বিয়ের নামে প্রতারণার করার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার আসামি পুলিশ জেসমিন আক্তার লতা এবং প্রতারনার কাজে সহযোগিতাকারী স্বামী মাদক ব্যবসায়ী লিটনকে পুলিশ আজো গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে, পুলিশ প্রতারক চক্রকে খুঁজতে পুলিশ মাঠে নেমেছে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগে জানান, যশোরের বাউলিয়ার শামসুর রহমানের মেয়ে বকচরের রব্বানীর ভাড়াটে জেসমিন আক্তার লতা এবং স্বামী পরিচয়দানকারী মাগুরা জেলার শালিখা থানার দেয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত হাসেম মোল্যার ছেলে আলমগীর হোসেন ওরফে লিটন শহরে বিভিন্ জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে অবৈধ কাজ করে যাচ্ছে। জেসমিনের প্রতারণার কাজে তার ভাইও সহযোগিতা করছে বলে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে পড়েছে।
২৯ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২ টায় সে বকচর ভাড়ার বাড়িতে ভাই বায়েজিদকে দিয়ে চাঁদপাড়া গ্রামের মৃত জোহর আলীর ছেলে হাবিবুর রহমানকে ডেকে নিয়ে আসে। এখানে জেসমিন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে আটকিয়ে ফেলে অশ্লিল অবস্থায় ছবি তুলতে বাধ্য করে। এ সময় নগদ ১৫ হাজার ৭শ টাকা সোনার চেইন ও আংটি ছিনিয়ে নেয়। এরপর হত্যা হুমকি দিয়ে বিয়ের কাবিন নামায় সই করিয়ে নেয়। কাবিন নামায় ৮ লাখ টাকা লিখে নেয় জেসমিন চক্র। তাকে ছেড়ে দেয়ার পর ওই ৮ লাখ টাকার জন্য প্রতিনিয়ত চাপ দেয়া হচ্ছে হাবিবুর রহমানকে। মোবাইলে হত্যার হুমকিও দিচ্ছে লোকমাধ্যমে। গত ২০ সেপ্টেম্বর মোবাইল থেকে জেসমিনের কথামত চলার জন্য হুমকি দেয় জেসমিনের সকল অপকর্মের সহযাত্রী হিসেবে খ্যাত নারী সরবরাহকারী ও মাদক ব্যবসায়ী লিটন।
ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন প্রতারনা চক্রের হোতা জেসমিন তার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা আদায় করতে মরিয়া রয়েছে। আদালতে মামলা ও থানায় জিডি করায় জেসমিন উল্টো মিথ্যা মামলা করেছে এবং এ ঘটনায় পরিস্থিতি সামাল দিতে পূর্ববারান্দী মোল্যাপাড়ার লিটনের ভাড়া বাড়িতে জেসমিনকে নিয়ে আসে। এ জায়গায় তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতে থাকে।
হত্যার হুমকির ঘটনায় হাবিবুর থানায় গত ২১ সেপ্টেম্বর জিডি কররেন। পুলিশ এ ঘটনায় তদন্তে নামে। ২৮ সেপ্টেম্বর থানার এসআই হায়াত মাহমুদ বারান্দীপাড়ার বাসায় অভিযান পরিচালনা করেন। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে সটকে পড়ে জেসমিন। এদিকে আলমগীর হোসেন লিটনের সাথে স্বামী স্ত্রী হিসেবে বসবাস করে অন্য যুবকের সাথে ব্লাক মেইলিং বিয়ে ও ৮ লাখ টাকা হাতানোর চেষ্টায় তুমুল হৈচৈ শুরু হয়েছে। শতখালী ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান আনোয়ার হাসেন জানিয়েছেন গত এপ্রিল মামে জেসমিন ও লিটনকে স্বামী স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতে দেখা গেছে। হাবিবুর রহমানের দেয়া মামলায় তদন্ত প্রতিবেদনে যশোর সদর ফাঁড়ির সাবেক ইন্সপেক্টর ফিরোজ উদ্দিন উল্লেখ করেছেন, জোর করে আটক রেখে জেসমিন হাবিবুর রহমানকে বিয়ে করে। হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে মালামাল ও নগদ টাকা হাতিয়ে নেয়। এই জেসমিনের আগেও একাধিক বিয়ে রয়েছে। এ ব্যাপারে থানার এসআই হায়াত মাহমুদ জানান, তিনি একটি জিডি তদন্ত করছেন। জিডিতে অভিযুক্ত জেসমিন ও লিটনকে খোঁজা হচ্ছে। তিনি একদিন অভিযান চালিয়েছেন। এখন গাঢাকা দিয়েছে জেসমিন।
অভিযোগে আরো জানা গেছে, আলমগীর হোসেন ওরফে লিটন উঠতি বয়সে তোতা বাহিনীর সাথে জড়িয়ে পড়ে এবং সন্ত্রাসী কর্মকা- করতে থাকে। ১৯৯৯ সালে তার পরিবার থেকে সৌদিতে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকে ফিরে ২০০৭ সালে মালেয়াশিয়ায় যায় এবং অবৈধ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। মাদক ব্যবসার কারণে মালেয়াশিয়া সরকার ২০১৩ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা করে। এ সময় সে পালিয়ে আসলে মালেয়াশিয়া সরকার সেদেশে তাকে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এরপর সে যশোর শহরে বসবাস করতে থাকে। এ সময় সে মাদক ব্যবসা ও নারী দিয়ে দেহ ব্যবসা শুরু করে। জেসমিনের সাথে পরিচয় হয় এবং স্বামী স্ত্রী পরিচয় দিয়ে প্রতারণায় নামে।