যখন বিশ্বের ফুসফুস পুড়ে যাচ্ছে, তখন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। একের পর এক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ করছেন তিনি। যে কারণে উন্নয়নের মহাসড়কে অগ্রসর হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তারই সূত্র ধরে পরিবেশে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে উন্নয়ন-উত্তরণের জন্য। যাতে করে মানুষ সুস্থ্য থাকে। এমনই একটি চেষ্টার হাত ধরে High Performance Neutron Powder Differactometer সংগ্রহপূর্বক গবেষণা চুল্লীর রেডিয়াল বীমপোর্ট-২ এ স্থাপন করা হয়েছে। দু'টি গামা-রে স্পেক্ট্রোমেট্রি সিস্টেম সংগ্রহপূর্বক অ্যাক্টিভেশন এনালাইসিস গবেষণাগারে স্থাপন এবং একটি ডিজিটাল নিউট্রন রেডিওগ্রাফী যন্ত্র সংগ্রহপূর্বক গবেষণা চুল্লীর ট্যানজেন্সিয়াল বীমপোর্ট-এ স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। এসব যন্ত্রপাতি সংগ্রহের মাধ্যমে নিউট্রন স্ক্যাট্যারিং, নিউট্রন অ্যাক্টিভেশন এনালাইসিস ও নিউট্রন রেডিওগ্রাফী পরীক্ষণ সুবিধাদি বহুলাংশে সমৃদ্ধ ও আধুনিকায়ন করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে একাধিক উন্নত প্রযুক্তির গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিক সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষকবৃন্দ এমএসসি, এমফিল, পিএইচডি, প্রভৃতি উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনের জন্য এসকল গবেষণাগার ব্যবহার করছেন।
বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে নিবেদিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন জানতে পারলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ২৭% থাইরয়েড জনিত রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশের আয়োডিন ঘাটতি এলাকায় Congenital Hypothyroid এর প্রাদুর্ভাব বেশী হয়। প্রাথমিক জরিপে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশে ২৩০০ জনের মধ্যে একজন ঐ রোগে আক্রান্ত হয় যা বিশ্ব মানের ১:৪০০০ তুলনায় অনেক বেশী। প্রতি বছর ২৪০০ জন শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়। তখন তিনি নিজের বিশেষ চেষ্টায় ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড আল্ট্রাসাউন্ড INMU, Dhaka এর মত প্রতিষ্ঠান নির্মাণের ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সুবিধাদিসহ New born Screening Central Laboratory স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্প মেয়াদকালে মোট ২ লক্ষ নবজাতক শিশুর ঝপৎববহরহম করা হয়েছে। দেশের ১৪টি পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্রের নিকটবর্তী ৩৩টি থানা এ প্রকল্পের কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। বাংলাদেশে VLSI প্রযুক্তির জন্য সেন্টার অফ এক্সিলেন্স স্থাপনঃ এই প্রকল্পের আওতায় ভেরি লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেশন VLSI Design Laboratory স্থাপনের উদ্দেশ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ ঈষবধহ জড়ড়স প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে ISO-5 Class-100, ISO-6Class-1,000, ISO-7Class-10,000, ISO-8 Class-100,000 মানের কক্ষ/চেম্বার স্থাপন এবং একটি উবংরমহ খধনড়ৎধঃড়ৎু তৈরিসহ মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হয়েছে। এসকল যন্ত্রপাতি সরকারি/ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীগণ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এমএসসি/ এমফিল ও পিএইচডি গবেষণা কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করছেন। এর ফলে দেশে প্রথমবারের মত ডিজিটাল উচ্চ প্রযুক্তির গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়নের দ্বার উন্মোচন করা সম্ভব হয়েছে। ১ভেরি লার্জ স্কেল ইন্টিগ্রেশন ল্যাবরেটরী ইনস্টিটিউট অব ফুড এন্ড রেডিয়েশন বায়োলজি আইএফআরবি-এর অবকাঠামো উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধিকরণের মত অবিরত বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। শুধু এখানেই শেষ নয়; প্রকল্পের আওতায় খাদ্য ও খাদ্যজাত দ্রব্য হতে রোগ সৃষ্টিকারী