বন্যা ও জলাবদ্ধতার কারণে যেসব এলাকায় আমন ফসলের বীজতলা ও সবজি চাষ সম্ভব হয় না,সে সব এলাকায় পানিতে ভাসমান পদ্ধতিতে সার কীটনাশক ছাড়াই আমনের বীজ তলা ও শাঁক সবজি চাষ করা সম্ভব হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় প্রথমবারের মত উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামে ভাসমান ২৪টি বেডে আদনকালীন আমন ধানের বীজতলা করা হয়েছে। বন্যার পানি নামার সাথে সাথেই ভাসমান বীজতলা চারা জমিতে রোপন করা হচ্ছে।এতে করে আশার আলো দেখছেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা। জনপ্রিয় পাচ্ছে ভাসমান বীজতলা তৈরি ও সবজি চাষ।
হাওর অঞ্চলের প্রবণ এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন কৌশল হিসেবে বর্ষার পানির ওপর ভাসমান বেডে সবজি চাষ সুফল বয়ে আনছে।এই প্রকল্পটিতে গত বছরে পরীক্ষামূলকভাবে নাসিরনগরে ভাসমান বেডে সবজি চাষ করে সুফল লাভ করেন অনেক কৃষক। এবছরও উপজেলা সদরের কুলিকুন্ডা গ্রামে বর্ষার পানিতে খালে ও মজাপুকুরে ৮ জন চাষি ভাসমান বেডে সবজি চাষ করেছেন। কুলিকুন্ডা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,কৃষকরা খাল,ডোবা নালায় ও মজাপুকুরে কচুরিপানায় বেড তৈরি করে তার ওপর চাষ করছে পুঁইশাক,মিষ্টি কুমড়া,লাল শাক,পালংশাক,কলমি শাক,ঢেঁড়শ। একদিকে তাদের ব্যাপক পুষ্টির চাহিদা মিটাতে সক্ষম হচ্ছে,অন্যদিকে আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন।
ভাসমান সবজি চাষ সর্ম্পকে কৃষক আবদুস ছাত্তার জানান,কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সবজি করে সাফল্য পাচ্ছি। আমরা ভাসমান সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছি। নিজেরা সার তৈরি করছি। একারণে খরচ কমে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আনিছুজ্জামান বলেন এবারই প্রথম ২৪টি ভাসমান বেডে আপদকালীন আমনের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। প্রদর্শনীর জন্য ৮টি ভাসমান বেড়ে শাঁক সবজি চাষ করা হয়েছে। ভাসমান বেডে রাসায়নিক সার ও বিষমুক্ত সম্পূর্ণরুপে অর্গানিক সবজি উৎপাদন করা সম্ভব।তাই ভাসমান বেডে বীজতলা চারা ও সবজি চাষ পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ইউনিয়নেও ছড়িয়ে দেয়া হবে।
ভাসমান বীজতলা ও সবজি চাষ পরিদর্শনে আসা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আজগর আলী জানান,চাষাবাদে কৃষককে নানাভাবে সহায়তা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। মাটির পরির্বতে পানিতে গাছের প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন সরবরাহ করে সবজি উৎপাদনের এটি একটি কৌশল। এ পদ্ধতিতে সারা বছরই সবজি উৎপাদন করা সম্ভব।