জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মোলামগাড়ী হাটের সুজাউল ইসলাম মাছ চাষ করে ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন করেছেন। তিনি ২০০০ সালে এসএসসি পাশ করার পর কোন চাকুরীর না পেয়ে নিজ উদ্যেগে মাত্র ৯০শতক একটি পুকুর লিজ নিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা পুজি নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। সেই বছর থেকে লাভ হওয়ায় প্রতি বছরে দুই থেকে তিনটি করে পুকুরের সংখ্যা বাড়াতে থাকে। বর্তমানে তার মোট পুকুরের সংখ্যা ২৬টি। আর ওসব মৎস্য খামারে বর্তমানে ৫০জন বেকার যুবকেরা চাকুরি করছেন। তার এই সফলতা দেখে ওই এলাকার আশপাশের গ্রামের শিক্ষিত বেকার যুবকেরা মাছ চাষের দিকে আগ্রহী হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে জানা জানা গেছে, কালাই উপজেলার মোলামগাড়ী হাটের বাসিন্দা আলহাজ¦ মোজাহার আলী প্রামাণিকে ছেলে সুজাউল ইসলাম সুজা। তিনি এসএসসি পাশ করে বেকার থাকায় দুঃচিন্তাগ্রস্ত হয়ে চাকরি পিছনে হন্যে হয়ে ছুটাছুটি করেন। তার উচ্চ ডিগ্রী না থাকার কারণে চাকরি না পেয়ে পরে নিজ উদ্যেগে মাত্র ৯০শতক একটি পুকুর অন্যের কাছ থেকে লিজ নিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা পুজি নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। তার নিবেদিত কঠোর পরিশ্রমি, সততা আর ঘামের প্রতিফলন সুরভিত হয়ে বেকারত্বের অভিশাপে দ্বার খুলে স্বাবলম্বী হয়েছে। বর্তমানে তার ২৬টি বড় পুকুর রয়েছে। সেইসব পুকুরে রুই-মাছ্, কাতলা, মৃগেল, সিরভার-মাছ, পাঙ্গাস, কৈ-মাছ, দেশী মাগুর, শিং-মাছ, চিতল-মাছ, শোল-মাছ, টেংরা-মাছ, চেংড়ি, পাবদা-মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার সব খরচ বাদে বৎসরে আয় থাকে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। এরই সফলতায় ইতোমধ্যেই তিনি উপজেলা পর্যায়ে ২০০৭, ২০১০ ও ২০১৯ সালে হয়েছেন শ্রেষ্ট মৎস্য চাষী। যে কারণে তিনি পেয়েছেন সম্মাননা ক্রেস্ট ও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী। সুজার এই সফলতা দেখে আশপাশের গ্রামের শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতিরা মৎস্য চাষের দিকে আগ্রহী হয়ে পড়েছে। শুধু মৎস্য চাষে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি এলাকার ব্যাপক সু-নাম অর্জন করেছেন।
সফল মৎস্য খামারী সুজাউল ইসলাম সুজা বলেন, আমার উচ্চ ডিগ্রী না থাকার কারণে চাকরি না পেয়ে পরে নিজ উদ্যেগে মাত্র ৯০শতক একটি পুকুর অন্যের কাছ থেকে লিজ নিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা পুজি নিয়ে মাছ চাষ শুরু করি। প্রথমে পোনা-মাছ বিক্রি করে অধিক লাভবান হয়েছি। সেই বছর থেকে ভালো লাভ হওয়ায় প্রতি বছরে দুই থেকে তিনটি করে পুকুরের সংখ্যা বাড়ে। বর্তমানে পুকুরের সংখ্যা ২৬টি। আর ওসব মৎস্য খামারে বর্তমানে ৫০জন বেকার যুবকেরা চাকুরি করছেন। আমার সব খরচ বাদে বৎসরে আয় থাকে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। তিনি আর বলেন, বেকার যুবক-যুতিরা চাকুরীর পেঁছনে না ঘুরে মৎস্য চাষে প্রশিক্ষণ নিয়ে মাছ চাষ করে ভাগ্যের চাকা বদলে দেয়া সম্ভব হবে। পুকুর না থাকলেও লিজ নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী মাছ, মুরগী ও সবজি চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া অতীব সহজ। অদূর ভবিষ্যতে উপজেলার মোলামগাড়ী হাটের ব্যাপক আকারে মৎস্য হ্যাচারী প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে।
তার বিষয়ে সহজেই জিন্দারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, সফল মৎস্য চাষী সুজার দেখাদেখিতে এলাকার অনেক বেকার যুবক মৎস্য চাষে ঝুঁকেছেন। তার মৎস্য চাষে সফলতা দেখে আরো বেকার যুবক-যুবতিরা উদ্বুদ্ধ হয়েছে।
এই ব্যাপারে কালাই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. হাকিবুর রহমান বলেন, সফল মৎস্য খামারী সুজাউল ইসলাম মাছ চাষের কারণে উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা পেয়েছেন। মাছ চাষে তিনি উপজেলা পর্যায়ে ৩ বার পুরস্কার অর্জন করেছেন। এই উপজেলায় মৎস্য চাষ করে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছেন। মৎস্য চাষে সফলতা অর্জনের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তিনি। এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতিরা মাছ চাষ করে সফলতা অর্জন করতে পারে নি:সন্দেহে।