দেশে মাধ্যমিক শিক্ষার সব উন্নয়ন প্রকল্প এখন এক ছাতার নিচে আনা হচ্ছে। ‘সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি)’ নামে একটি বৃহৎ কর্মসূচির মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষার সব প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। সম্প্রতি ১৩ হাজার ৭৬৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার নতুন এই প্রোগ্রামের উদ্বোধন করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আগে একই কাজ একাধিক প্রকল্প থেকে করা হতো। আবার এমন অনেক কাজ আছে যা কোনো প্রকল্পেই অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ফলে সমন্বয়হীনতা লেগেই থাকত। এতে করে মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে নানা সমস্যা তৈরি হতো। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ দীর্ঘদিন ধরেই সব প্রকল্প একটি প্রগ্রামের আওতায় আনার চেষ্টা করছিল। এসইডিপির মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রম সমন্বয় সহজ ও অধিকতর কার্যকর হবে। পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রগ্রামটি ২০১৮ থেকে ২০২২ অর্থবছর মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। এ কর্মসূচির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ২০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ১৬ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার। আর ৫০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নের পরিমাণ হবে ২২৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বে মানসম্মত শিক্ষা সবচেয়ে অগ্রাধিকার ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এসইডিপি শিক্ষার মানোন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখবে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা পুরোপুরি পুনর্গঠন করা হচ্ছে। কারিগরি শিক্ষায় ২০২০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ এনরোলমেন্ট নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ পুনর্গঠন কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। ২০২১ সালের মধ্যে সব প্রতিষ্ঠানকে পুরোপুরি অটোমেশনের আওতায় আনা একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এসইডিপির আওতায় ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ, ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি, ডিজিটাল ল্যাব ও লাইব্রেরি তৈরি হবে। বিদ্যালয়গুলোর প্রতিদিনের কার্যক্রম অনলাইনে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা চালু হবে। এসইডিপি প্রগ্রামের আওতায় শিখন-শেখানো পদ্ধতির উন্নয়ন, শিক্ষকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, কারিকুলাম উন্নয়ন, ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, মাধ্যমিক স্তরে উন্নত শিক্ষক ব্যবস্থাপনা, নিয়োগ ও তত্ত্বাবধান, বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে কারিকুলামের সামঞ্জস্য বিধান, শিক্ষকতার পেশাগত মানোন্নয়ন এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানা যায়।