জীবানু, ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ এবং পরজীবী পোকা দূরীকরণ, খাদ্যজাত দ্রব্য সংরক্ষণে অর্থনৈতিক/বাণিজ্যিক গ্রহনযোগ্যতা প্রদর্শন এবং ওষধ ও স্বাস্থ্যসেবা উপকরণের মানোন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে। বিএসটিআই ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মত নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে বিকিরণ প্রযুক্তি ব্যবহারকারীর নিকট পৌঁছানো এবং পেশাজীবি, নীতিনির্ধারক, ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিকিরণ প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে প্রচার এ প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। ভালো লাগে যখন জানতে পারি- কক্সাজার পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র ও একটি ঝঃবৎরষব ওহংবপঃ টহরঃ স্থাপন করা হয়েছে। নির্মিত হয়েছে- পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র, চট্রগ্রামে মাত্রাতিরিক্ত রোগীর চাপ থাকায় অনেক রোগী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কক্সাজার পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র ও একটি ঝঃবৎরষব ওহংবপঃ টহরঃ স্থাপনের ফলে বঞ্চিত রোগীদের তেজষ্ক্রিয় আইসোটোপ ব্যবহারের মাধ্যমে থাইরয়েড, কিডনী, লিভার ও হাড়ের ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ধরনের কঠিন ও জটিল রোগ নির্ণয় করা ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়াও এই কেন্দ্রের মাধ্যমে কক্সবাজারসহ পার্শ্ববতী জেলাসমুহের দরিদ্র জনগোষ্টিকে উন্নত পরমাণু চিকিৎসা সেবার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। অপরদিকে, কক্সবাজারে একটি ঝঃবৎরষব ওহংপবঃ ঞবপযহরয়ঁব টহরঃ স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সোনাদিয়া দ্বীপসহ অন্যান্য এলাকায় শুষ্ক মাছের কীট দমন করা যাবে। পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র বগুড়া, বরিশাল, খুলনা, ময়মনসিংহ ও রংপুর এর গবেষণা ও সেবা সম্প্রসারণ ও টিসি-৯৯কীট উৎপাদনঃ পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র বগুড়া, বরিশাল, খুলনা, ময়মনসিংহ ও রংপুর এর গবেষণা ও সেবামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধিকল্পে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। বগুড়ায় নির্মাণাধীন হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে গবেষণা ও সেবা কার্যক্রম পরিচালনার্থে আবশ্যক ঞঈ-৯৯ আইসোটোপ কীট উৎপাদনের লক্ষ্যে পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সাভার-এ টিসি-৯৯কীট ল্যাবরেটরী স্থাপন করা হয়েছে।
এমন উত্তরণের অসংখ্য ঘটনা রয়েছে বর্তমান সরকারের সময়। যদিও জলবায়ুর পরিবর্তন বর্তমান বিশ্বে একটি মারাত্মক হুমকিরূপে আবির্ভূত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশসহ অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো। উন্নত বিশ্বের শিল্পকারখানার কারণে বিশ্বজুড়ে বেড়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রা। গ্রিন হাউস প্রতিক্রিয়ায় বাতাসে সিসার মাত্রা বেড়ে যাওয়া, সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, ভূগর্ভস্থ পানির লেভেল ক্রমশ নিচে নেমে যাওয়াসহ ওজন স্তর ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে বিশ্বজুড়েই দুর্যোগের মাত্রা ও পরিমাণ বাড়ছে। ভূমিকম্প, ভূমিধস, খরা-বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হচ্ছে মানুষ। উন্নত বিশ্বের শিল্পমুখীনতার প্রভাবে এসব দুর্যোগের আশঙ্কা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বিষয়টি ব্যাপক গুরুত্ব পায়। পরপর কয়েকটি জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের, আরো স্পষ্ট করে বললে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এসব সম্মেলনে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষুরধার যুক্তি উত্থাপন ও যোগ্য নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনগুলোতে উন্নত দেশগুলো, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ইতালি ও ফ্রান্সসহ বেশ কয়েকটি দেশ পরিবেশের সুরক্ষায় তহবিল গঠনে সম্মত হয়। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়, এই তহবিলের বড় অংশই ব্যয় হবে বাংলাদেশসহ ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে।
