সাগরে মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞার দিন শেষ হয়ে আসায় ফের জাল ফেলার অপেক্ষায় খোশ মেজাজে জেলেরা। সাগরে মাছ আহরণের ছুটি শেষ হচ্ছে মঙ্গলবার। তাই যেন জালটা ভালো করে মেরামত করছেন কেউ, কেউ আবার শেষবারের মতো জাল বুনছেন। কেউবা পরখ করে নিচ্ছেন জালে কোনো ত্রুটি আছে কি না। মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে ২০ মে থেকে ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধে সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে মঙ্গলবার থেকে ফের মৎস্য শিকারে বের হবেন জেলেরা। আর তাই যেন সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ফিশিং ট্রলার মালিক ও জেলেরা। ফিশিং ট্রলার সংস্কারের পাশাপাশি মেরামত করা হয়েছে ছেঁড়া জালও। সোমবার সকালে শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (ফিশারী ঘাটে) গিয়ে ফিশিং ট্রলার মালিক, মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেদের সাথে কথাবলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ইঞ্জিন ও বোট মেরামত শেষ হয়েছে। মৎস্যজীবীরা জাল তুলছেন ফিশিং ট্রলারে। সংগ্রহ করছেন খাবার ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি। সেখানে বিরাজ করছে সাগরে যাওয়ার আনন্দ। জানা যায়-উপকূলের মৎস্যজীবীরা আগস্ট মাস পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরার বিশেষ প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। কারণ এই সময় ইলিশের মৌসুম। প্রজননের মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ থাকার পরও নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেক মৎস্যজীবী জাটকা ও ডিমওয়ালা মাছ সংগ্রহ করেছেন। মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারী ঘাটে কথা হয় মায়ের দোয়া ফিশিং ট্রলারের জেলে আবুল কাশেমের সাথে। তিনি বলেন-টানা এতদিন মৎস্য শিকার বন্ধ থাকায় অনেক কষ্ট পেয়েছি। এমনকি রমজানে পানি খেয়ে রোজা রেখেছি। অনেকটা একই সুরে কথা বললেন এমবি নুসরাত ফিশিং ট্রলারের মাঝি কলিম উল্লাহ। তিনি বলেন-মৎস্য শিকারে যেতে না পারায় গত ঈদে ছেলেমেয়েসহ বাড়ির কাউকে নতুন কাপড় কিনে দিতে পারিনি। আশা করি এবারের কোরবানির ঈদটা পরিবারের সকলকে নিয়ে হাশিখুশিতে কাটাতে পারবো। হাঙ্গর মৎস্য ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু বলেন-দীর্ঘদিন ধরে মৎস্য শিকার বন্ধ থাকায় যে হতাশা নেমে এসেছিল মঙ্গলবার থেকে মৎস্য শিকার পুনরায় শুরু হলে তা কেটে যাবে। তিনি বলেন-মৎস্য শিকারে যাওয়ার সকল ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কক্সবাজার ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ বলেন-৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় এবার খুব ক্ষতি হয়েছে। এখন বোট যাবে সাগরে, দেখা যাক কী আছে কপালে। উল্লেখ্য-গত ২০ মে থেকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় অলস সময় কাটিয়েছেন জেলেরা। এবারই প্রথম বাণিজ্যিক ট্রলারের পাশাপাশি সব ধরনের নৌযানে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সংকটে পড়েছিলেন তারা। এ নিয়ে জেলে, মাছ ব্যবসায়ী ও বোট মালিকরা একাধিকবার বিক্ষোভে নামেন।