পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমানকে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দলীয় ফরম বিক্রি বাবদ ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত দিতে পত্র দেয়া হয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এস এম রাকিবুল আহসান টাকা ফেরত চেয়ে এ পত্রটি দেন।
এ সংক্রান্ত পত্রের অনুলিপি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবাহান গোলাপসহ পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। একই কপি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছেও দেয়া হয়েছে। তবে মাহবুবুর রহমান বলেছেন, তাঁকে হেয় করার জন্য এ পত্র দেয়া হয়েছে।
এস এম রাকিবুল আহসান স্বাক্ষরিত পত্র সূত্রে জানা গেছে, বিগত সময়ের পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক নেতৃবৃন্দ দলের ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। ফরম বিক্রি বাবদ ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা আয় হয়েছে। এ টাকা দলের উপজেলা শাখার সভাপতি হিসেবে মো. মাহবুবুর রহমান এতদিন ধরে নিজের কাছে গচ্ছিত রেখেছেন। এ টাকা যাতে দলের তহবিলে ফেরত দেয়া হয়, সেজন্য এ বছরের ১৪ জানুয়ারি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহদপ্তর সম্পাদক মো. ইউসুফ আলী বলেন, ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর কলাপাড়া ও কুয়াকাটা পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর এক মাস আগে দলের ফরম বিক্রি করা হয়। দলের ওই নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়ন ফরমের মূল্য ছিল মেয়র পদের জন্য ২৫ হাজার টাকা, সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদের জন্য ২০ হাজার টাকা এবং সংরক্ষিত নারী পদের জন্য ২০ হাজার টাকা। এতে ১১ লাখ টাকা আয় হয়। এরপর চাকামইয়া, টিয়াখালী ও নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ইউপি চেয়ারম্যান পদের ফরমের মূল্য ছিল দশ হাজার টাকা। এ খাতে ৭০ হাজার টাকা আয় হয়। এই ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দলীয় সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমানের কাছে গচ্ছিত রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নাসির উদ্দিন বলেন, এতদিন ধরে মৌখিকভাবে মো. মাহবুবুর রহমানের কাছে টাকা ফেরত চাওয়া হয়। দলীয় সভার সিদ্ধান্তের কথাও তাঁকে জানানো হয়। দলীয় সভা হয়েছে, গত ৯ মাস হলো। এর মধ্যেও সে টাকা ফেরত দেয়নি। যার কারণে এবার দাপ্তরিকভাবে পত্র দিয়ে টাকা ফেরত চাওয়া হয়েছে। দলের টাকা দলের ব্যাংক হিসাবে জমা থাকবে। অথচ তা না করে তিঁনি টাকাটা নিজের কাছে রেখেছেন। এটা তিনি অন্যায় করেছেন। পত্রের মাধ্যমে তাঁকে এ টাকাটা শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড খেপুপাড়া শাখায় জমা দিতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পত্র পাওয়ার পরেও এবার তিনি টাকাটা ফেরত না দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে সাবেক সংসদ সদস্য এবং সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমান মুঠো ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, আমি এখন ও চিঠি পাইনি এবং কেউ আমার সাথে আলাপ করে নি। তাছাড়া ওই সময় যারা মনোনয়ন পায়নি আমি তাদের টাকা ফেরত দিয়েছি। কিছু টাকা অফিস চালাতে ও ইফতার পার্টিতে খরচ হয়েছে। তবে আমার কাছে তিন লাখ টাকার মতো রয়েছে। তিঁনি বলেন,আমি এখনও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। অথচ আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই চিঠি দেয়া হয়েছে।