ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে আদালতের আদেশে দাফনের আড়াই মাস পর কবর থেকে লিটন মিয়া (৩১) এক আওয়ামী লীগ কর্মীর মরদেহ উত্তোলন করেছে ময়মনসিংহ পুলিশের পিবিআই বিভাগ। গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার পাকাটি গ্রামে পারিবারিক কবরস্থান থেকে আওয়ামী লীগ কর্মী লিটন মিয়ার মরদেহ তোলা হয়। লিটন মিয়া পাকাটি গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের ছেলে ও উপজেলার বারবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামীগের কর্মী ছিলেন।
নিহত লিটনের পিতা ময়েজ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান হিরো ও তার ছেলেদের প্ররোচনায় গত ২৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার দিবাগত) রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে গফরগাঁও থানার এসআই রুবেল, এএসআই সুখময় দত্ত, এসআই নূর শাহীনের নেতৃত্বে ৮/১০ জন পুলিশ একটি সিআর মামলার ওয়ারেন্টি আসামি খুঁজতে গিয়ে লিটনের বাড়ি ঘেরাও করে। পুলিশ লিটনকে বসত ঘরের দরজা খুলতে বলে এবং বসত ঘরের দরজাতে লাঠি জাতীয় জিনিস দিয়ে আঘাত করে। ভয়ে লিটন ঘরের টিনের চালা কেটে ্পালাতে গিয়ে ঘরের টিনের চালা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। গুরুতর আহত লিটনকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে,২৫ এপ্রিল ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে অবস্থার অবনতি হলে ২৫ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে এবং পরে ঢাকার লালমাটিয়ার ইষ্টার্ন কেয়ার হাসপাতালে আইসিইউ তে রাখা হয়। ৯ মে বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
গফরগাঁও থানা পুলিশের দাবী কামরুজ্জামান ওরফে লিটনের নামে একটি সিআর মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলে তাকে গ্রেফতার করতে তার বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় সে টিনের চালা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়।
লিটনের পরিবারের দাবী লিটনের পিতা মইজউদ্দিনের নামের সাথে একটি মামলার আসামি কামরুজ্জামানের পিতা মইজউদ্দিনের নামের মিল থাকায় নিরপরাধ লিটন মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করতে গভীর রাতে লিটন মিয়ার বাড়িতে আসে। এ সময় পুলিশের নির্যাতনে লিটন মিয়া গুরুতর আহত হয়।
এ ঘটনায় লিটনের মা মোছাঃ অজুফা খাতুন গত ১৯ মে ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান হিরোসহ স্থানীয় ৭ জন এবং গফরগাঁও থানার এসআাই রুবেল, এসআই সুখময় দত্ত ও এসআই নূর শাহীনের নামে ময়মনসিংহ জেলা আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেটের (৭নং) আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এ মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমান হিরো (৫০), ২ নং আসামি শরীফুল (২৫), ৩ নং আসামি বিল্লাল হোসেন, ৪ নং আসামি আসাদুল হক পাকাটি গ্রামের আলাল উদ্দিন হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামি হয়ে বর্তমানে ময়মনসিংহ জেলা কারাগারে হাজতবাস করছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ পরিদর্শক আবুল কাশেম বলেন, এ ঘটনায় নিহতের মা অজুফা খাতুন গত ১৯ মে ময়মনসিংহের আমলী আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ময়মনসিংহ আদালতের বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেটের নির্দেশমতে প্রথম শ্রেনীর ম্যাজিষ্টেট ও গফরগাঁও উপজেলার সহকারি কমিশনার ( ভূমি) মোহাম্মদ আবুল মনসুরের নেতৃত্বে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।