সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করা একটি ছবিতে দেখা যায় জাহিদুলের ঘারে মাথা রেখে হেডফোন কানে লাগিয়ে গান শুনছে শওকত। পরণের টি শার্ট দুটিও প্রায় এক। পুরো এলাকার মানুষ তাদেরকে বন্ধু হিসাবেই জানে। তারা একে অপরের প্রতিবেশীও। কিন্তু জাহিদুলের লাশ উদ্ধারের ৯ দিন পর জানা গেল ইয়াবা ব্যবসার অগ্রীম ৮ হাজার টাকার জন্য শওকত আরো ২ সহযোগীকে নিয়ে গলায় ওড়না পেচিয়ে জাহিদুলকে হত্য করে লাশ জঙ্গলে ফেলে রাখে। শনিবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট রবিউল ইসলামের আদালতে শওকত ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি প্রদান করে।
এর আগে গত ৪ অক্টোবর ভোরে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে প্রযুক্তি ব্যবহার করে শ্রীনগর থানার ওসি (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন ও ওসি (অপারেশন) কামরুজ্জামান বান্দরবন জেলার আর্মি পাড়া থেকে শওকতকে গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয়রা জানায়, পূর্ব বাঘড়া এলাকার মৃত মল্লুক চাঁনের ছেলে ও শাহাবুদ্দিন মাষ্টার হত্যা মামলার ৪ বছর সাজা ভোগকারী আসামি রুবেলের ভাই মোঃ জাহিদুল (১৯) গত ২১ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পরদিন জাহিদুলের বোন বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে স্থানীয়রা বাড়ি থেকে একটু দুরে জাহিদুলের লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীনগর থানার ওসি (অপারেশন) কামরুজ্জামান জানান, লাশ উদ্ধারের পর পরিবারের কেউ মামলা করতে আগ্রহী না হওয়ায় ২ দিন পর শ্রীনগর থানার এসআই আবুল কালাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য মাঠে নামে পুলিশ। জাহিদুলের প্রতিবেশী শেখ সিরাজের ছেলে শওকতকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে এর রহস্য রেবিয়ে আসে। স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দীতে শওকত জানায়, জাহিদুলের কাছ থেকে সে ইয়াবা কিনে অন্যত্র বিক্রি করতো। বেশ কিছুদিন আগে ইয়াবা ব্যবসার অগ্রীম হিসাবে সে তার প্রতিবেশী ও বন্ধু জাহিদুলকে ৮ হাজার টাকা প্রদান করে। টাকা নিয়ে ইয়াবা না দেওয়ায় জাহিদুলের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। এর সূত্রধরে শওকত কৌশলে তার ২ সহযোগীদের নিয়ে জাহিদুলকে গলায় ওরণা পেচিয়ে হত্যা করে লাশ জঙ্গলে ফেলে গা ঢাকা দেয়। শওকত ওই এলাকার শেখ সিরাজের ছেলে।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) আসাদুজ্জামান জানান, হত্যাকান্ডে শওকত ছাড়াও তার আরো ২ সহযোগী অংশ নেয়। তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।