সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় তানভীর আহমেদ নামে (বয়স পাঁচ মাস) এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সন্ধ্যায় শিশুটি মারা যায়।
শিশুটির পরিবারের সদস্যরা জানান, নিউমোনিয়া আক্রান্ত তানভীরকে মঙ্গলবার সকালে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে শিশুটির পরিবার ডা. এনামুল হককে প্রাইভেটে দেখালে তিনি ওই শিশুকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানোর নির্দেশনা দেন। হাসপাতালে ভর্তির পর ডাক্তাররা চিকিৎসা দিলেও শিশুটির অবস্থা অবনতি হতে থাকে। পরিবারের অভিযোগ তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরে শিশুকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে রেফার করা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় শিশুটিকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালেই শিশুটি মারা যায়।
শিশুটির বাবা শফিনূর মিয়া বলেন, আমি মঙ্গলবার ডা. এনামুল হকের কাছে আমার ছেলেকে দেখাই। তিনি আমার ছেলের নিউমোনিয়া হয়েছে তাই তাকে হাসপাতালের ভর্তি করানোর কথা বলেন। কিন্তু আমার ছেলেকে ভুল চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নার্সরা ডা. এনামুল হকের প্রেসক্রিপশন না দেখে ডা. সামিউল হকের প্রেসক্রিপশন দেখে অন্য শিশুর চিকিৎসা আমার ছেলেকে দেন এবং তারা ডা. সামিউল হকের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী আমার ছেলেকে সিলেট রেফার করেন। আমার ছেলেকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শিশুটির মা তারাবুন বেগম বলেন, আমার বাচ্চাটা মঙ্গলবার রাত থেকেই কষ্ট করছিল। আমি মাঝরাতে নার্সকে অনেকবার ডাক দিলেও কর্তব্যরত নার্স আমাকে খুব বাজে ভাষায় গালিগালাজ করেন। তিনি কিছু করতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। কিন্তু আজকে তাদের কারণে আমার পাঁচমাস বয়সী শিশু মারা গেল। আমি আল্লাহর কাছে এর বিচার দিলাম।
এঘটনায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে বিক্ষোভ করে নিহত শিশুর স্বজনরা। এ সময় তারা চিকিৎসক ও নার্সসহ এই কা-ে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
অভিযোগের ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাশ বলেন, আমরা এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক ওই সময়ের দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সকে সাময়িক বরখাস্ত করেছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছি। ওই ঘটনায় ডা. বিশ্বজিৎ গোলদারকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের তদন্তের পর চুরান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।