দেশের ৬৪টি জেলাতে সরকারি পদ পদবীর মধ্যে চারটি পদ খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ পদ পদবী হিসেবে সমধিক বিবেচনা করা হয়ে থাকে। সচিব পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত জেলা ও দায়রা জজ। তারপর রয়েছে জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), সিভিল সার্জন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ পদবী। প্রতি বছর দেশে পৃথকভাবে জেলা ও দায়রা জজদের বিভাগীয় সম্মেলন, ডিসি সম্মেলন, এসপি সম্মেলন ও সিভিল সার্জনদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এসব সম্মেলনে জেলা ও দায়রা জজ, ডিসি, এসপি এবং সিভিল সার্জনগণ তাদের বিভিন্ন অভাব, অভিযোগ, সুবিধা, অসুবিধা ও সমস্যার সমাধান কল্পে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, নীতি নির্ধারনি মহল ও সরকারের নিকট বিভিন্ন দাবী দাওয়ার নিরিখে অনেক কিছু প্রত্যাশা করে থাকে। যার আলোকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সরকারের কাছ থেকে একটি মেমোরেন্ডাম বা নির্দেশনা দেয়া হয়ে থাকে।
এবারের (২০১৯ সালের) ৫ দিন ব্যাপী ডিসি সম্মেলন ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার সমাপ্তি হয়। ডিসি সম্মেলনে ৩৩৩টি প্রস্তাব করা হয়ে থাকে। তথ্য ও সূত্রে জানা যায়, ৫ দিন ব্যাপী ডিসি সম্মেলনে এসব প্রস্তাবের বেশীর ভাগই নাকি আমলে নেয়া হয়নি। বরং প্রধানমন্ত্রী ৩১ দফাসহ প্রায় ৩৫০ নির্দেশনা সরকারের নীতি নির্ধারকদের কাছ থেকে তারা পেয়েছেন। এতে ডিসিদের দায়িত্ব বেড়েছে। কিন্তু ডিসিদের কাংখিত ও উত্থাপিত দাবী দাওয়ার ব্যাপারে আশানুরূপ সাড়া না মেলায় অনেকের মধ্যে নাকি হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৫ সালে ডিসি সম্মেলনে প্রস্তাব ছিল ২৫৩টি, ২০১৬ সালে ৩৩৪টি, ২০১৭ সালে ৩৪৯টি, ২০১৮ সালে ছিল ৩৪৭টি এ বছর ৩৩৩টি প্রস্তাব করা হয়। আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর সাথে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন জেলার ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারগণ। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ২০১৬ সালে ১৯ দফা, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ২৩ দফা নির্দেশনা দিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি ২০১৯ সালের সম্মেলনে নির্দেশনার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১।
জানা যায়, এবারের ডিসি সম্মেলনে ১৫টি দাবীর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য স্বতন্ত্র ব্যাংক গঠন, একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, জ্বালানি খরচের সিলিং তুলে দেওয়া, ঝুঁকিভাতা চালু করণ, ডিসিদের অধীনে সার্বক্ষণিক একটি বিশেষায়িত পুলিশ ফোর্স গঠন, জেলায় কর্মরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ার এখতিয়ার, আয়কর ও ভ্যাট আদায় সম্পর্কিত, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন- ২০১৮ মোবাইল কোর্ট আইনের তফসিলভূক্ত করা, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে কোটা সংরক্ষণ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের (পিআইও) এসিআর ইউএনওদের হাতে অর্পন, ইউপি চেয়ারম্যানদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কোনো কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠানে দেরী হলে তদস্থলে
চলমান পাতা/২
পাতা: ২
