নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের একজন শিক্ষক ও শিক্ষিকার আপত্তিকর চলাফেরার প্রতিবাদ করায় অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার(৫ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রভাবশালী এক শিক্ষিকা নেপথ্যে থেকে এলাকাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করে। উপজেলা পরিষদের সামনে লক্ষীপাশা-নড়াইল সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতমাসে অনুষ্ঠিত লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক কাউন্সিলের সভায় কয়েকজন শিক্ষক প্রকাশ্যে কলেজের একজন শিক্ষক ও শিক্ষিকার আপত্তিকর চলাফেরা নিয়ে কথা তোলেন। সভায় বলা হয় ওই শিক্ষক ও শিক্ষিকার রাতবেয়ালে দৃষ্টিকটু চলাফেরায় মানুষ নানা খারাপ মন্তব্য করছে। ফলে কলেজের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। কলেজের অধ্যক্ষ তখন অভিযুক্ত ওই শিক্ষক(অদ্য অক্ষর- বি) এবং শিক্ষিকা(অদ্য অক্ষর- শ)কে সতর্ক করে বলেন পরবর্তীতে আপনাদের চলাফেরা নিয়ে কথা উঠলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরপর থেকেই অধ্যক্ষসহ অভিযোগকারী কয়েকজন শিক্ষকের উপর ক্ষেপে যান প্রভাবশালী ওই শিক্ষিকা। ওই শিক্ষিকার পরিকল্পনা ও অর্থায়নে শহরে অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে কথিত দুর্ণীতির অভিযোগ এনে রাতারাতি পোস্টারিং করা হয়। পরবর্তীতে ওই শিক্ষিকার পরিকল্পনা ও অর্থায়নে এলাকাবাসীর ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় বৃহস্পতিবার।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পৌর কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত হোসেন বিশ^াস, বাবন শেখ, সরদার আবদুল হাই, সাহেদ মাহমুদ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, অধ্যক্ষ তরফদার কামরুল ইসলাম গত ১৩ বছওে কলেজে লাখ লাখ টাকার দুর্নীতি করেছেন। অবিলম্বে অধ্যক্ষকে অপসারণ করা হোক।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে কলেজের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, বি স্যার ও সো ম্যাডাম যেভাবে বেপরোয়া চলাফেরা করেন তাতে কলেজের মানসম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। প্রতিবাদ করায় ওই মহলটি অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে লেগেছে।
কলেজের উপাধ্যক্ষ(চলতি দায়িত্ব) শেখ ফারুক আহমদ সার্বিক বিষয়ে বলেন, অধ্যক্ষ দুর্নীতি বা ক্ষমতার অপব্যবহার করলে সেটা বিচার করা বা দেখার দায়িত্ব পরিচালনা পর্ষদের। অধ্যক্ষর নামে পোষ্টারিং, মানববন্ধন করায় কলেজের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমি চাই কলেজের লেখাপড়ার মান উন্নত হোক,ভাবমূর্তি উজ¦ল হোক।
অধ্যক্ষ তরফদার কামরুল ইসলাম ছুটিতে থাকায় ফোনে বলেন, আমি শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। দুর্নীতি অনিয়ম প্রশ্রয় দেই না। একজন শিক্ষক ও শিক্ষিকার আপত্তিকর চলাফেরা নিয়ে শিক্ষক কাউন্সিলের সভায় কথা উঠার পর থেকে মহলটি আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমি দুর্নীতি-অনিয়ম করলে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ডিসি স্যারের নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদ রয়েছে। তারা বিচার করবেন। কিন্তু পোষ্টারিং ও মানববন্ধন করে কলেজের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে।
কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জেলা প্রশাসক(ডিসি) আনজুমান আরা ফোনে এ বিষয়ে বলেন, কোন লিখিত অভিযোগ আমি পাইনি। মানবন্ধন ও পোষ্টারিং এর কথা শুনেছি। বিষয়টি আমি দেখবো।