বরেন্দ্র অঞ্চলে খরার কবলে পড়ে বোরো-আমন ধান ক্ষতির মুখে পড়েছে। টানা ১০ দিনের অধিক বৃষ্টিপাত না হওয়া ও উচ্চ মাত্রায় রোদের তাপ বেড়ে যাওয়ার ফলে ধান লাগানো জমিগুলো ফেঁটে চৌচির হতে বসেছে।
এই অনাবৃষ্টির কারণে কৃষকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। এই দিকে বরেন্দ্রঞ্চালের গভির নলকূপ গুলিতে টাকা দিয়ে ধানের জমিতে পানি দিতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষকরা। ইরি-বোরে আবাদে ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে কমধানে ধান বিক্রয় করে বোরো আমন আবাদ করতে এসে অতি খরার কারণে জমিতে ফসল চাষের খরচ বেড়ে গেছে। হালচাষসহ জমিতে সেচের টাকা জোগাড় করতে ঋণগ্রস্ত হতে কৃষকরা।
বরেন্দ্রঞ্চালের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, যারা প্রায় ১ সপ্তাহ আগে ধান জমিতে লাগিয়ে দিয়েছে তাদের জমিতে পানি না থাকার ফলে জমি শুকিয়ে গিয়ে ফাঁঠল দেখা দিয়েছে। আর যারা ধান আবাদের জন্য বৃষ্টির পানি জমিয়ে জমিতে চাষ দিয়ে রেখেছিলেন তাদের জমি শুকিয়ে গিয়েছে। এতে করে ফসল লাগানো ধান মরতে বসেছে অপর দিকে পানির অভাবে জমিতে ধান লাগাতে পারছে না কৃষক।
গোদাগাড়ী পৌর এলাকার কৃষক মামুন জানান, প্রায় ১২-১৪ দিন আগের বৃষ্টির পানিতে বোরো আমনের ধান জমিতে লাগাতে পেরেছি। কিন্তু গত ১০ দিন হতে আকাশের কোন বৃষ্টি না হওয়ার ফলে জমি শুকিয়ে ধান মরতে বসেছে।
তানোর উপজেলার কৃষক মিঠু জানান, আমাদের দিকে কিছু এলাকায় ধান জমিতে লাগানো আছে আর এখনো বেশীর ভাগ জমি বৃষ্টির পানির অভাবে জমিতে চাষ দিতে পারিনি ফলে ধানের আবাদ নিয়ে চিন্তিত রয়েছে।
বিএমডিএর গভীর নলকূপ হতে পানি কিনে আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে কৃষকরা জানান। কেননা এই সময়ে জমি খরার কবলে পড়ে প্রচার পানি লাগে আর জমিতে পানি দেবার জন্য অনেক সিরিয়াল নিতে হচ্ছে। সিরিয়ালের জন্য ৫-৬ দিন পর্যন্ত ধ্যৈর্য ধরতে হচ্ছে। আবার কোন সময় সকালে পানি পাব বলে গেলে দিন গড়িয়ে রাতে পানি পাওয়া যাচ্ছে। সব মিলিয়ে কৃষকরা খুব কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছে।
নাচোল উপজেলা নেজামপুর গ্রামের কৃষক মনিরুল বলেন, আমাদের জমি পানির অভাবে চাষ দিতে পারিনি। বৃষ্টি ও গভির নলকূপের পানির না থাকায় এই চরম অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে বলে তিনি জানান।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ মতিয়র রহমান জানান, গোদাগাড়ী উপজেলায় ২৩ হাজার ৭৪৬ হেক্টর বোরো আমান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমি আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি আরো ধান লাগানোর জন্য আরো উপযুক্ত সময় আছে। শ্রাবণ মাসজুড়ে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা আছে। তাই আমরা এটাকে খরা বলবো না। তবে রাজশাহী অতি খরাপ্রবণ এলাকা হওয়াতে জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবে কিছুদিন হতে বৃষ্টি নাই। তবে আগামি ২৫ জুলাইয়ের পর হতে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে তখন এই সাময়িক ক্ষতিটা কাটিয়ে উঠা যাবে বলে জানান।