কালিগঞ্জের অর্থ লেনদেনকে কেন্দ্র করে এক যুবককে নির্যাতনের পর হত্যার উদ্দেশ্যে হাত পা বেঁধে বস্তায় ভরে বাগানে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বন্ধুর বিরুদ্ধে। এর আগে ছিনিয়ে নিয়েছে নগদ ৭০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বিষ্ণুপুুর ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বন্দকাটি গ্রামের কামরুল গাজীর ছেলে শিমুল গাজী (২৩) জানান, পাবনার একটি ইটভাটায় কাজ করার জন্য এক বছর আগে তিনি তার বন্ধু একই উপজেলার কোমরপুর গ্রামের আক্কাজ মোড়েলর ছেলে আব্দুল্যাহ মোড়লের (২৬) মাধ্যমে ভাটার সর্দার খলিল এর নিকট থেকে অগ্রিম হিসেবে ৩২ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কাজে যেতে না পারায় এক সপ্তাহ পর তিনি গৃহণকৃত টাকা তার বন্ধুকে ফেরত দেন। কিন্তু ওই টাকা ভাঁটা সর্দার খলিলকে ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ করে আব্দুল্যাহ।
তিনি আরও জানান, প্রায় আট মাস আগে তিনি একটি মোটর সাইকেল (সাতক্ষীরা-ল-১১-৯০১৪) কেনেন। প্রায় দুই মাস যাবত ক্রয়কৃত মোটর সাইকেল ভাড়ায় চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন তিনি। গত ২৬ জুলাই সকালে মোবাইল ফোনে বন্ধু আব্দুল্যাহ তাকে ডেকে নিয়ে কৃষ্ণনগর ইউপি’র সাবেক চেয়াম্যান মরহুম কেএম মোশরারফ হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আব্দুল্যাহর উপস্থিতিতে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভাঁটা সরদার খলিলের পক্ষে জনৈক ব্যক্তি ইউপি সদস্য পরিচয়ে জোরপূর্বক ২৫০ টাকার নন-জুডিশিয়াল অলিখিত স্টাম্পে জোরপূর্বক সাক্ষর করিয়ে নেয়। এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা পরিশোধের কথা বলে মোটর সাইকেল আটকে দেয় তারা। পরে আব্দুল্যাহ টাকা জমা দিয়ে ওই মোটর সাইকেল ছাড়িয়ে দেবে বলে তাকে নিয়ে চলে আসে। পরদিন মোবাইল ফোনে তাকে ৩২ হাজার টাকা দিয়ে ওই মোটর সাইকেল ছাড়িয়ে আনতে বলে। তানাহলে ঈদের আগের দিন ভাঁটা সরদার ওই মোটর সাইকেল অন্যত্র বিক্রি করে দেবে বলে জানায়। এ নিয়ে আব্দুল¬্যার সঙ্গে চরম বিরোধ সৃষ্টি হয় শিমুল গাজীর।
এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে একটি ভাড়া মোটর সাইকেলে নাজিমগঞ্জ বাজার এলাকায় আসার সময় বন্ধু আব্দুল¬্যাহ ভাটার সর্দারের নিকট থেকে মোটরসাইকেল ফিরিয়ে আনার কথা বলে জব্বারের দোকানে আসতে বলে শিমুল গাজীকে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দিকে তিনি সেখানে পৌঁছানো মাত্রই পিছন দিক থেকে আব্দুল¬্যাহ তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে। ভাড়াকৃত মোটর সাইকেল থেকে পড়ে যাওয়ার পর প্রায় অচেতন অবস্থায় আব্দুল¬্যাহসহ তার তিন সহযোগী তার কাছে থাকা স্মার্ট ফোন ও পিতার জমি বিক্রির ৭০ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। এরপর তারা শিমুল গাজীর হাত পা বেঁধে একটি বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে পার্শ্ববর্তী ভোন্দার বাগানে ফেলে রেখে যায়। রাত ১১টার দিকে স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবাজ আলীর স্ত্রী বাগানের ভিতর থেকে শিমুল গাজীর গোঙানীর শব্দ শুনে চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা এসে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কালিগঞ্জ উপাজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে শিমুল গাজী শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ইমরান হোসেন।
স্থানীয় সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য লাইলী খাতুন শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।