১৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাগেরহাটে নির্মিত হচ্ছে ১০টি মডেল মসজিদ। জেলা সদরে একটি এবং ৯টি উপজেলার প্রত্যেকটিতে একটি করে মডেল মসজিদ হবে। কচুয়া, মোংলা, শরণখোলা, চিতলমারী, ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও রামপাল উপজেলা সদরের মসজিদ কমপ্লেক্সের কাজ শুরু হয়েছে। জমি না পাওয়ায় জেলা সদর ও বাগেরহাট সদর উপজেলার মসজিদের কাজ শুরু হওয়া এখনও অনিশ্চত। তবে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সকল মসজিদের কাজ শেষ হবে বলে দাবি করেছেন বাগেরহাট গনপূর্ত বিভাগ। মসজিদ গুলো চালু হলে ইসলামি সংস্কৃতির বিকাশে ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ইসলামীক ফাউন্ডেশন, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক আল-ফারুক।
গণপূর্ত বিভাগ, বাগেরহাট সূত্রে জানা যায়, “৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের” আওতায় বাগেরহাটের ৯টি উপজেলা ও জেলা সদর অর্থ্যাৎ বাগেরহাট পৌরসভায় একটি আধুনিক মডেল মসজিদ নির্মান হবে। ৪৩ শতক জমির উপর এ মডেল মসজিদ কমপ্লেক্স হবে। এর মধ্যে জেলা সদরে ৪ তলা এবং উপজেলাগুলোতে তিন তলা বিশিষ্ট আধুনিক ভবন নির্মান করা হবে। পুরো জমিতে সীমানা প্রাচীর থাকবে। মূল মসজিদ কমপ্লেক্স ভবন হবে ১৬ হাজার ১শ ৫০ বর্গফুট। ভবনের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা ও সৌন্দর্য্য বর্ধণের জন্য ব্যবস্থা রয়েছে। ভবন নির্মানের ক্ষেত্রে মুসলিম স্থাপত্য শৈলীর নিদর্শন অনুসরণ করা হচ্ছে। প্রতিটি মসজিদে ইমাম ও মোয়াজ্জেন দায়িত্ব পালন করবেন। তারা সরকারি সুযোগ সুবিধা প্রাপ্ত হবেন। এর পাশাপাশি মসজিদগুলোতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের অফিস থাকবে। কমপ্লেক্সে একটি হলরুম থাকবে। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া শেষে সকলে ওই হলরুম ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। মসজিদগুলোতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশপাশি শিশুরা ধর্মীয় শিক্ষার সুযোগ পাবে। জেলা সদরের জন্য ১৫ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা এবং উপজেলা সদরে প্রতিটি মসজিদের জন্য ১৩ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
এদিকে ৭ টি উপজেলা সদরের মসজিদের কাজ শুরু হয়ে পাঁচ শতাংশ শেষ হলেও জমি নির্ধারণ না হওয়ায় জেলা সদর, সদর উপজেলা, ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মান কাজ থমকে আছে। এ তিনটি মসজিদের কাজ যথা সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংঙ্কা দেখা দিয়েছে। জমির জন্য বারবার বাগেরহাট ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে চিঠি দিলেও তারা জমির ব্যবস্থা করতে পারেন নি বলে জানিয়েছেন গনপূর্ত বিভাগ।
বাগেরহাট গনপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ ফয়সাল আলম বলেন, জেলার ১০টি মডেল মসজিদ নির্মানের দরপত্র আহবান ও আনুসঙ্গিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। জমি প্রাপ্তি সাপেক্ষে কচুয়া, মোংলা, শরণখোলা, চিতলমারী, ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও রামপাল উপজেলা সদরের মসজিদ নির্মানের জন্য কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। এসব মসজিদের জমির মাটি পরীক্ষাসহ প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। কোন কোন জায়গায় পাইলিংয়ের কাজও শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জেলা সদর, সদর উপজেলা, ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার জন্য নির্ধারিত জমি না থাকায় আমরা কাজ শুরু করতে পারছি না। জেলা সদরের মসজিদের জন্য পুরো জমি, সদর উপজেলা, ও মোরেলগঞ্জের জন্য নির্ধারিত জমির আংশিক অধিগ্রহনের প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এই প্রকল্পে জমি অধিগ্রহনের জন্য টাকা বরাদ্দ না থাকায় অধিগ্রহন করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। তিনি প্রকল্প পরিচালকের সাথে কথা বলে বিষয়টির সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
ইসলামীক ফাউন্ডেশন, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক আল ফারুক বলেন, সকল জেলা ও উপজেলায় মডেল মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মানের উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রীর একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে ইসলামি সংস্কৃতি ও রীতি নীতি যেমন বিকাশ লাভ করবে, তেমনি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মাধ্যমেও প্রচারণা চালানোর সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও সারা বাংলাদেশে ৫০০ মসজিদে অনেক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।