বগুড়ায় বন্যার পানি নেমে যেতে থাকলেও বনার্তদের দূর্ভোগ এখন সীমা ছাড়িয়ে যেতে বসেছে। সাম্প্রতিক বন্যায় বগুড়া জেলার সারিয়াকন্দি সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার বিস্তৃন অঞ্চল বন্যা কবলিত হয়। স¦রন কালের এ বণ্যায় ব্যাপক ধংশ নিলা চালিয়ে যায় যমুনা বাঙ্গালী নদীর পানি। বিভিন্ন স্থানে বনার্তদের অধিকাংশ মানুষ এক অবধি ত্রানের দেখা পায়নি এমন অভিযোগ বহুস্থানের।
এব্যপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ধুনট উপজেলায় কয়েকটি ইউনিয়নে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে বন্যাদূর্গত লোকজনের ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ত্রাণ না পেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতর ভাবে দিনাতিপাত করছে বন্যাদূর্গত এলাকার লোকজন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মানুষ গত প্রায় ১৫/২০ দিন যাবৎ পানিবন্দি। ইউনিয়নের অধিকাংশ বাড়ী-ঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের মধ্যে প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষ পানি বন্দি। বন্যাদূর্গত এলাকাগুলোতে এখন শিশু খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
বন্যাদূর্গত বিলচাপড়ী গ্রামের কৃষক আবদুল আলিম, শৈলমারী গ্রামের ক্ষেতমজুর মতি মিয়া, খোকশাহাটা গ্রামের কৃষক বাচ্চু মিয়া, তারাকান্দি গ্রামের কৃষক আবদুল খালেক জানান বাড়ীর টিনের চাল পর্যন্ত ডুবে গেছে, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছি এখন পর্যন্ত কোন প্রকার ত্রাণ সামগ্রী পাইনি কেউ দেখতেও আসেনি।
এছাড়াও স্থানীয় পানি বন্দি লোকজন গণমাধ্যমকর্মী দেখে এগিয়ে এসে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এদিকে নিমগাছি ইউনিয়নের বেড়েরবাড়ী গ্রামের আবদুর রহিম বলেন ১৯৮৮ সালের পর এতবড় ভয়াবহ বন্যা দেখা যায়নি, এই সংকটে তাদের পাশে দাড়ানোর কেউ নেই বলেই তারা ধরে নিয়েছেন। বন্যায় বাড়ী-ঘর তলিয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে ঢাকা থেকে গ্রামে আসা বিশ^বিদ্যালয় পড়-য়া কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, স্থানীয় প্রশাসন এই পরিস্থিতিকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেনা। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ঘুরে তাদের এমনটা মনে হয়েছে। এ বিষয়ে ধুনট উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আবদুল আলিম এর কাছে ফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, অল্প কিছু শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল কিন্তু পরিমাণে অল্প হওয়ায় কেউ নিতে আসেনি।
এ বিষয়ে এলাঙ্গী ইউপি চেয়ারম্যান এম.এ তারেক হেলাল জানান, “গত ১০দিনের ভেতর দুই-তিনবার নিজে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেছি”। তিনি আরও জানান, “উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বারংবার জানানোর পর উনি দুইবার এসেছিলেন। কিন্তু অদ্যাবধি কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহন করেন নাই”। ত্রাণ বরাদ্দের বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, “উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেছেন, আগামি ঈদে ভিজিএফ এর মাধ্যমে সমন্বয় করে দেবেন। কিন্তু বন্যাদূর্গত বা পানিবন্দিদের ত্রাণের কোন ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়”।এব্যপারে সকলের সহায়তা কামনা করেছেন এই জনপ্রতিনিধি।