প্রশাসক নিয়োগ, কোটি টাকার থোক বরাদ্দ, এনজিও কার্যক্রম তদারকি, উপজেলা শিক্ষা কমিটিতে ইউএনওদের সভাপতি করাসহ আরও কিছু দাবীর কথা বলা হয়ে থাকে। সম্মেলনের বিভিন্ন কর্ম অধিবেশনে ক্ষমতা ও সুযোগ সুবিধা সম্বলিত অধিকাংশ প্রস্তাব নাকচ হয়েছে বলে তথ্য ও সূত্রে জানা যায়।
২০০৭ সালে বিচারক মাসদার হোসেন মামলার আলোকে বিচার বিভাগ আলাদা হওয়ার আগে ডিসিদের (ডিএম) বিচারিক ক্ষমতা ছিল। আগের সম্মেলনগুলোতেও ফৌজদারী অপরাধ আমলে নেয়াসহ বিচারিক ক্ষমতা চেয়ে আসছিলেন ডিসিরা। এ বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন বলে তাদেরকে (ডিসি) সান্তনা দেয়া হয়ে থাকে। যদিও মাসদার হোসেন মামলার আলোকে নির্বাহি বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ আলাদা হলেও এখনও নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেটদের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও এডিএম কোর্ট পরিচালনা হয়ে আসছে। অনেক আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন নির্বাহি বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ (ঔঁফরপরধষ ংবঢ়বৎধঃরড়হ) আলাদা হলেও এটা পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়েছে বলে মনে করেন না। এবারও ডিসি সম্মেলনে এ প্রস্তাব পেশ করা হলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিষয়টি সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। এটা করতে গেলে আইন সংশোধন করতে হবে। তাই এটা করা হবে না।
ডিসি কার্যালয় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ও সার্কিট হাউসের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডিসিদের অধীনে একটি বিশেষায়িত সার্বক্ষণিক পুলিশ ফোর্সের প্রস্তাব করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, বিশেষ পুলিশ ফোর্সের প্রয়োজন নেই। কারণ পুলিশ সবসময় ডিসিদের কাজে সহযোগিতা করে থাকে। ডিসিদের নির্দেশনায় পুলিশ সব জায়গায় কাজ করে থাকে। এছাড়া প্রয়োজনে আনসার বিজিবিসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী ও কাজ করে থাকে। এ ব্যাপারে একজন আইন বিশ্লেষক মন্তব্য করে বলেছেন জেলা পুলিশ সুপার থাকার পরও যদি ডিসিদের অধীনে জেলায় একটি বিশেষায়িত সার্বক্ষণিক পুলিশ ফোর্সের প্রত্যাশা কোনো মতেই ঠিক নহে। তাতে প্রতি জেলায় পুলিশ সুপার পদটি থাকার প্রয়োজনই বা কি। এছাড়া বর্তমানে ডিসি এবং এসপির পদমর্যাদা সমান হলেও অনেক ক্ষেত্রে লক্ষ্য করলে দেখা যায় এসপি প্রায় সময়ই ডিসির পরামর্শ নিয়ে থাকেন।
তদোপরি অনেকেই মনে করে একজন ডিসি বর্তমানে পদাধিকার বলে জেলার প্রায় ৫০টি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। এতগুলোর প্রতিষ্ঠানের কাজ ডিসিরা ব্যস্ততার মাঝে সুচারুরূপে পালন করতে পারে বলে মনে হয় না। তারপরও নতুন করে আরও দায়িত্ব দেয়া হলে সেটা পালন করা কতটুকু সম্ভব তাও ভাবনার বিষয়।
১৯ জুলাই গণমাধ্যমের সংবাদ থেকে জানা যায়, ডিসিদের রাজস্ব কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চাওয়ার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিসিএস কাস্টমস এন্ড ভ্যাট ও বিসিএস ট্যাকসেশন এসোসিয়েশন। তারা ডিসিদের এ ধরণের দাবীকে অযৌক্তিক, এখতিয়ার বহির্ভূত এবং অর্থহীন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, সরকার পরিচালনা এবং জনগণের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২৮টি ক্যাডার সৃজন