পর্যটকদের নৌ-ভ্রমণে মুখরিত হয়ে উঠছে পাবনার সুজানগরের ঐতিহাসিক গাজনার বিল। প্রতিদিন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা গাজনার বিলে এসে নৌ-ভ্রমণ করছেন।
প্রতি বছর বর্ষার মৌসুম এলেই গাজনার বিল নতুন পানিতে থৈ থৈ করে। আর এ পানি থাকে পৌষ মাস পর্যন্ত। বর্ষার শুরু থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত দীর্ঘ এ সময় শত শত সবুজ শ্যামল গ্রাম বেষ্টিত বিশাল বিস্তৃত ওই গাজনার বিল সত্যই অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিণত হয়। সেকারণে এ সময় দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ পর্যটক ছুটে আসেন গাজনার বিল ভ্রমণে। ভ্রমণ পিপাসু এসব বেশিরভাগ পর্যটক বিলে নৌ-ভ্রমণ করে থাকেন। পর্যটকদের নৌ-ভ্রমণের জন্য বিলের খয়রান ব্রিজ পয়েন্টে, চরবোয়ালিয়া পয়েন্টে এবং বোনকোলা ব্রিজ পয়েন্টে বাণিজ্যিকভাবে রাখা হয়েছে ইঞ্জিন চালিত বড় নৌকা, ডেঙি নৌকা ও স্পীডবোড। তাছাড়া পর্যটকদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে স্থানীয়ভাবে বিলের খয়রান ব্রিজ পয়েন্টে রাখা হয় বিশাল বাইচ’র নৌকা। পর্যটকরা এসব বাইচ’র নৌকায়ও বিল ভ্রমণ করে থাকেন। তবে বাইচ’র নৌকায় সাধারণত স্থানীয় পর্যটকরা ভ্রমণ করেন। বিলপাড়ের উলাট গ্রামের আলতাফ হোসেন জানান, প্রতিদিন কমবেশি পর্যটককে গাজনার বিলে নৌ-ভ্রমণ করতে দেখা যায়। তবে প্রতি শুক্রবার পর্যটকদের নৌ-ভ্রমণে গাজনার বিল মুখরিত হয়ে উঠে। এদিন হাজার হাজার পর্যটক তাদের পরিবারপরিজন নিয়ে গাজনার বিলে নৌ-ভ্রমণ করেন। বিলপাড়ের মানুষও নৌ-ভ্রমণ থেকে পিছিয়ে নেই। তারাও বিকাল হলেই নিজস্ব নৌকা নিয়ে বিলে ঘুরতে বেড়িয়ে পড়েন। পর্যটকরা বিকেল থেকে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত বিলের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে নৌ-ভ্রমণ করেন। বিলে নৌ-ভ্রমণে আসা পর্যটক দম্পতি মামুন খান এবং শিউলী আক্তার জানান, ঐতিহাসিক এই বিলটি ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। তবে এজন্য প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বিলে সারা বছর পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করাসহ বিলের চারিদিকে পরিকল্পিত পিকনিক স্পট গড়ে তোলা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিৎ দেবনাথ বলেন গাজনার বিল সত্যই পর্যটকদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করার মতো একটি বিল। ভবিষ্যতে বিলটি যাতে প্রকৃত পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয় সে উদ্যোগ নেওয়া হবে।