চলতি মৌসুমের পাট ধোয়া ও শুকানো নিয়ে বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন পাবনার চাটমোহরের পাটচাষীরা। পাটের ফলনও পাচ্ছেন আশানুরুপ। কিন্তু শ্রমিকদের চড়া মুজুরির কারণে লাভ কেমন হবে, সে চিন্তাও করছেন চাষীরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান রশীদ হোসাইনি বলছেন, এ বছর পাটের ফলন হচ্ছে ১০-১২ মণ হারে। ৯০ভাগ আবাদি জমির পাট এখন পর্যন্ত কাঁটা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেল,উপজেলার পাটচাষীদের আঙ্গিনায় শুকানো হচ্ছে পাট। আঙিনা ছাড়াও সড়কের ধারে রোদে দেওয়া হচ্ছে পাটখড়ি। নদী, খাল-বিলের পানিতে ছাড়ানো ও ধোয়া হচ্ছে পাট। এর আগে জমি থেকে পাট কেটে জাগ দেওয়া হয়েছিল পানিতে। বড়াল,গুমানী ও চিকনাই নদী ছাড়াও বিভিন্ন বিলে পাট জাগ দেওয়া ও ধোয়ার কাজ চলছে।
সোমবার (১৯ আগষ্ট) সকালে জাবরকোল এলাকায় দল বেঁধে পাটের আঁশ ছাড়াচ্ছিলেন নারী-পুরুষ। বড়াল নদীর পানিতে দাঁড়িয়ে (কোমড় পর্যন্ত পানিতে) কাজটি করছিলেন তারা। এ দলের একজন আ. রশিদ। বলছিলেন, পাটের আঁশ ছাড়ানো ও ধোয়ার জন্য দৈনিক পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ৫শ’ টাকা। দিনে এক বিঘা জমির পাটের আঁশ ছাড়ানো ও ধোয়া যায়। এক বিঘা জমিতে ১২-১৩শ’ হাতা (পাটের আঁটি) পাট হয়। এজন্য লোকের (শ্রমিক) প্রয়োজন পড়ে ৮-১০জন। তবে এটা নির্ভর করে ‘জাগ’র অবস্থার ও শ্রমিকর দক্ষতার উপর।
জগতলা গ্রামের পাটচাষী আ.জলিল বললেন, এ বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে খরচ হয়েছে সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে জমি চাষ,বীজের দাম, বীজ বপন, সার, কীটনাশক ও পরিচর্যার খরচ থাকে। আর পাট কাঁটা ও ধোয়ায় খরচ পড়ছে বিঘায় ৫-৭ হাজার টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল,ইতোমধ্যেই হাটে নতুন পাটের বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। চাটমোহর বড় হাট অমৃতকুন্ডা,গেল হাটবারে (রবিবার) প্রতি মণ পাট বিক্রি হয়েছে ১৭শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা দরে।
পাটচাষীদের হিসাব,এ বছর পাটের আবাদে প্রতি বিঘায় গড়ে খরচ হয়েছিল সবমিলিয়ে ১১ থেকে ১৩ হাজার টাকা। ফলন হচ্ছে গড়ে ৯ মণ হারে। আর ৯ মণ পাটের বর্তমাণ বাজার দর ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে,এ বছর পাটের আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ২০০হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে তোষা ও মেস্তা উভয় পাট রয়েছে।