স্কুল, কলেজ ফাঁকি দিয়ে আড্ডা দেয়াসহ ধূমপান করার সময় নড়াইলে চার শিক্ষার্থীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ডিবি পুলিশের এসআই সেলিম রেজার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ স্টেডিয়াম এলাকা থেকে চারজনকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলো-শহরের ভওয়াখালী এলাকার রাশেদ মোল্যার ছেলে উচ্চমাধ্যমিকশ্রেণির শিক্ষার্থী ইমন (১৯), একই এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে দশম শ্রেণির পারভেজ (১৬), আজাদ আলীর ছেলে নবম শ্রেণির অনিক হাসান (১৫) এবং এদের বন্ধু হানিফ সরদারের ছেলে আকাশ (১৫)। এসআই সেলিম রেজা জানান, স্কুল-কলেজ ফাঁকি দিয়ে এই চারজন স্টেডিয়াম এলাকায় বসে আড্ডাসহ ধূমপান করছিল। ছাত্রদের এ অবস্থা দেখে স্টেডিয়ামের কর্মকর্তারা পুলিশকে খবর দেয়। আটকের পর অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীরা পুলিশের কাছে এ মর্মে মুচলেকা দিয়েছে যে, তারা ভবিষ্যতে আর এ ধরণের অপকর্ম করবে না।
এর আগে ২৮ আগস্ট দুপুরে নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল, কলেজের সামনে থেকে অভিযান চালিয়ে ২০ ছাত্রকে এবং ১৬ জুলাই সকালে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে উত্যক্তকরণের অভিযোগে ১৪ জন আটক করে ডিবি পুলিশ। এ ছাড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় মোটরসাইকেলে হেলমেট পরে মেয়েদের উত্যক্তকরণের অভিযোগে গত ২০ জুন রাতে বাড়ি থেকে স্কুল শিক্ষক এসএম মাহমুদ হাসান সজীবকে (৩৩) গ্রেফতার করে পুলিশ। সজীব নড়াইল সদর উপজেলার বেতেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং শহরের ভাদুলীডাঙ্গার শেখ মোহাম্মদ হুসাইনের ছেলে।
স্কুল-কলেজ ফাঁকি দেয়া রোধে ও ছাত্রীদের উত্যক্তকরণ বন্ধে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রায়ই এ ধরণের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। সচেতনমহলসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ পুলিশের এ ধরণের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। অনেকে ফেসবুকে এ উদ্যোগকে ‘ভালো ও সময়োপযোগী’ মন্তব্য করে অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি করেন।
বিভিন্ন পেশার মানুষ বলেন, জেলা শহরসহ লোহাগড়া, কালিয়া ও নড়াগাতি থানা এলাকার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের আশপাশে এ ধরণের অভিযান পরিচালনা দরকার। এমনকি গ্রাম্য পর্যায়ে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে, সড়ক পথে এবং আশপাশে ছেলেরা স্কুল-কলেজ ফাঁকি দিয়ে মেয়েদের উত্যক্তকরণসহ নানা অপকর্ম করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া এলোমেলো ভাবে চুলকাটার ক্ষেত্রেও পুলিশের নজরদারি প্রয়োজন। পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতনতা খুবই জরুরি বলে মনে করেন সচেতনমহল।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার) বলেন, শহরে সিসিটিভির মাধ্যমে আটককৃতদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হয়। এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সামনে অহেতুক আড্ডা, ছাত্রীদের ছুটির সময় সন্দেহজনক আচরণসহ উত্যক্তের অভিযোগ রয়েছে। মেয়েরা যাতে স্কুল-কলেজসহ সর্বত্র নির্বিঘেœ যাতায়াত করতে পারেন এবং বখাটেরা উত্ত্যক্ত করতে না পারে, সেদিকে আমাদের নজরদারি রয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশের পক্ষ থেকে শহরে মাইকিং করে সচেতন করা হয়েছে। আশা করছি ছাত্রসহ কেউই এ ধরণের আচরণ করবে না। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।