শিশুরা পবিত্র, নিষ্পাপ, অনেকে শিশুদের ফেরেস্তার সঙ্গে তুলনা করেছেন। অনেক গুণীজন শিশুদের নিয়ে লেখেছেন বিভিন্ন উক্তি, যা লাভ করেছে অমরত্ব। যেমন শিশুদের মন স্বর্গীয় ফুলের মতোই সুন্দর। শিশুরা মাটির মতোই সুন্দর, এদের যে পাত্রে রাখা যাবে তারা তেমন রূপই ধারণ করবে। তাই উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত সমাজের শ্রেণির পরিবারগুলো তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে সন্তানদের আগলে রাখতে বা অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে। এদিকে দারিদ্র্য ও অসচ্ছল পরিবারের চিত্র উল্ট। আবার যাদের বাবা-মা এই পৃথিবীতে নেই তাদের জন্ম যেন হয় আজন্ম পাপ। দারিদ্র্য ও অসচ্ছল পরিবারের সুবিধাবঞ্চিত প্রায় শিশুরাই নিতান্ত পেটের দায়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজগুলোকে তাদের নিত্যনৈমিত্তিক পেশা হিসেবে বেঁচে নিতে বাধ্য হচ্ছে। নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাসের শিকার সব চেয়ে বেশি এক শ্রেণির শিশুরা। আমাদের সমাজ তাদের আখ্যা দিয়েছে পথশিশু হিসেবে। সমাজব্যবস্থায় তাদের তেমন মূল্যায়ন করা হয় না। তারা তাদের ন্যায্য প্রাপ্য মৌলিক অধিকারগুলো থেকেও তারা বঞ্চিত।
আজ তারা এমন করুণ অবস্থায় অবস্থান করছে যে তাদের এক ঘণ্টার কার্যকলাপ কোনো লেখক-লেখিকা লেখে শেষ করতে পারবেন না। তবে এ টুকু সহজেই বলা যায়- আজ যারা পথশিশু তাদের যেন প্রকৃতি নেই, পরিবেশ নেই, অবুঝ শৈশব নেই, ভবিষ্যৎ চিন্তা নেই, পরিবারের অর্থজোগান এবং নিজেদের ক্ষুধা নিবারণ করতে যেন তারা ব্যস্ত। আজ এমনভাবে বেড়ে উঠছে তারা যা ভবিষ্যৎ জাতির জন্য ভয় বা বিপদ। যা আমাদের দেশ ও জাতির কাম্য নয়। আমরা আজ এতই স্বার্থপর হয়ে গেছি যে পথশিশু বা বঞ্চিত শিশুদের জন্য আমাদের সামান্য একটু ভালোবাসা নেই, আদর-সেহ্ন মায়া-মমতা নেই। অবোধ শিশুরা কিছু বলতে পারে না। ক্ষুধার্ত মুখে আমাদের দিকে শুধু তাকিয়ে থাকে একটু আশায়, কিন্তু আমরা সামর্থ্যবান মানুষ তখন ওদের এড়িয়ে যাই, তখন এরা বেছে নেয় অন্ধকার জগত, কেউ হয় বারবনিতা, কেউ ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী, আবার কেউ মাদক স¤্রাট ইত্যাদি। আমরা কিছু সামর্থ্যবান মানুষ বড়ই স্বার্থপর, নিষ্ঠুর। যখন একটি ক্ষুধার্ত পথশিশু একটি টাকার জন্য হাত পাতে, তখন তাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেই। আবার যখন দু-তিনজন পথশিশু অন্ধকার অলিগলি একা পেয়ে গলায় ছুরি ধরে তখন আমাদের কাছে যা থাকে আমরা সব দিয়ে দেই। ওরা এভাবে বাঁচতে চায় না, ওরা বাঁচতে চায় আমাদের ভাই-বোন, সন্তানের মতো। কিন্তু আপনি সামর্থ্যবান ওদের দেখলেই মুখ ফিরিয়ে নেন, ভাবেন ওরা নষ্টা খারাপ মেয়ে বা খারাপ ছেলে এসব অজুহাতে।
আমরা মনে করি এরা নষ্টা, বা খারাপ নয় এরা প্রতিকুল পরিবেশের শিকার। এমন পরিস্থিতির এড়াতে চাই সেহ্ন, মমতা, উদারতা। পথশিশু রোধে একটু মানবতার খুব প্রয়োজন। আমরা মনে করি, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবই পথশিশু শিশুশ্রম রোধের অন্যতম সমস্যা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, দেশরতœ বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- আপনি বড়ই মানবী, আপনার মানবিকতাকে শ্রদ্ধা জানাই এবং আপনাকে এই অনলাইন ভহং২৪.পড়স পত্রিকার মাধ্যমে অনুরোধ করি, এই পথশিশু বা শিশুশ্রমিকদের প্রতি সুদৃষ্টি দিন, আর একটি পথশিশু শিশুশ্রমিক যেন সৃষ্টি না হয়।