বিশ্বজুড়ে পরিবেশ সুরক্ষায় বাংলাদেশের ভূমিকা প্রশংসিত হচ্ছে। একই সঙ্গে এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ায় আবারো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলার উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ’ পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। চলতি বছর ‘পলিসি লিডারশিপ’ ক্যাটাগরিতে জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক এই সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য শেখ হাসিনার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি ইউএনইপি জানায়, প্রতিবেশগতভাবে ‘নাজুক অবস্থায় থাকা’ বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ‘সামগ্রিক পদক্ষেপের স্বীকৃতি’ হচ্ছে এই পুরস্কার। পরিবেশ নিয়ে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৪ সাল থেকে প্রতি বছর চারটি ক্যাটাগরিতে ‘চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ’ পুরস্কার দিয়ে আসছে ইউএনইপি। চলতি বছর শেখ হাসিনা ছাড়াও ‘ইন্সপিরেশন এন্ড একশন’ ক্যাটাগরিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বন্যপ্রাণী রক্ষাকর্মীদের দল ব্ল্যুাক মামবা এপিইউ, ‘সায়েন্স এন্ড ইনোভেশন’ ক্যাটাগরিতে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি, ‘এন্টারপ্রেনারিয়াল ভিশন’ ক্যাটাগরিতে ব্রাজিলের প্রসাধনী প্রস্তুতকারক কোম্পানি নেটুরা এ পুরস্কার পাচ্ছে।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশের প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের আন্তর্জাতিক পুরস্কার বা স্বীকৃত আমাদের জন্য আনন্দের। আমাদের জানা আছে, গেদ্বাবাল ভিলেজ কনসেপ্টের জন্য পুরো পৃথিবী এখন প্রায় এক ছাতার নিচে অবস্থান করছে। বিশেষ করে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও পরিবেশ ইস্যুতে এখন প্রায় সারাবিশ্ব এক সুতোয় গাঁথা। অর্থনীতি, বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্বের সব দেশগুলো কমবেশি এক সুতোয় গাঁথা আগে থেকেই। গত প্রায় দুই যুগে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও পরিবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মতো একটি রাষ্ট্র বা এর প্রধানমন্ত্রীর এরকম একটি অর্জন আমাদের সামনে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা জোগায়।
নিজের বা সরকারের কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুরস্কার প্রাপ্তি নতুন কিছু নয়। এর আগেও তিনি একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১০ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যের (এমডিজি) অংশ হিসেবে শিশুমৃত্যু হার কমানোয় সাফল্যের জন্য জাতিসংঘের পুরস্কার পেয়েছিলেন। ১৯৯৯ সালে ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এফএও কর্তৃক ‘সেরেস পদক’ লাভ করেন তিনি। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো শেখ হাসিনাকে ১৯৯৮ সালে ‘ফেলিক্স হুফে বইনি’ শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে। আমাদের মহান শহীদ দিবস বা একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে আজ সারা বিশ্বে যে উদ্দীপনার সঙ্গে পালিত হচ্ছে তার পেছনেও শেখ হাসিনার অবদান উল্লেখ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন ইউনিভার্সিটি, জাপানের ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ বিশ্বের একাধিক খ্যাতিসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনাকে ডক্টর অব ল’জ উপাধি প্রদান করেছে। ২০০৫ সালে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শান্তির স্বপক্ষে অবদান রাখার জন্য শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি অব রাশিয়া। এরকম অসংখ্য অর্জন রয়েছে শেখ হাসিনার, যা আমাদের গৌরবান্বিত করে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো একজন নেতা বা প্রধানমন্ত্রীর এই অর্জন পুরো বাংলাদেশকেই সম্মানিত করে। এই বিশ্বাস দলমত নির্বিশেষে