তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আউটডোরে নারী রোগীদের দীর্ঘলাইন ঠেলে রোগী ঢোকার আগেই ডাক্তারদের রুমে বিভিন্ন উপহার হাতে নিয়ে ঢুকছেন বিভিন্ন ঔষুধ কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টিভরা। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ও দীর্ঘসময় লাইনে দাড়ানো রোগীদের মধ্যে মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করলেও কেউ প্রতিবাদ করতে পারেন না। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই এভাবেই চলছে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আউটডোরের চিকিৎসা সেবা। সরকারী হাসপাতালে বিনামুল্যের চিকিৎসা সেবা নিতে এসে দরিদ্র রোগীরা এসব বিষয়ে সরাসরি প্রতিবাদ করতে পারেন না। প্রতিবাদ করলে ডাক্তার রোগী দেখবেন না। ফলে অসহায় রোগীদের দাঁড়িয়ে থেকে এসব দৃশ্য দেখা ছাড়া কোন উপাই থাকেনা। অপর দিকে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক/ডাক্তাররা নিজ কর্মস্থল তানোরে অবস্থান না করায় সকাল ১০টার পর আসছেন এবং চলে যাচ্ছেন ১টার পর। তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তাররা নিজ কর্মস্থল তানোরে অবস্থান না করায় মানসম্মত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জনসাধারন।
সোমবার সকাল পৌনে ৯টায় তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, টিকিট কাউন্টারের সামনে দরিদ্র নারীদের দীর্ঘলাইন। কাউন্টারে ২জন ৩টাকা করে নিয়ে রোগীদের স্লিপ দিচ্ছেন। সেই সাথে প্রতিটি ডাক্তারের রুমের সামনেই কোন লাইনে অর্ধশত এবং কোন লাইনে ৩০/৪০ জন করে নারী রোগীরা দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন ডাক্তারদের জন্য। কিন্তু ডাক্তাররা কেউই তখনো আসেননি এবং রোগী দেখা শুর করেননি। অপর দিকে বিভিন্ন ঔষুধ কোম্পানীর বেশ কয়েকজন রিপ্রেজেটিভরাও বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন ডাক্তারদের জন্য। সকাল ১০টার পর জৈনক ২ জন ডাক্তারকে দেখ্ াগেলো নিজ নিজ কক্ষে ঢুকলেন চেয়ারে বসামাত্রই রোগী ঢোকার আগেই ওই ২জন ডাক্তারের কক্ষে হাতে বিভিন্ন উপঢোকন উপহার নিয়ে ঢুকে পড়লেন ঔষুধ কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টিভ। রিপ্রেজেন্টিভদের এধরনের কান্ডে এবং চিকিৎসকদের ভুমিকা নিয়ে লাইনে দাড়ানো নারীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এনিয়ে নারী রোগীরা একে অপরের মাঝে বিভিন্ন সমালোচনা ও ক্ষোভ প্রকাশ করলেও নিরুপাই ও অসহায় রোগীরা প্রতিবাদ করতে পারলেন না। অন্য ডাক্তাররাও এর পরে আসতে শুরু করছেন। তবে, ১১টার সময়ও ২জন ডাক্তার তাদের কক্ষে উপস্থিত ছিলেন না। তবে, ১১টার পরও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ছিলেন অনুপস্থিত। এভাবেই চলছে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আউটডোরের চিকিৎসা সেবা। সরকারী হামপাতালে বিনামল্যে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা বেশির ভাগই দরিদ্র জনগোষ্ঠী হওয়ায় চিকিৎসকরা এসব রোগীদের সাথে ভালো আচরনতো করেনই না বেশি কথাও শুনতে চাইছেন না। রোগের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে চাইলে চিকিৎসকরা ওই রোগীদেরকে রাজশাহীতে তাদের চেম্বারে গিয়ে বিস্তারিত বলতে বলেই নামমাত্র ২/১টা কথা শুনেই এবং একনজর রোগীর দিকে তাকিয়েই হাতে স্বর্দি জ্বর আর কাশি এবং ভিটামিন ট্যাবলেট লিখে স্লিপ ধরিয়ে দিয়েই বের করে দেন ডাক্তারা। ফলে রোগীদের আর বেশী কিছু বলার সুযোগ থাকেনা।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার রোজিয়ারা খাতুন বলেন, সকাল ৯টা থেকে সকল ডাক্তারগন তাদের চেম্বারে রোগী দেখতে শুরু করবেন, এমনটিই বলা আছে। তিনি বলেন আমার জানামতে সকল ডাক্তারই সময়মত আসেন দাবি করে তিনি বলেন, ২টার আগে রিপ্রেজেন্টিভবদের ডাক্তারদের চেম্বারে ঢোকা নিষেধ আছে যদি এর বেতিক্রম হয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।