-লালমনির হাট রেললাইনের বাদিয়াখালী-ত্রিমহনী এলাকায় রেললাইন তলিয়ে যাওয়ায় রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়েছে।এছড়া বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে গাইবান্ধা-সাঘাটা সড়কের ছোট-বড় ব্রীজ দিয়ে পানি প্রবল বেগে প্রবেশ করছে। এদিকে বাদিয়াখালী-উল্লাহবাজার (ভরতখালী) সড়কের বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে ভেঙ্গে গিয়ে ব্রহ্মপুত্রের পানি এসে সাঘাটার গটিয়া,উল্লাবাজার,ভরতখালী হাট,পদুমশহর ,কালপানী, ধনারুয়া বোনারপাড়া,কলেজ মোড় ও গোবিন্দগঞ্জের হরিরামপুর ইউনিয়ন সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়ে বন্যার পানি এসে বৃহস্পতিবার ১৮জুলাই রাতে গোবিন্দগঞ্জের করতোয়া-বাঙ্গালী নদীতে প্রবেশ করায় শুক্রবার নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।এতে করে উপজেলার পৌর শহর ,নাকাইহাট,হরিরামপুর ,শিবপুর, কোচাশহর,মহিমাগঞ্জ,শালমারা ,তালুককানুপুর,দরবস্ত,সাপমারা,গুমানীগঞ্জ ও ফুলবাড়ী ইউনিয়ন এর নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।্ সেই সাথে অর্ধশতাধিক স্থানে নদী ভাঙ্গন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এসব এলাকার লোকজন জানিয়েছেন,নদী ভাঙ্গনে বেশ কিছু বসতবাড়ী সহ শতশত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। এ ছাড়া বন্যায় প্লাবিত এলাকায় আমন বীজতলা,রবি ফসল সহ পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বানের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বন্যা আরো অবনিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
এ দিকে গত বৃহস্পতিবার উপজেলার হরিরামপুর ইউপি’র কিশমত দূর্গাপুর গ্রামের মৃত্যু কছির বকসের পুত্র ছলেমান (৬২) মাছ মারতে গিয়ে প্রবল ¯্রােতে পরে নিখোঁজ হয়। পরে ফায়ারসার্ভিস ও ডুবরী দল ৪ ঘন্টা চেষ্টা করে বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে। অপর দিকে শুক্রবার বেলা ১২টায় মহিমাগঞ্জে বন্যার পানিতে ডুবে মুন্নি(৯) নামের শিশু মারা গেছে। নিহত শিশু চিনিকল শ্রমিক কলোনীর মনু মিয়ার কন্যা।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণন বর্মণ ও প্রকল্প অফিসার জরিুল ইসলাম হরিরামপুর ইউপি’র সার্বিক বন্যায় পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন এবং তাৎক্ষনিক বানভাসি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও আর্থিক সাহয্য প্রদান করেন।