মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকার এর মধ্যে খাদ্য হলো প্রধান। আমরা সবাই জানি, সুস্বাস্থ্যই সকল সৌন্দর্য ও সুখের মূল। সুস্বাস্থ্য ছাড়া আমাদের সকল বৃথা। সুস্বাস্থ্যের জন্য চাই স্বাস্থ্যসম্মত নিরাপদ খাদ্য। বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের বিকল্প কিছু নেই। আমরা খাদ্যের সাথে বিষও খাচ্ছি রোজ। শহর থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যেক গ্রামে চলছে খাদ্যের নামে বিষ বিক্রি। খোলা থেকে শুরু করে প্যাকেট জাত পযন্ত ভেজালের রাজত্ব।১৬ কোটি মানুষ আজ ভেজাল খাদ্যের আতঙ্কে। পরিবেশ বাঁচাতে আন্দোলন সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলো, কলায় ৯১ শতাংশ, মাল্টায় ১০০ শতাংশ, আপেলে ৫৯ শতাংশ, আঙ্গুরে ৯৫ শতাংশ, খেজুরে ৭৭ শতাংশ, আমে ৯৫ শতাংশ, সেমাইয়ে ১০০ শতাংশ, নডুলসে ৯৫ শতাংশ ও টমেটোতে ৭৫ শতাংশ ফরমালিন ব্যবহার করা হচ্ছে। কনফেকশনারীতেও ভেজাল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অস্ট্রেলিয়ার ওলিংগং বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে গবেষণা জরিপ করে দেখেছে যে, রাজধানীর ৯৬ শতাংশ মিষ্টি, ২৪ শতাংশ বিস্কুট, ৫৪ শতাংশ পাউরুটি, ৫৯ শতাংশ আইসক্রিম ভেজাল বা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি। এ ক্ষেত্রে নমুনা পরীক্ষা করে প্রায় ৫০ শতাংশ খাদ্যপণ্যে অস্বাস্থ্যকর উপাদান পেয়েছে জাতীয় জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান।
ভেজাল ও মরণ ব্যাধি, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের গবেষণা সূত্রে প্রকাশ, রাসায়নিক ও বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণের দরুন : প্রতি বছর ক্যান্সার রোগী সংখ্যা- ১.৫ লাখ, কিডনি রোগীর সংখ্যা-২০ লাখ, গর্ভজাত বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নিচ্ছে-১৫ লাখ।
পরিসংখ্যান জরিপ এর চাইতে অনেক গুণ বেশি মানুষ নানান রোগব্যাধির শিকার এইসব ভেজাল খাদ্য খেয়ে বলে আমরা মনে করি। কেননা সব খবরই পত্রিকায় প্রকাশিত হয়না। আমরা বিশুদ্ধ ভেজাল ও বিষ মুক্ত খাদ্য চাই। তাছাড়া বিশুদ্ধ খাদ্য সুস্থ ও সমৃদ্ধশালী জাঁতি গঠনে একান্ত অপরিহার্য। আমাদের বাংলাদেশের বিশুদ্ধ খাবার প্রাপ্তি কঠিন করে ফেলছে কিছু বিবেকহীন ব্যবসায়ী ও আড়তদার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এদের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে। আমরা মনে করি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের তদারকি আরো বাড়াতে হবে, সব বাজার গুলোতে। শুধু ছোটো দোকানদারদের উপর শুধু চাপ সৃষ্টি করে হবেনা,কারখানা গুলোতে তদারকি বাড়াতে হবে। কেননা মানুষের অতি প্রয়োজনীয় খাদ্য নিয়ে অনিয়ম মেনে নেওয়া যায় না। খাদ্যে ভেজাল অমানবিক ও ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এর বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা নিতে হবে। ভেজাল বিরোধী অভিযান যেন ব্যবসায়ীদের মধ্যে অযথা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে না পারে, সে দিকে খেয়াল রেখেই ব্যবস্থা নিতে হবে। ভেজাল খাদ্য রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।