রয়েছে। প্রত্যেকটি ক্যাডারের কর্মের পরিধি এবং প্রকৃতি সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত। এছাড়া অভ্যন্তরীন রাজস্ব আহরন সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণী কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। বিসিএস ট্যাকসেশন ও বিসিএস কাস্টমস এন্ড ভ্যাট ক্যাডারদের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের নিয়ন্ত্রণ রাজস্ব বোর্ডের অধীনে উপজেলা পর্যন্ত সুবিন্যস্থ রয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে কাস্টমস, ট্যাকসেশন ও ভ্যাট বিসিএস এসোসিয়েশন কাজ করে যাচ্ছে। ডিসি এবং ইউএনওরা জেলা এবং উপজেলা কমিটি গঠন করে রাজস্ব আদায় পরিবীক্ষণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করে এ ধরণের প্রস্তাব এখতিয়ার বহির্ভূত হস্তক্ষেপই নয়, বরং এর মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে একটি বিশৃংখলা সৃষ্টির আশংকা রয়েছে এবং নিয়োজিত কর্মকর্তাদের মনোবলও নষ্ট করবে। এ ধরণের কর্মকান্ড থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিরত রাখার ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করে ডিসিদের এসব দাবী আমলে না নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে বিসিএস কাস্টমস, ট্যাকসেশন এন্ড ভ্যাট এসোসিয়েশন। যদিও জলমহাল ইজারা দেয়ার বিষয়টি ডিসি ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত রয়েছে।
জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে ডিসিরা ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর। জেলার সব ধরণের ক্ষমতা ছিল তাদের হাতে। ওয়ারেন হেস্টিংসের হাতে ১৭৭২ সালে গোড়াপত্তনের পর প্রায় একশত বছর ধরে এটি ছিল শুধু ব্রিটিশদের জন্য, তবে পরে স্বল্প সংখ্যক ভারতীয়রাও এ পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। একটা ঔপনিবেশিক শক্তির প্রতিনিধি যথার্থভাবেই সবক্ষেত্রে একচ্ছত্র ক্ষমতা দিয়েছিল ডিস্ট্রিক কালেক্টরদের হাতে। একটা কলোনী শাসন করার জন্য সেটাই ছিল তাদের জন্য উপযোগী পন্থা ও কৌশল। সে সময় তারা কালেক্টর হিসেবে খাজনা, অর্থ সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যাপারে দায়িত্ব প্রাপ্ত ছিলেন। ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নি¤œ আদালতের ফৌজদারি ক্ষমতাও ছিল তাদের হাতে। আর জেলার অন্য সব সরকারি বিভাগের প্রধানরা যেমন পুলিশের সুপারিনটেনডেন্ট
চলমান পাতা/৩
পাতা: ৩
(এসপি), জেলের সুপার, সার্জন জেনারেল, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরা তাদের বিভাগের প্রতিটি বিষয় ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টরকে জানাতে বাধ্য থাকতেন।
ব্রিটিশরা বিতাড়িত হওয়ার পরও তাদের ফেলে যাওয়া সর্বময় কর্তৃত্ববাদী প্রশাসন যে এরপরও চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে, সেটা অনুমান করাই যায়। পোস্ট কলোনিয়াল ডিসকোর্স স্বাধীনতা শব্দটিকেই চ্যালেঞ্জ করে। পোস্ট কলোনিয়াল ডিসকোর্সের অন্যতম পুরোধা এডওয়ার্ড সাঈদ তার বিখ্যাত গ্রন্থ ওরিয়েন্টালিজমে যৌক্তিকভাবেই বলেছেন, কলোনিয়াল দেশগুলোর মানুষের একটা অংশ কলোনিয়াল শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে মূলত তাদের বিতাড়িত করে ওই জায়গাটা দখল করার জন্য। তাই স্বাধীনতা বলে যে বস্তুটা নিয়ে আমাদের তৃপ্তি, প্রায় সবক্ষেত্রে সেটা আসলে বিদেশী শক্তির হাত থেকে দেশী শক্তির হাতে ট্রান্সফার অব পাওয়ার (ঞৎধহংভবৎ ড়ভ ঢ়ড়বিৎ)। তাই ব্রিটিশ, পাকিস্তানী শাসনের অবসানের পরও আমাদের ডিসিদের কলোনিয়াল আচ্ছন্নতা কাটেনি, তারা থেকে যেতে চান জেলার সবকিছু দন্ডমূন্ডের কর্তা হিসেবে।
