ক্ষণে ক্ষণে উলুধ্বনি, শঙ্খ, কাঁসা আর ঢাকের বাদ্য জানান, দিচ্ছে ঠাকুর ঘরে উদ্ভাসিত মৃন্ময়ী রূপ প্রতিমা বরণের। চিন্ময়ী আনন্দরূপিনীর বোধনের মধ্যদিয়ে শুরু হলো দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার ৫৫টি মন্দির ও মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা।
উপজেলার বিভিন্ন মন্দির ও মন্ডপে নানা আকারের দুর্গাদেবীর প্রতিমা তৈরিসহ সাজসজ্জায় দিনরাত ব্যস্ততম সময় কাটিয়েছেন প্রতিমা শিল্পী ও সাজসজ্জার শিল্পীরা। প্রতিমা শিল্পীরা রাতভর রং-তুলির আঁচর দিয়ে দেবীর মনোমুগ্ধকর অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দিতে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলছেন।
প্রতিমা শিল্পী বাবু মালাকার, জীবন মালাকার, গনেশ রায়, সজল রায় ও সাগর রায় বলেন, ছোটবেলা থেকে কাঁদামাটি ও রংতুলির সঙ্গে বেড়ে ওঠা তাদের। বছরের সব সময় কাজ থাকে না তাই অধিকাংশ সময় বেকার থাকতে হয়। কিন্তু এখন দুর্গাপূজা উপলক্ষে কাজের চাপ বেশি তাই রাতদিন পরিশ্রম করে মনের মাধুরী মিশিয়ে প্রতিমা তৈরি করেছেন তারা। প্রতিবছর তারা ৫ থেকে ৮টি প্রতিমা তৈরির অর্ডার নেন। প্রতিটি প্রতিমা তৈরিতে অর্ডার নেন ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায়।
ফুলবাড়ীর ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্যামা কালী মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি জয়প্রকাশ গুপ্ত, শ্রী শীতলা মন্দির দুর্গা পূজা মন্ডপ কমিটির সভাপতি আনন্দ কুমার গুপ্তা বলেন, সুষ্ঠ ও সুনিরাপত্তায় শুরু হলো শারদীয় দুর্গাপূজা। মন্ডপে মন্ডপে বাজছে ঢাক-ঢোল। অতিতের মতো এবার তারা ব্যক্তিক্রমধর্মী দৃষ্টি নন্দন দুর্গা প্রতিমা তৈরি ও সাজসজ্জা করেছেন। ভক্তদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছেন মন্দির পরিচালনা কমিটি।
উপজেলা শাখা বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক বাবু চিত্ত রঞ্জন ঘোষ ও সদস্য সচিব ধীমান চন্দ্র সাহা বলেন, পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমূখর পরিবেশে সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশসহ সকল প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা রয়েছে। অত্যন্ত উৎসবমূখর পরিবেশে উপজেলার ৫৫টি মন্ডপে দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। এছাড়াও দশমীতে ঐতিহ্যবাহী দুর্গা মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার পৌর এলাকাসহ সাতটি ইউনিয়নে ৫৫টি মন্ডপে দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। মন্ডপগুলোর নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি মন্ডপে নজনদারীসহ সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুস সালাম চৌধুরী বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশসহ সরকারের অন্যান্য সংস্থাগুলো সার্বক্ষণিক নজরদারীসহ প্রতিটি মন্ডপে, অত্যন্ত উৎসবমূখর পরিবেশে পূজাঅর্চনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।