এফএনএস (এস এম হাবিব; যশোর) :
যশোর সদর উপজেলার ঝুমঝুমপুরে রাজনৈতিক পদ ও ধর্মীয় লেবারের আড়ালে দুই ভাইয়ের অভিনব মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজী, হামলা এবং মামলার কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এলাকায় প্রকাশ্যে মাদকদ্রব্য বিক্রি হলেও চিহ্নিত সন্ত্রাসী দুই ভাইয়ের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।
এলাকাবাসী জানায়, ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের একটি দল ঝুমঝুমপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী জাবেদের বাড়িতে অভিযান চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে জাবেদ পালিয়ে গেলেও তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুই রাউন্ডগুলি, একটি বিদেশী পিস্তল, দুটি মোটরসাইকেলসহ তার সহযোগী সুমন, মেজবাউল ও ইমরান হোসেন সবুজকে আটক করে। মুক্তিপণের দাবিতে এক কিশোরকে তার ঘরে বন্ধি করে রাখার অভিযোগে র্যাব অভিযান চালায়। বন্ধি ওই কিশারকে এ সময় উদ্ধার করা হয়। এভাবে মুক্তিপণের দাবিতে শিশু, কিশোর ও কিশোরী অপহরণ করে তার বাসায় রেখে দেয়।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র হত্যা মামলার আসামি জাবেদ এবং তার ভাই সেলিম অভিনব কায়দায় ইয়াবা ব্যবসা করছে করছে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এর মধ্যে সেলিম তাবলিক জামায়াতের লেবাসের আড়ালে মসজিদের মধ্যে বড় বড় ইয়াবা চালানের বেচাকেনা করছে। মসজিদের মধ্যে এ বেঁচা কেনা করায় কেউ ভুলেও তাকান না তার দিকে।
তাছাড়া রাজনৈতিক ব্যানারে থাকা চাঁদাবাজ জাবেদের রয়েছে ইয়াবা পাচারের বাহিনী। এর মধ্যে বজলুর ছেলে রাজু, ইজিবাইক চোর সবুজ, হামিদের ছেলে হেকমত, হাবিবের ছেলে নাসির, বাহাউদ্দিনের ছেলে রনি, জিল্লু একপ্রকার প্রকাশ্যে মাদক বেচাকেনা করে। এ ছাড়া বিভিন্ন অঞ্চলেও রয়েছে তার ইয়াবা বাহিনী। তার এ ইয়াবা বিক্রির টাকা একটি অংশ পাচ্ছে প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা। জাবেদ পুলিশের অনেক কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছে বলে তার লোকজন বিভিন্ন মহলে প্রচার করছে।
এছাড়া ঝুমঝুপুর এলাকায় কেউ জমি বা বাড়ি করতে গেলে জাবেদকে চাঁদা দেয়া লাগছে। সম্প্রতি ফলব্যবসায়ী খোকন চাঁন্দের মোড়ে জমি কিনে বাড়ি তৈরি করতে গেলে তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছে। আক্তার নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছেন। কেউ বাড়ি করতে গেলে তাকে চাঁদা দিতে হচ্ছে।
ওই এলাকায় কোন পুলিশ বা র্যাবের গাড়ি ঢুকলে জাবেদ বা তার লোকজন জানার জন্য দুইজনকে নিয়োগ দিয়েছেন। এর মধ্যে বটতলায় কসাই রমজান এবং চায়ের দোকান রুহুল আমিন। তারা ঝুমঝুমপুর মোড়ে পুলিশ প্রশাসনের কোন গাড়ি ঢুকলে ওই দুইজন জাবেদকে ফোনে জানিয়ে দেয়। এ সময় সে তার অবস্থান থেকে সরে যায়। ফলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করতে পারছে না।
যশোর পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, জাবেদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তার বিষয়ে সকল তথ্য রয়েছে পুলিশের কাছে। যে কোন মুহূর্তে তার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জাবেদ এবং সেলিমের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।