কক্সবাজারের মহেশখালীর উপদ্বীপ সোনাদিয়া বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি শুরু করেছে বেজা। ২৩ জুলাই মঙ্গল বার বিকালে বাংলাদেশ অর্থনীতি কর্তৃপক্ষ বেজার আয়োজনে ও সিটি ব্যাংকের সহযোগিতায় বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।
সুত্রে জানান,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের গভর্নিং বোর্ডের ৬ষ্ঠ বৈঠকে পরিবেশের দিকে লক্ষ্য রেখে শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দেন। তিনি শিল্পাঞ্চলে জলধারের পাশাপাশি বৃক্ষরোপন করার বিষয়ে জোর দেন। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার শিল্পাঞ্চলে ঝাউগাছ লাগানো এবং কৃত্তিম ম্যানগ্রোভ বন তৈরির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। তাঁর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামি ২০২১ সালের মধ্যে সকল অর্থনৈতি অঞ্চল সমুহে ১৫ লাখ এবং ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ লাখ গাছ রোপনের পরিকল্পনা রয়েছে বেজার।
ড. গওহর রেজভী জানান, সোনাদিয়া ইকো- ট্যুরিজম পার্ক মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া, বিজয় একাত্তর ও সমুদ্র বিলাস মৌজায় অবস্থিত। এতে মোট জমির পরিমাণ ৯৪৬৭ একর। এ পার্কটিকে একটি পুর্ণাঙ্গ ও নয়ানাভিরাম পর্যটন গন্তব্যে পরিণত করার লক্ষ্যে বেজা কাজ করে চলেছে। সোনাদিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে অক্ষুন্ন রেখে সংরক্ষিত বনকে আরও প্রসারিত করে শুধুমাত্র ৩০০ একর জায়গা জুড়ে ইকোট্যুরিজম পার্কটিকে গড়ে তোলা হবে।
এখানে অবস্থিত সুদৃশ্য ঝাউ বনকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে বেজা সেখানে ব্যাপক বনায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এছাড়াও বেজার অন্যান্য পরিকল্পনায় রয়েছে।
সোনাদিয়ায় ইকো-ট্যুরিজম পার্ক প্রতিষ্ঠা করতে বেজা ইতোমধ্যে মাষ্টার প্ল্যান প্রণয়নের লক্ষে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মাহিন্দ্রা কনসালটেন্ট ভারতকে নিয়োগ দিয়েছে। পার্কটিকে পরিবেশ বান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে বেজা প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র ৩০% স্থান ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এখানকার জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও উন্নয়নে বেজা কাজ করছে এবং সকল পরিবেশের উপাদান ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে পর্যটকদের নিকট তুলে ধরার ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এ দ্বীপে বসবাসরত ৩১৫টি পরিবারের পুনর্বাসনের একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়েছে যা মামনীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে এবং পুনর্বাসনের স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। সোনাদিয়া দ্বীপে নতুন করে যাতে কোন মৎস্য ঘের ও অবৈধভাবে বসতি গড়ে না উঠে সে বিষয়টি নিশ্চিতকল্পে জেলা প্রশাসন, কক্সবাজার প্রয়োজনীয় কাজ করছে। দ্বীপ রক্ষাকল্পে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে কাজ করছে। দ্বীপের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বাংলাদেশ কোষ্টগার্ড একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং তাদের স্থাপনার জন্য জমি বরাদ্ধের সিন্ধান্ত নেয়া হেয়েছে। সোনাদিয়া দ্বীপের বীজ বৈচিত্র্য বজায় রেখে পরিবেশ-বান্ধব ট্যুরিজম পার্ক গড়ে তুলতে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করা হচ্ছে। দ্বীপের উপকূলীয় অংশে ঝাউবন সৃজনের কাজ চলমান। সুপের পানির নিশ্চিতকল্পে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক ব্যবস্থা গ্রহণ। অবৈধ দখল বন্ধে পুলিশ ক্যাম্প ও সশন্ত্র আনসার নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ।
এব্যাপারে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন,সোনদিয়া ইকো-ট্যুরিজম পার্ক হবে প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য এক স্বর্গ রাজ্য যেখানে থাকবে সবুজের সমারহ, কাকড়া ও কচ্ছপের জন্য পৃথক জোন যেখানে জনসাধারণের প্রবেশের কোন সুযোগা থাকবে না এবং জীব বৈচিত্র সংরক্ষনসহ আরো সমৃদ্ধ করণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, টেকসই উন্নয়নের মূল শর্ত অনুযায়ী বৃক্ষরোপনের ফলে জীব বৈচিত্র্য রক্ষার পাশাপাশি ভূমি রক্ষা হবে। তিনি বলেন আরো বলেন, সরকার দ্বীপভিত্তিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ডেল্পা প্ল্যানের অধীনে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তাই দ্বীপের জীব বৈচিত্র্য এবং পারিপার্শ্বিক অবস্থঅ অপরিবর্তিতরেখে দ্বীপবাসীদের জীবন ও জীবিকা সংস্থান করার জন্য ভবিষ্যতে বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে। সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক তারই প্রতিফলন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কক্সবাজার, বন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তর, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, জেলা ও প্রশাসনের প্রতিনিধিসহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিগণসহ সিটি ব্যাংকে প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
বৃক্ষরোপন কর্মসুচিতে অন্যন্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মূখ্য সমন্বয়ক(এসডিজি) মোঃ আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরুয়াসু ইজুমি,বেজার চেয়ারম্যান প্রবন চৌধুরী,বেজার নির্বাহী সদস্য মো: আয়ুব, সাংসাদ আশেক উল্লাহ রফিক,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আবছার,জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজুল মোস্তাফা, মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম,উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফ বাদশা,সহকারী কমিশনার অংগ্যাজাই মারমা, ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর, পৌর মেয়র মকছুদ মিয়া, ধলঘাটার চেয়ারম্যাণ কামরুল হাসান ,কুতুবজোম ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন খোকন, উপজেলা শ্রমিকলীগের সহ সভাপতি জাহাঙ্গির আলম।