গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ভাওয়াল চাঁদপুর ইউনিয়নের জালিসা গ্রামেরর মোক্তাজুল ইসলাম সেলিম তার বসত বাড়ির পার্শ্বে মুরগির খামারের বিষ্ঠা (লিটার) সংরক্ষন না করে দীর্ঘদিন যাবত প্রতিবেশীদের প্রায় ১০/১২ বিঘা ফসলি জমিতে ফেলে নষ্ট করে ফেলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রাণিসম্পদ অফিসের নিয়ম-নীতি অনুসরন না করে নিবন্ধন ছাড়াই ওই খামরি একটি পোলট্রি খামারীতে ৪হাজার লেয়ার মুরগি পালন করে আসছে। ফলে দুর্গন্ধে এলাকার বাতাস দূষিত হয়ে পরিবেশ নষ্ট এবং এলাকাবাসী নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ভূক্তভোগি এলাকাবাসী প্রতিকার চেয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের নিকট গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
জানাযায়, উপজেলার ভাওয়াল চাঁদপুর ইউনিয়নের জালিসা গ্রামের মৃত আবদুল লতিফ পালোয়ানের পুত্র মোঃ মোক্তাজুল ইসলাম সেলিম তার খামারের মুরগির বিষ্ঠা (লিটার) ও মরা মুরগি নির্ধারিত জায়গায় না ফেলে দীর্ঘদিন যাবত প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক প্রতিবেশীদের জমিতে উম্মুক্ত ফেলে বিস্তর ফসলি জমি নষ্ট করছে। লিটারের দুর্গন্ধে আশপাশের অনেকেই নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্যস্থানে ভাড়া বাড়িতে থাকছেন বলেও জানা গেছে। সামান্য বৃষ্টি ও রোদের তাপে লিটারের দুর্গন্ধ এত ভয়াবহ হয়, যার ফলে নারী, শিশুসহ ও এলাকার লোকজন স্বাস্থ্যঝুকিতে রয়েছেন। এমনকি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে তাদের লেখা পড়ায় বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী প্রতিবেশী মোঃ মোশারফ হোসেন, মোতাহার হোসেন, রাশিদুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম পালোয়ান, রোকেয়া আক্তার, রেজিয়া বেগম, আয়েশা আক্তার, খাদিজা বেগম, বাবুল দর্জী, নাজমুল দর্জী, মনির হোসেন, ওবায়দুল্লাহ, জাহাঙ্গীর দর্জী, রোমান মিয়া, মোমেন দর্জী, আহাম্মদ আলী, সাইফুল ইসলামসহ এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, ওই গ্রামের মোক্তাজুল ইসলাম সেলিম ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে জোর পূর্বকভাবে ৪ হাজার মুরগির লিটার ও বর্জ্য ফেলে তাদের ফসলি জমি (কৃষি জমি) চাষাবাদের অনুপোযুগি করে ফেলেছে। তারা প্রায় ১০ বছর যাবত এসব জমিতে চাষাবাদ করতে পারছেন না। লিটারের ময়লা থেকে বিভিন্ন পোকা-মাকড় জন্মে ও খামরের দূর্গন্ধে বাতাস দূষিত হয়ে এলাকার পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। যার ফলে গ্রামের ছেলে মেয়েরা জ¦র, আমাশয়, টাইফয়েড, জন্ডিসসহ বিভিন্নরোগে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে অনেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বিশেষ করে সম্প্রতি দেশব্যাপী ডেঙ্গু জ¦রের ভাইরাসের ফলে গ্রামবাসী আতংকগ্রস্থ হয়ে আবেদন নিবেদন করেও পাষাণ খামারীর মনগলাতে পারছেন না।
এছাড়া খামারীকে তাদের জমিতে লিটার ফেলতে নিষেধ করলে হত্যার-হুমকিসহ অশ্লীল গালিগালাজ করে তেড়ে আসে সে। পরে বিষয়টি তারা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, সদস্য ইসহাক সরকার ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের জানালে বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বিচার সালিশে বসলেও কোনো তোয়াক্কা করছে না ওই খামারি সেলিম পালোয়ান। পালোয়ান তার পালোয়ানী দেখিয়েই যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোক্তাজুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. আলহাজ¦ মোঃ আমানত হোসেন খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমাকে দ্রুত মানুষের জমি থেকে ময়লা সরিয়ে নিতে বলেছেন। আমার ভূল হয়েছে আগেই ময়লা সরিয়ে নেওয়া দরকার ছিল। কিছুদিনের মধ্যে ময়লা সরিয়ে নিবো’।
এ ব্যাপারে কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমত আরা অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেন কলেন, অভিযোগ পেয়ে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আনিছুর রহমানকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলেছি। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ ব্যাপারে গ্রামবাসি অনতিবিলম্বে ওই খামারটি বন্ধ করে পরিবেশ দূষণ মুক্ত, ও স্বাস্থ্যঝুকি থেকে এলাকাবাসিকে রক্ষা করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানান।