লালমনিরহাটে বিজিবি’র মাদক বিরোধী অভিযানে বিজিবি’র কুলাঘাট বিশেষ ক্যাম্পের সদস্যরা বিপুল পরিমান ভারতীয় গাঁজা উদ্ধার করেছে। তবে কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি বিজিবি সদস্যরা।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর ব্যাবস্থাপনায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ বিষয়টি জানানো হয়। এর আগে মঙ্গলবার গভীর রাতে কুলাঘাট ইউনিয়নের শিবেরকটি নামক স্থান থেকে ওই গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ আনোয়ার-উল-আলম লিখিত বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করায়, বিজিবি মহাপরিচালক, রিজিয়ন কমান্ডার এবং সেক্টর কমান্ডার রংপুর ওই ঘোষনার সাথে একাত্মতা পোষনসহ সময় সময় বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ আনোয়ার-উল-আলম, বিজিবিএম, পিবিজিএম এর ব্যক্তিগত উদ্যোগ, বিশেষ নির্দেশনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিজিবি সদস্যগন সীমান্তে মাদক বিরোধী অভিযান অত্যন্ত কঠোরভাবে অব্যাহত রেখেছে ও যে কোন সময়ের চেয়ে অধিক সংখ্যক মাদকদ্রব্য আটক করতে সক্ষম হচ্ছে।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ আনোয়ার-উল-আলম, বিজিবিএম, পিবিজিএম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে মাদকের একটি বড় চালান নৌকাযোগে ধরলা নদী দিয়ে চর শিবেরকুটি নামক স্থান দিয়ে লালমনিরহাট জেলায় প্রবেশ করবে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে অধিনায়ক কুলাঘাট বিশেষ ক্যাম্প কমান্ডার এর নেতৃত্বে একটি টহল দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালান। পরবর্তীতে কুলাঘাট বিশেষ ক্যাম্পের টহল দল উল্লিখিত এলাকায় অবস্থান গ্রহন করে এবং রাত আনুমানিক ২টায় দেখতে পায় যে একটি নৌকা এসে কলা বাগনের নিকট থামে এবং ০৫টি বস্তা নৌকা থেকে চরের দিকে নিয়ে আসতেছে। তখন টহল দল বাঁশি মারলে মাদক চোরাকারবরীগন গাঁজার বস্তা ফেলে পালিয়ে যায়। পওে টহল দল ওই গাঁজা জব্দ করে ক্যাম্পে নিয়ে আসে ওজন করে দেখেন ৫টি বস্তায় ৬১ কেজি গাঁজা রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৫,০০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ) টাকার উর্দ্ধে। যা ব্যাটালিয়ন মাদকদ্রব্য ষ্টোরে জমা রাখা হয়েছে। এছাড়াও লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) কর্তৃক চলতি সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার চোরাচালানী মালামাল আটক করে সরকারী রাজস্ব আদায়ে সহায়তা করেছে।
তিনি আরো বলেন, লালমনিরহাট জেলার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক মোঃ জাফর আহমেদ এর মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ নজরদারী দিয়েছেন এবং কুলাঘাট এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনার ব্যাপারে অধিনায়ক লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) কে অনুরোধ করেছেন। এমতাবস্থায় অধিনায়ক ১৫ বিজিবি এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন দপ্তরের অনুমতি সাপেক্ষে কুলাঘাট লোহার ব্রীজ এলাকায় ইতোমধ্যে একটি চেকপোষ্ট স্থাপন করেছেন ও মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে।
পরিশেষে তিনি বলেন, সীমান্তবর্তী মানুষকে অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাকারবারী এবং আন্তঃ সীমান্ত অপরাধ ও মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যাপক গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিজিবি। সীমান্তবাসীদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকা সীমান্তকে আরো নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখাসহ মাদক বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করবে বলে আমরা আশা করি।
সংবাদ সম্মেলনে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোঃ জাফর আহমেদ, পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক, বিজিবি’র অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।