নেত্রকোনার কলমাকান্দায় কয়েক শত লাইসেন্স বিহীন রিক্সা অটোরিক্সা অবৈধভাবে চলাচল করছে। আর এসব রিক্সা অটোরিক্সার চালকদের অধিকাংশই শিশু-কিশোর। অটোরিক্সার চালকদের নেই ফিটনেস, রোড পারমিট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স। যে কারণে প্রতিনিয়ত এসব অদক্ষ চালকদের কারণে ঘটছে নানা ঘটনা দূর্ঘটনা। এ ছাড়া এসব অদক্ষ চালকদের অনেকেরই প্রতিষ্ঠানিক ও ব্যবহারিক শিক্ষা না থাকায় যাত্রীদের সাথে চালকদের ঝগড়া-বিবাদ প্রায়ই লেগে থাকে। অদক্ষ রিক্সা চালকদের অনেকেই জোর করে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। কলমাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে রিক্সা চালকদের কোন লাইসেন্স প্রদান না করায় উপজেলায় রিক্সা চালনায় শিশু চালকদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক রিক্সা চালকদের ভাড়া নির্ধারণ কোন চার্ট কিংবা বোর্ড টানানো না থাকায় এসব রিক্সা চালকদের বেপরোয়া চলাচল ও যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণ বলে জানিয়েছেন অনেকেই। উপজেলা সদরের রিক্সা চালকেরা ১০ টাকার ভাড়ার জায়গায় যে কোন যাত্রীর কাছ থেকে ২০-৩০ টাকা আদায় করে থাকে। যাত্রীরা চালকদের কথামত ভাড়া দিতে না পারলে অনেক রিক্সা চালকেরা যাত্রীদের নানা রকম দূর্ব্যবহার করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। খেয়াল করলে দেখা যায়, এইসব রিক্সা চালকদের নেই কোন অনুমোদন, নেই ফিটনেস, নেই লাইসেন্স, নেই রোড পারমিট। এতে করে বাড়ছে নানা ধরনের সমস্যা। তারা উপজেলা সদরের বিভিন্ন অলি-গলিতে এলোমেলো ভাবে রিক্সা রেখে দেয়। এতে করে পথচারীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এসব রিক্সার নেই কোন নির্ধারিত স্ট্যান্ড। রিক্সা যাত্রীদের অভিযোগ, ছোট শিশু কিশোর’রা রিক্সা চালানোর ক্ষেত্রে রাস্তার এ পাশ ও পাশ, ডান-বাম, সাইট-সামনা কিছুই চিনেনা তবুও তারা রিক্সা চালক। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি অসাধু রিক্সা মালিক চক্র রাতের বেলা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ দিয়ে রিক্সার ব্যাটারীগুলো চার্জ করে অর্থের লোভ দেখিয়ে সু-কৌশলে এসব শিশু-কিশোরদেরকে রিক্সা চালাতে বাধ্য করে। উপজেলার সচেতন মহলের দাবী প্রশাসনের কঠোর নজর দারী না থাকলে এসব শিশু চালক আর অবৈধ রিক্সার জঞ্জাল দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে। আর সরকার হারাতে থাকবে মোটা অংকের রাজস্ব। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কলমাকান্দা উপজেলার শাখার সভাপতি আবদুর রশিদ আকন্দ বলেন, উপজেলার সর্বত্র লাইসেন্সবিহীন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছোট ছোট বাচ্চারা ঐ সব রিক্সা/অটোরিক্সা চালাচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ বিধি মোতাবেক লাইসেন্স প্রদানসহ ভাড়ার তালিকা দৃষ্টিগোচর স্থানে ঝুলিয়ে দেওয়ার বিধান থাকলেও তা পালন করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে বার বার প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও বাস্তবে কিছুই হচ্ছে না। এ প্রসংগে আলাপকালে কলমাকান্দা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মৌলা বলেন, আমরা লাইসেন্স গ্রহণের জন্য বার বার প্রচারণা ও মাইকিং করা হলেও কেহই লাইসেন্স গ্রহণ করছে না। ভাড়ার তালিকা অতি শীঘ্র দৃষ্টিগোচর স্থানে টানিয়ে দেয়া হবে। এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে সহসা অভিযান পরিচালনা করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।