বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলা ফলতিতা এলাকা সহ আশপাশের অঞ্চল সমূহে হাজার হাজার ঘেরের চিংড়ি ও সাদা মাছ মারা যাওয়ায় মৎস্য চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী মৎস্য চাষীরা জানান, বেশকিছুদিন যাবৎ বৃষ্টির দেখা নেই। তার উপর তীব্র গরম। এমন অবস্থায় ২১ সেপ্টেম্বর দুপুরে আকস্মিক প্রবল বৃষ্টি। রাতে পুনরায় গরমের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে অক্সিজেনের অভাবে ৯০ শতাংশ ঘেরের মাছ মারা যায়। ২২ সেপ্টেম্বর সকালে ফলতিতা মৎস্য আড়তে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শত শত মৎস্য চাষী তার ঘেরের মরে যাওয়া ছোট-বড় চিংড়ি ও সাদা মাছ বিক্রির জন্য এসে ভীড় জমিয়েছে।
সকলের মুখে ফুটে উঠেছে হতাশা। অনেকেই জানিয়েছে তারা সর্বশান্ত হয়েছে গেছে। এ ক্ষতি অপূরনীয়। অনেকে ব্যাংক, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে অনেকে ধার-দেনা করে এবার ঘেরে মাছের রেনু পোনা দেয়। যা বড় হলে বিক্রি করে লাভবান হবে এবং দেনার টাকা শোধ করে দেবে। এদিকে মাছ মারা যাওয়ার কারণে ডিপু মালিকরা অর্ধেক দামে মাছ ক্রয় করছে। দুদিন আগে যে মাছের দাম ছিল ৭শত থেকে ৮শত টাকা। তা বিক্রি হয়েছে মাত্র ৩শত থেকে ৪শত টাকা পর্য়ন্ত। মৎস্য আড়ৎদার সমীর খান ও মহানন্দ বৈরাগী জানান, আকস্মিক ঘেরের মাছ মরে যাওয়ায় অন্যদিনের তুলনায় অধিক মাছ আসায় মূল্য হ্রাস পেয়েছে। এমনকি স্থানীয় বরফ কোম্পানীরা বরফ সাপ্লাই দিতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে ফলে অনত্র থেকে বরফ এনে মাছে দিতে হচ্ছে। মৎস্য চাষী জিয়াউর রহমান, রাসেল মোড়ল, মিনার হোসেন লিটু, আকাশ বিশ্বাস সহ অনেক ভুক্তভোগী জানান, ২১ সেপ্টেম্বর রাতে এক সাথে অত্র অঞ্চলের হাজার হাজার ঘেরের মাছ মারা গেছে। এতে সর্বশান্ত হয়ে গেছেন অনেক চাষী। এরপর মারা যাওয়া সেই মাছ বিক্রি করতে হচ্ছে অনেক কম মূল্যে। মূলঘর ইউপি চেয়ারম্যান ও ঘের মালিক এ্যাড. হিটলার গোলদার জানান, তার নিজের ঘের সহ এলাকার অধিকাংশ ঘেরের মাছ মারা গেছে। চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। যাদের ঘেরের মাছ মারা যায়নি তারা অনেকেই ঘেরে বিভিন্ন মেডিসিন ব্যবহারের পাশাপাশি শ্যালো ম্যাশিন এনে ঘেরে বসিয়ে পানি পরিস্কার করে অক্সিজেন সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এভাবে ঘেরের মাছ মারা যেতে লাগলে চিংড়িখাতে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটবে বলে সচেতন মহল মনে করেন।