পোস্ট কলোনিয়ালিজমের আরেক দিকপাল হোমিকে ভাভা তার মিমিক্রি তত্বে দেখিয়েছেন কলোনাইজাররা চলে যাওয়ার পরও ওই দেশের মানুষের মধ্যে কলোনাইজারদের অনুকরণের প্রবণতা চলতে থাকে। এ প্রবণতা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সরকারি কর্মকর্তা পর্যন্ত সবক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায়। সাধারণ মানুষের এ প্রবনতাও অনুচিত, তবে সেটা জাতি রাষ্ট্রের জন্য ততটা ক্ষতির কারণ হয় না। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে মিমিক্রি ব্রিটিশরা যাওয়ার বহুকাল পরও প্রশাসনকে ঔপনিবেশিক শাসনের প্রশাসন হিসেবেই আমাদের সামনে জারি রাখে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ডিসিরা এখন সেই অবস্থানে আর নেই। তারা এখন স্বাধীন দেশের জেলা প্রশাসক। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে তদানীন্তন সিও, এসডিও, ডিসি, এসডিপিও, এসপি, জেলা জজ সহ অন্যান্যদের গৌরবোজ্জ্বল অবদান ও ভূমিকা আজও অম্লান।
প্রতি বছর পৃথক সম্মেলনে জেলা ও দায়রা জজ, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনরা তাদের অভাব, অভিযোগ, সমস্যা তুলে ধরে সরকারের কাছে বিভিন্ন প্রত্যাশা করে থাকে। ইহাই স্বাভাবিক ও এর কাংখিত বাস্তবতাকে অস্বীকার করা যায় না। এ ব্যাপারে অনেকেই মনে করে, প্রতি বছর এসব সম্মেলনে পৃথকভাবে বিভিন্ন প্রস্তাব, দাবী ও প্রত্যাশার আগে জেলা পর্যায়ে বিচার বিভাগ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের মধ্যে সমন্বিত আলোচনা করে যদি এগিয়ে যাওয়া যায় তবে সরকারের কাছ থেকে এর কাংখিত প্রত্যাশা পূরণে যথেষ্ট সহায়ক হওয়ার কথা। এছাড়া জেলা পর্যায়ে জেলা ও দায়রা জজকে সচিব মর্যাদার কর্মকর্তা হিসেবে পাওয়া যেমন গৌরবের বিষয় তেমনি তাহাকে কাজে লাগিয়ে অনেক অসাধ্য সাধন করার সুযোগ রয়েছে বলে সমাজের অভিজ্ঞজনরা মনে করে থাকে।
জেলায় শাসন, প্রশাসন, আইন, বিচার বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের স্বাধীন সত্ত্বা থাকলেও, সমন্বিত উদ্যোগ ও জাতীয় স্বার্থে সমন্বয় যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে থাকে। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে এর উজ্জ্বল ও প্রশংসনীয় দিকদর্শন ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। সমন্বয়ই শক্তি, সমন্বয়ই মুক্তি, সমন্বয়ই জাতীয় উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির চাবিকাঠি। এবারের ডিসি সম্মেলনে তাদের ৩৩৩টি প্রস্তাব যেমন তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার তেমনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগ যদি এমনিভাবে সরকারের নিকট ৯৯৯টি প্রস্তাব পেশ করে থাকে তবে তাতে কারও কিছু মনে না করারই কথা। সরকার হচ্ছে রাষ্ট্রের সকলেরই অভিভাবক। এছাড়া আগামী ডিসি সম্মেলনে যদি ডাবল প্রস্তাব দেয়া হয় তাতেও মন্তব্যের কিছু নেই। তবে একথা অনুধাবন করা উচিত, অর্থনীতির পরিভাষায় ডধহঃং ধৎব ঁহষরসরবফ অর্থাৎ চাহিদার শেষ নাই। তবে নাসার বিজ্ঞানীদের মতো যে কারও চাঁদের দেশ ভ্রমণের ইচ্ছা অভাব নয়, আকাংখা। আকাংখা থাকা ভালো, তবে এর মধ্যে নীহিত রয়েছে সীমাবদ্ধতা।
এ.কে.এম শামছুল হক রেনু
লেখক কলামিষ্ট