রাজনৈতিক মহলে সাধুবাদ পেলে তা আরো বেশি আনন্দদায়ক হতো। একটি দেশের সরকার প্রধান যখন কোনো আন্তর্জাতিক পুরস্কার পান তখন সেটি পুরো দেশের। সে কারণে সেই অর্জনের আনন্দ সবাই ভাগাভাগি করে নিলে পুরো দেশই উপকৃত হয়। আন্তর্জাতিক মহলও আমাদের রাজনৈতিক ঐক্যে আপ্লুত হতে পারে। কিন্তু দুঃখজনক যে, আমাদের এ ধরনের অর্জনে সবাই ভাগাভাগি করে নেয়ার সংস্কৃতি এখনো গড়ে ওঠেনি। কিন্তু শেখ হাসিনা তার অর্জনকে জনগণের জন্য বরাবরই উৎসর্গ করে প্রমাণ করেন তার জীবনে দেশের জনগণের অবস্থান কোন পর্যায়ে। জনগণের প্রতি তার এই মমত্বকে আমরা যদি সর্বাত্মকভাবে সাধুবাদ জানাতে পারতাম তাহলে দেশের জন্য নিবেদিত প্রধানমন্ত্রী যেমন উৎসাহ পেতেন তেমনি তার কাজের গতিও বাড়তো।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ ও পদক্ষেপের কোনো অভাব নেই। বাসযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিতকরণে তিনি যেমন দেশের অভ্যন্তরে নানা ভূমিকা রাখছেন তেমনি জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে সব সময় সক্রিয়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন গত সরকারের আমলে দেশে জলবায়ু ট্রাস্ট গঠিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিশ্বে জলবায়ু বিষয়ক বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের নেতৃত্বদান শেখ হাসিনার বিচক্ষণতার প্রমাণ দেয়।
পরিবেশ রক্ষায়ও শেখ হাসিনার পদক্ষেপের কথা সর্বজনবিদিত। সরকারে থাকুন আর না থাকুন, বৃক্ষ রোপণে শেখ হাসিনার যে উৎসাহ এবং বৃক্ষ নিধন রোধে যে পদক্ষেপ তা আশাব্যঞ্জক। প্রতিটি নাগরিকের বাড়ি ও আশপাশে একটি করে বনজ, ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষ রোপণের যে আন্দোলন আজ দৃশ্যমান তার শুরুটা কিন্তু শেখ হাসিনাই করেছেন। বৃক্ষমেলা ও বৃক্ষরোপণ সপ্তাহে গাছের প্রতি মানুষের যে মমত্ব দেখা যায়, তার জন্যও প্রশংসার দাবি রাখেন শেখ হাসিনা। শুধু কি বৃক্ষ বা গাছ- আজ দেশে খাল-বিল, নদী-নালা, জলাধার সংরক্ষণে যে আন্দোলন চলছে তা এগিয়ে নেয়ার জন্য কমবেশি কৃতিত্ব কিন্তু শেখ হাসিনার রয়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীর পানি আজ যতটা প্রাণ ফিরে পেয়েছে তার জন্যও শেখ হাসিনাকে সাধুবাদ দিতে হয়। দেশব্যাপী নদী বা খাল উদ্ধারে বা জলাধার নিশ্চিতকরণে শেখ হাসিনাই সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে কঠোর নির্দেশ দিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সচেষ্ট রয়েছেন। সচেষ্ট থাকতে হবে আমাদেরকেও। আমরা সত্যিকারের সোনার বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য নিবেদিত থাকি চলুন নিজের জন্য-সবার জন্য নিরন্তর। এবার আসি বিশ্বকথায়। যে বিশ্বের ফুসফুস আমাজন। সে বিশ্বে বসে বড় নিরুপায় হয়ে কেবল লিখতে হচ্ছে- যখন ইউরোপ ও আমেরিকার শহরগুলোতে দাবানল ছড়িয়ে পড়ে, তা ক্ষতিগ্রস্থ করে পুরো পৃথিবীকে। স্যাটেলাইট ছবি গবেষণা করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ স্পেস রিসার্চ (ইমপে) দেখতে পেয়েছে, গত জানুয়ারি মাস থেকে অগাস্ট মাস পর্যন্ত অ্যামাজন বনে ৭২,৮০০টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের ১৯ অগাস্ট পুরো সাও পাওলো নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই অন্ধকারে ছেয়ে যায়। ধোঁয়ার প্রকোপে বিশ্বের অন্যতম বড় শহর ব্রাজিলের সাও পাওলোকে ঢেকে দিয়েছিল। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সাও পাওলো আগেভাগে অন্ধকার হয়ে যাওয়ার পেছনে দক্ষিণ মেরুর ঠান্ডা হাওয়া ও অ্যামাজনে লাগা বুনো আগুনের ধোঁয়া ভূমিকা রেখেছে। পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত আমাজন বনের আগুনকে আমি আন্তর্জাতিক সংকট মনে করি। মনে করি- আমাদের ঘর পুড়ছে, আমাদের আগামী পুড়ছে। যা পুরো বিশ্বের অক্সিজেনের ২০ শতাংশ যোগান দেয়। আগামী জি ৭ সম্মেলনে তিনি এটিকে প্রথম এজেন্ডা হিসেবে উল্লেখ করাটা এখন সময়ের দাবী। পাশাপাশি ষড়যন্ত্রগুলোকে কঠোর হাতে দমনেরও উদ্যেগ নিতে হবে।
এই যখন বিশ্ব পরিবেশের অবস্থা; তখন ভাবতে হবে বিশ্ব-বাংলাদেশ-পরিবেশ সবকিছু নিয়ে আপনাকে-আমাকে-সবাইকে। তা নাা হলে ক্ষতি কেবল আমার একার বা আপনার নয়; সবার হবে...