নজরদারির আওতায় আনা হচ্ছে দেশে কর্মরত মোবাইল অপারেটরদের কার্যক্রম। সেজন্য টেলিযোগাযোগের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন করতে যাচ্ছে। ওই সিস্টেম চালু হলে গ্রাহক সেবার মান ও মোবাইল অপারেটরদের আয়ের হিসাব বিটিআরসি সহজেই জানতে পারবে। পাশাপাশি অপারেটরদের কলড্রপের টাকাও ফেরত দেয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করা যাবে। মনিটরিং সিস্টেমের মাধ্যমে ডেটা ট্রাফিক পর্যবেক্ষণ, কল ডিটেইল রেকর্ড সংরক্ষণ হবে। তখন গ্রাহকরা প্রতারণার শিকার হবেন না। মনিটরিং সিস্টেম চালু করার জন্য ইতোমধ্যে বিটিআরসি ৫ প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিকভাবে মনোনীত করেছে। সেখান থেকে একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজটি দেয়া হবে। বিটিআরসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, টেলিকম মনিটরিং সিস্টেম (টিএমএস) স্থাপনের জন্য বিটিআরসি অনেক আগে থেকেই উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে এতোদিন তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। মনিটরিং সিস্টেম বাস্তবায়নের জন্য বিটিআরসি গতবছর দরপত্র আহ্বান করেছিল। তাতে দেশী-বিদেশী মোট ১৭টি দরপত্র জমা পড়ে। সেখান থেকে সটলিস্ট করে ৫টি কোম্পানিকে রাখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে যোগ্য ওই পাঁচ কোম্পানিকে বিটিআরসি চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে। তাদেরকে পরবর্তী কাগজপত্র জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তারা কাগজপত্র জমা দিলে আরো সটলিস্ট করে একটি কোম্পানিকে কাজটি দেয়া হবে। সূত্র জানায়, প্রযুক্তিগত এ ব্যবস্থায় মোবাইল ফোন অপারেটররা সেবা এবং আয় সম্পর্কিত হিসাব পর্যবেক্ষণের জন্য টিএমএস সংযোজনে কোম্পানি নিয়োগের প্রাথমিক ধাপ শেষ করেছে কমিশন। নিযুক্ত কোম্পানি কোন অপারেটরের নেটওয়ার্ক কেমন, কোন অপারেটরের কলড্রপ কত ইত্যাদি অন্যান্য বিষয় বিটিআরসির কাছে রিপোর্ট আকারে জমা দেবে। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে বিটিআরসি সংশ্লিষ্ট অপারেটরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। সীমাহীন কলড্রপে মোবাইল গ্রাহকরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিটিআরসি মোবাইল অপারেটরদের বার বার নির্দেশ দেয়ার পরও কলড্রপ কমছে না। সবশেষ আদালত কলড্রপের বিষয়ে নির্দেশ দিলেও ওই নির্দেশ অপারেটররা মানছে না। কলড্রপের ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে গতবছরের জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল। প্রায় এক বছর আগে আপারেটদের ওই নির্দেশ দেয় বিটিআরসি। কিন্তু অপারেটররা ক্রমাগত বিটিআরসির নির্দেশ উপেক্ষা করে যাচ্ছে। তারা গ্রাহকের কলড্রপের ক্ষতিপূরণের নির্দেশ বাস্তবায়ন করার বিষয়ে কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না। হিসাব অনুযায়ী প্রতিদিন ১ কোটি ৯০ লাখ মিনিট কলড্রপ হচ্ছে। আর অপারেটরা দিনে কলড্রপ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এদিকে কলড্রপ একটি বড় সমস্যা উল্লেখ করে ডাক, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও চরম বিরক্ত। তিনি কলড্রপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় কথা বলেছেন। অন্যদিকে এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ সেবা ও নিয়ন্ত্রণ কমিশনের সিনিয়র সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন জানান, শিগগিরই বিটিআরসি মনিটরিং সিস্টেম চালু হবে। কারণ বেশির ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এখন যে পাঁচ কোম্পানিকে প্রাথমিকভাবে মনোনীত করা হয়েছে- সেখান থেকেই একটি কোম্পানিকে কাজ দেয়া হবে। গ্রাহক স্বার্থেই বিষয়টি কমিশন দ্রুতই বাস্তবায়ন করবে।