নেত্রকোনাার দুগার্পুর-কলমাকান্দা দুই উপজেলার যোগাযোগের একটি মাত্র সড়ক। প্রতিদিন দুই উপজেলার হাজারো মানুষ, যানবাহন থেকে শুরু করে রোগীবাহী গাড়ী সহ সকল কিছুই যাতায়াত করছে এই সড়ক দিয়ে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে এই সড়কটিতে যাত্রী চাপ বাড়ায় দিন দিন খারাপ হয়ে থাকে সকড়টি। তাই এলজিইডির অওতায় দুর্গাপুর-কলমাকান্দা পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার এই সড়কটি নতুন করে সংস্কারের জন্য মোট তিন প্যাকেজে গত বছরের ৫ ই আগস্ট সাড়ে ২৪ কোটি টাকায় ব্যয়ে ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংস্কার কাজ শুরু করে। এর মাঝে দুগার্পুর-নাজিরপুর পর্যন্ত ১০ কি.মি একটি প্যাকেজ ও নাজিরপুর- কলমাকান্দা বাজার পর্যন্ত ১৫ কি.মি বাকী দুইটি প্যাকেজের কাজ ধরা হয়।
যা চলতি বছরের ৬ই মে সম্পূণ্য কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত দুই মাস পার হয়ে গেলেও এখনো সড়কের বেশির ভাগ অংশের কোনো কাজই করেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। আর যে সব স্থানে বা কাজ করেছে ঐ অংশে শুধু ইট দিয়ে কার্পেটিং করে রাখায় বৃষ্টির পানি জমে তৈরি হয়েছে ছোট বড় অসংখ্যা খানাখন্দে ফলে প্রতিদিন যানবাহন খানাখন্দে পড়ে ঘটছে র্দূঘটনা। গাড়ি উল্টে কারো হাত ভাঙ্গছে আবার কারো বা ভাঙ্গছে পা। আশপাশের বাড়ি-ঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও পড়েছে এর প্রভাব। সড়ক ভালো না থাকায় কোনো কিছুই করতে পারছেন না এই সড়কের দুই পাশের বাসিন্দারা। তাছাড়া আর কয়েকদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আযহা। পরিবার পরিজন, বন্ধু বান্ধব,আত্মীয় স্বজন সহ সবার একসঙ্গে ঈদ করতে শহর ছেড়ে মানুষ আসতে শুরু করেছে ছুটে গ্রামের পথে। কিন্তু সড়কের বেহাল দশা ও বড় বড় খান্নাখন্দ মানুষের যাতায়াতে নেমে আসে সীমাহীন ভোগান্তি। মাত্র ২৫ কি.মি. এই সড়ক পাড়ি দিতেই ঘন্টার পর ঘন্টা পেড়িয়ে গেলেও নির্দিষ্ট গন্তব্যের দেখা পাচ্ছেনা যাত্রীরা। ফলে এক দিকে যেমন সড়কগুলোতে বাড়ছে যাত্রী চাপ, তেমনি অপরদিকে বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তিও। স্থানীয় বাসিন্দা আবু সিদ্দিক জানায়, সবসময় সড়কে পানি জমে থাকে আর বৃষ্টি হলে এটি সাগরে রূপ নেয়। আমরা যে একটু হেটেঁ চলাচল করবো তাও কেনো ব্যবস্থা নাই। স্কুলে শিক্ষার্থীরাও ঠিক মত স্কুলে যেতে পাড়ে না পানির জন্য। নি¤œমানের কিছুু ইট ফেলে এই যে গেচ্ছে পরে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠিনের কোনো লোককে আর দেখলাম না। আমরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই। যাতে ঈদে ঘরমুখি মানুষ গুলো একটু শান্তিতে চলতে পাড়ে। দুগার্পুর অটো চালক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতান হোসেন বলেন, রাস্তার কথা কি আর বলো ভাই ? গাড়ি উল্টে দূর্ঘটনা ঘটছে না যমন কোনা দিন নাই। আমার প্রায় ১ শত ৩৭ টি বেশি অটো এই সড়ক দিয়ে যাত্রীবাহীন করে আসছে। কিন্তু এখন এর বেশি ভাগ অটোই বন্ধ। কারণ আগে যে জায়গা পাড় হতে ৩০ মিনিট লাগতো। এখন ২ ঘন্টাও এই জায়গা পাড় হওয়া যায়। এই সামনে ঈদ আসছে যাত্রীদের বাড়ি দিয়ে যাবো তা আমাদের জানা নাই। উপজেলা এলজিইডি কর্মকতা আবদুল আলিম লিটন জানায়, কাজটি আরো ২ মাস আগেই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ধীরগতির কাজের কারণে এখনো কাজটি শেষ হয়নি। আমরা তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছি যাতে দ্রুত সময় মাঝে কাজটি শেষ করে। তাছাড়া সামনে পবিত্র ঈদুল আযাহ থাকায় সড়কে যাত্রী চাপ বেড়েছে। তার উপর আবার এখন যেহেতু বষার্কাল তাই সড়কে পানি জমে খান্নাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যাত্রীদের যাতায়াতে কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি এই ভোগান্তি কমিয়ে আনতে।
এব্যাপারে বেশ কয়েক বার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোনো কর্মকর্তাই কথা বলতে রাজি হয়নি।