লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে শিক্ষকের পিটুনি খেয়ে ৩ দিন ধরে অচেতন থাকার পর এখন কথা বলতে শুরু করেছে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তিরত রামগতির আলেকজান্ডার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনির শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান। এ ঘটনায় থানায় ২ ঘন্টা আটক থেকে মুক্ত হয়ে আলেকজান্ডার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক বদরুল আলম বলছেন,শিক্ষার্থীকে ঘিরে যা হয়েছে। মিটে গেছে। শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান তার ছাত্র উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন,চিকিৎসায় খরচ যা হবে তা তিনি মিটিয়ে দিবেন। বিষয়টি শিক্ষার্থীর মা রাবেয়া বেগম মেনে নিয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান,শিক্ষাথীর চিকিৎসা খরচ দিতে রাজি হওয়ায় ন্যায় বিচার পাওয়ার পথ থেকে সড়ে দাড়িয়েছেন রাকিবুল হাসানের মা। টাকার জোরে পরাজিত শিশুর যন্ত্রণা হলেও এ ঘটনার সুষ্টু বিচার না হওয়া পর্যন্ত প্রয়োজনে আন্দোলন করে শ্রেনি পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা করে রাকিবুলের সহপাঠি বন্দুরা। ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: মঈনুল সরকার জানিয়েছেন, ৪ দিন ধরে রাকিবুলের চিকিৎসা চলছে।তার অবস্থা এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। সামন্য দু’একটি কথা বলতে পারে। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে ২ থেকে তিন মাস সময় লাগবে।
জানাগেছে, এর আগে ২৫ আগস্ট আলেকজান্ডার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসানকে বেদম মারধরে করে বেঞ্চের নিচে মাথা দিয়ে রাখায়। এতে অচেতন হয়ে পড়ে সে। সেখানে জ্ঞান না ফেরায় তাকে নোয়াখালীর পরে ঢাকায় নেওয়া হয়। ঢাকায় প্রথমে ইবনে সিনা হাসপাতালে পরে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তির পর জ্ঞান ফিরে পেলেও পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ায় এখনো চিকিৎসা থাকতে হচ্ছে। ঘটনার পর বিচার চেয়ে তার মা রাবেয়া বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও),উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা,স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও রামগতি উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে আবেদনও করেন।
শিক্ষার্থীর মা রাবেয়া বেগম জানান,তার সন্তান এখন তিন দিন অচেতন থাকার পর কথা বলতে পারছে। এটাই তিনি খুশী। এর মধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক বদরুল আলমকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। মামলা না করায় ও তার ছেলের চিকিৎসা খরচ দিতে রাজি হওয়ায় সমঝোতায় হয় তাদের। তবে এখনো পর্যন্ত কোন তিনি শিক্ষকের নিকট থেকে কোন টাকা পয়সা গ্রহন করেনি বলে জানান ।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলছেন, থানায় সমাধান যাই হোক নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীকে ঘিরে ঘটনায় ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারের পর থেকে আগামী তিন দিনের মধ্যে ওই শিক্ষককে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানার,এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। স্কুলছাত্র রাকিবুল হাসান মা থানায় জিডি করেছেন মামলা করতে রাজি হননি তিনি। এ কারনে শিক্ষককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রফিকুল জানান,ঘটনাটি তদন্তের জন্য শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।