পাবনার চাটমোহরে সার্কাস দেখার ‘পাস’ নিয়ে আয়োজক কমিটির সঙ্গে হাতাহাতি হয়েছে পুলিশের। সোমবার (২৯জুলাই) দিবাগত রাত ১১টার দিকে উপজেলার গুনাইগাছা খেলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কনস্টেবল লিটন দাসসহ অন্ততঃ ৬ জন আহত হয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় আনা হয় গুনাইগাছা ইউনিয়ন আওয়ালীগের সাধারণ সম্পাদক ও হিসাব রক্ষণ অফিসের অডিটর মোঃ ইউনুস আলীকে। চাটমোহর থানার ওসি শেখ নাসীর উদ্দিন বলছেন,বড় ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি। ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে মাত্র।
এলাকাবাসী ও সার্কাসের দর্শক সুত্রে জানা গেছে, হাতাহাতির আগে আয়োজক কমিটির সদস্যদের সাথে পুলিশের বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। এর আগে সার্কাস দেখার জন্য আয়োজক কমিটির ‘পাস’ নিয়ে মাঠে ঢুকতেছিলেন লোকজন। এ নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত।
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হাতাহাতির একপর্যায়ে লাঠিচার্জ করে শত শত মানুষের জটলা ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। অবস্থা বেগতিক দেখে ভোঁ দৌড় দেন দর্শকেরা। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। হাতাহাতি চলাকালে আয়োজকদের মারপিটে আহত হন লিটন দাস। পুলিশের মারপিটে আহত হন অন্ততঃ ৫ জন।
দর্শক সুত্রে জানা গেছে,পুলিশ সার্কাসের গেটে ‘পাস’ ঠেকাতে দায়িত্ব পালন করছিল। অতিরিক্ত ‘পাস’র কারণে লোকসান গুনছিলেন সার্কাসের মালিক। ফলে সার্কাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় সার্কাসের মালিক। এ নিয়ে বৈঠক বসেন পুলিশ-আয়োজক কমিটি ও সার্কাস মালিক। বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গেটে দায়িত্ব পালন করছিল পুলিশ। যদিও সহকারি পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) বলছেন, পুলিশ সেখানে ছিল নিরাপত্তার দায়িত্বে। গুনাইগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাদের নেতৃত্বে চলছে সার্কাসটি। কথা বলার জন্য পাওয়া যায়নি গুনাইগাছা ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নুরুল ইসলামকে।
ওসি শেখ নাসীর উদ্দিন বলেছেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকে থানায় আনা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তার ভাই এ ঘটনার সাথে জড়িত। এসপির সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। লিটন দাসকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি তেমন নয়। মামলা নাও হতে পারে। এটা ভুল বোঝাবুঝি।
সহকারি পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরিন বলেন, লিটন দাস নামের আমার এক সদস্য আহত হয়েছেন। মামলা হবে কিনা এটা ওসি বলতে পারবেন। পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বলেছেন, পুলিশ আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছে। প্রসঙ্গতঃ গ্রামীণ শিল্প ও বানিজ্য মেলার নামে ১০ দিনের অনুমোদন দেন পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ। সেখানে সার্কাস বা বিচিত্রানুষ্ঠানের কোন অনুমোদন ছিলো না। রাত ১০টার মধ্যে মেলা শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু আয়োজকরা তা মানেনি। চলচ্চিত্র জগতের কতিপয় নায়িকা এনে সার্কাস চালানো হচ্ছিল।