পড়ালেখা থেকে ঝরেপড়া রোধে শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদান ব্যবস্থা দেশে আশাতীত সুফল বয়ে এনেছে। তাই এ খাতে সরকার অর্থ বরাদ্দ আরো বাড়াতে চাচ্ছে বলে জানা যায়। শিক্ষার জন্য ‘খাদ্য কর্মসূচি’ ও ‘উপবৃত্তি প্রকল্প’ প্রাথমিক শিক্ষায় ইতিবাচক ফল বয়ে এনেছে। তৃণমূলে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের ঝরেপড়া রোধে অনেক বড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে খাদ্য কর্মসূচি ও শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা। এছাড়াও দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষার উদ্যোগ এবং শিক্ষা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে সরকারের সুদুরপ্রবাসী পরিকল্পনা রয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের আর্থিক অনুদান প্রদানের নীতিমালায় বেশকিছু সংশোধন আনতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এ মারে মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের অনুদান প্রদানের জন্য অনুসরণীয় নীতিমালা সংশোধন সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সভায় অনুদানের জন্য স্নাতক ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। শিক্ষক ক্যাটাগরিতে বেসরকারি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আবেদন করতে পারবে। শিক্ষকরা দুরারোগ্য ব্যাধি ও দুর্ঘটনার জন্য অনুদানের আবেদন করতে পারবেন। তবে এ বিশেষ অনুদানের ক্ষেত্রে দুস্থ, প্রতিবন্ধী, অসহায়, রোগাক্রান্ত, গরিব, মেধাবী ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অগ্রাধিকার দেয়া বলে জানা যায়। অনগ্রসর এলাকার অসচ্ছল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিশেষ সহায়তা প্রদানে এ অনুদানের কার্যক্রমকে আমরা অনেক ভালো উদ্যোগ বলে মনে করি।
অনুদান প্রাপ্তির জন্য আগ্রহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে নিজ নিজ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবরে আবেদন দাখিল করতে হবে। পরে জেলা প্রশাসকরা তিনটি শ্রেণিতে প্রাপ্ত আবেদন নির্ধারিত কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক ক্যাটাগরি, প্রতিটি ক্ষেত্রে, সর্বোচ্চ পাঁচটি আবেদন এবং শিক্ষার্থী ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ ১৫টি আবেদন সুপারিশ সহকারে চূড়ান্ত বাছাইয়ের জন্য প্রেরণ করবেন। পরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রাপ্ত আবেদনগুলো বিভাগ কর্তৃক গঠিত কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে অনুদানপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, শিক্ষার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করে সরকারের অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করবেন।
বিশেষ অনুদান প্রাপ্তির যোগ্যতার শর্তে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত অথবা এমপিওভুক্ত বেসরকারি সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের মেরামত ও সংস্কার, আসবাবপত্র তৈরি, খেলাধুলার সরঞ্জাম, প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবন্ধী-বান্ধব করাসহ পাঠাগারের উন্নয়ন কাজের জন্য অনুদান চাইতে পারবে। বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের বোর্ড অব গভর্নস ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ খরচ করবে। আমরা মরে করি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনগ্রসর এলাকার অসচ্ছল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিন্তু প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার মান ভালো, সেসব প্রতিষ্ঠানকে যেনো অগ্রাধিকার দেয়া হয়।