নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে এক আতঙ্কের নাম ভাঙন৷ অনেকের জীবন দুর্বিষহ হয়েছে এই ভাঙনে৷ কেউ হারিয়েছেন পরিবার, কেউ জীবিকা৷ প্রশ্ন হচ্ছে, নদী ভাঙন রোধের কি কোনো উপায় নেই? বাংলাদেশের যত প্রধান সমস্যা আছে তার মধ্যে প্রধান সমস্যার একটি নদী ভাঙ্গন। সর্বনাশা নদীর ভাঙ্গনে নিঃস্ব হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। আমাদের দেশ নদীমাতৃক দেশ হলেও আমাদের জন্য নদী যেন আজ অভিশপ্ত। নদী ভাঙ্গন এমনই একটি বিষয় যার সাথে প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে দেশবাসী সকলেই জরিত। খুব কষ্টকর কারো জানা নেই কত হেক্টর জমি নদীতে হাড়িয়ে গেছে। কত লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে তারও সঠিক হিসাব নেই। এককথায় বলা যায় দেশের চিরন্তন ক্ষতির উৎস এই নদী ভাঙ্গন। নদী ভাঙ্গনের ফলে বাড়ছে বেকারত্ব বাড়ছে দারিদ্র্যতা, বাড়ছে শহর গুলোতে বস্তির সংখ্যা আর বিশেষ করে শিশুদের ভবিষ্যত চলছে অনিশ্চিত গন্ত্যবে বাড়ছে অপরাধ প্রবনতাসহ নানানবিদ সমস্যা। ফ্লাড এ্যাকশন প্লান বা ফ্যাপের এক সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে যে বর্তমানে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৬হাজার হেক্টর জমি নদী ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে প্রতি বছর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১০ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আশ্রয়হীন হচ্ছে প্রায় ১লাখ ৩০হাজার মানুষ। আর কয়েক বছর আগে জাতিসংঘের ওয়াল্ড রিস্ক রিপোট অনুযায়ী দূর্যোগের ঝুকিতে থাকা ১৭৩ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। দেশ থেকে দারিদ্রতা দূর করতে হলে অবশ্যই আগে নদী ভাঙ্গন রোধ করতে হবে। তাই সরকারকে এখনি নদী ভাঙ্গন রোধে ও নদীকে নিয়ন্ত্রনে পদক্ষেপ নিতে হবে। বন্যা এলেই তদারিকি, দূর্নীতিবাজ এইসব কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে নদী ভাঙ্গন রোধে নতুন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হবে সময়ের কাজ সময়ে করতে হবে। নইলে বাজেটের টাকা বস্তা আর বালি কিনতেই শেষ হবে। নদী এখন অনেকটাই শুকিয়ে গেছে এখনি নদী ভাঙ্গন রোধে কাজ করতে হবে তাহলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। পদ্মা সেতুর মতো স্বপ্ন নদী তীরের মানুষ গুলোর সরকারের আন্তরিকতা থাকলে অবশ্যই নদী ভাঙ্গন খুব সহজেই রোধ করা যাবে বলে আমরা মনে করি।