নীলফামারীর সৈয়দপুরে সেবক সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড এর নামে গ্রাহকরা বিষদ অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে ওই সমিতি গরিব ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের স্বাবলম্বি করে গড়ে তোলার কাজ করবে। এ বিষয়টি সামনে নিয়ে তারা সমবায় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন পায়। কিন্তু নিবন্ধন নিয়ে তারা অসহায় মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে চড়া সুদে ঋণ দিয়ে অসহায় মানুষদের চুষে খাচ্ছে। গ্রাহকদের ঋণ দিয়ে দৈনিক কিস্তির টাকা সুদসহ আদায় করছেন। আর গ্রাহকদের জমানো টাকার উপর লাভ দেয়া হচ্ছে কয়েকমাস পর যৎসামান্য। সম্প্রতি ফরিদা পারভিন নামে এক গ্রাহককে ১২ লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে অগ্রিম লভ্যাংশ জমা নেয়া হয়। গত ২৭ জুলাই তারিখে ওই সমিতির পরিচালনা পর্ষদের সভায় ঋণ পাশ হয়েছে বলে তা জানানো হয় গ্রাহককে। সে মতে পরদিন ওই গ্রাহকের কাছ থেকে সরবরাহকৃত সঞ্চয় ও ঋণ পাশ বই জমা নেয়া হয়। এরপর দীর্ঘ সময় তালবাহানা করে মাঠকর্মীদ্বারা গ্রাহককে জানানো হয় ঋণ প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছে। এতে করে ওই গ্রাহক ব্যবসায়ীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। কারণ তিনি ওই অর্থ পেলে তা দিয়ে ঈদের বাজারে ব্যবসায়ীক কাজে লাগাতেন কিন্তু তিনি তা পারেননি। ফলে ব্যবসায়ীক ভাবে তিনি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ওই গ্রাহকের স্বামী বলেন ওই সমিতি কাগজে কলমে শতকরা ১৫ ভাগ সুদ নেয়ার কথা থাকলেও ভিতরে ভিতরে আদায় করা হচ্ছে এর দ্বিগুণ অর্থ। তিনি আরও বলেন ওই সমিতির পরিচালনা পর্ষদের সরকারি চাকরিজীবী রয়েছেন ২ জন। তারা হলেন সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক হাফিজুর রহমান খান ও তুলশিরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান খান। ব্যাংক কর্মকর্তা রয়েছেন ৩ জন, শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড ঠাকুরগাঁও শাখা ব্যবস্থাপক ও সমিতির সভাপতি জিএম কামরুল হাসান শামীম। সোস্যাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর শাখার সিনিয়র কর্মকর্তা মোজাহার হোসেন একই ব্যাংকের গোবিন্দগঞ্জ শাখা কর্মকর্তা আসাদ আলী। ওয়ালটন শো-রুমের ডিলার শাহিবুল ইসলাম লেবু ও ব্যবসায়ী মমিনুল ইসলাম মিঠু। প্রতারিত গ্রাহকরা বলেন এ প্রতিষ্ঠানটি কোন প্রকার জনহিতকরন কাজের সাথে জড়িত নয়। তাদের উদ্দেশ্য চড়া সুদে ঋণ দিয়ে আরও মানুষকে নিঃস্ব করে দেয়া। ক্ষুদ্র ঋণের নামে সমবায়ের নিয়ম-কানুন তোয়াক্কা না করে এরা নেমেছে সুদের ব্যবসায়। এ বিষয়ে কথা বলেন, সৈয়দপুর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান। তিনি জানান, ওই সমিতি যদি ৫ লাখ টাকার উর্ধ্বে ঋণ দিয়ে থাকেন তাহলে তা সমবায় অধিদপ্তরের অনুমতি লাগবে। এক্ষেত্রে তারা অনিয়ম করবেন। সরকার ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে দেশকে ও দেশের মানুষকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে চান। আর সমবায় সমিতি গুলো যদি তাদের ব্যবসায় পরিণত করেন তা হবে অন্যায়। তবে ওই সমিতি যদি এ ধরণের কোন কাজ করে থাকেন তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।